ওড়িশার বালাসোর জেলায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র বন্ধুদের সাথে ভ্রমণে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি জমসুলি গ্রামের বাথরুমে ঘটেছে। পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন।
Balasore: ওড়িশার বালাসোর জেলা থেকে একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা সামনে এসেছে। জেলার জমসুলি গ্রামে মঙ্গলবার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ ও পরিবারের মতে, ছাত্রটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে কারণ তার বাবা-মা তাকে বন্ধুদের সাথে ভ্রমণে যাওয়ার অনুমতি দেননি। এই ঘটনা পুরো এলাকায় শোক ও উদ্বেগের ঢেউ ছড়িয়ে দিয়েছে।
ছাত্রের শেষ মুহূর্ত
পুলিশের अनुसार, ছাত্রটি তার বাড়ির বাথরুমে যায় এবং দীর্ঘক্ষণ বাইরে আসেনি। যখন পরিবার দরজায় ধাক্কা দেয়, তখন ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরিবার দরজা ধাক্কিয়ে ডাকাডাকি করে, কিন্তু ছাত্রটি কোনো উত্তর দেয়নি। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার সিদ্ধান্ত নেয়। দরজা খোলার পরেই পরিবারের সামনে এক ভয়ানক দৃশ্য ছিল। ছাত্রটি তোয়ালে দিয়ে ফাঁস তৈরি করে বাথরুমের ছাদ থেকে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।
পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, ছাত্রটি সাধারণত পড়াশোনায় ভালো এবং সামাজিকভাবে সক্রিয় ছিল। কিন্তু বাবা-মায়ের অনুমতি না পাওয়ায় এবং বন্ধুদের সাথে ভ্রমণে যেতে না পারার কারণে সে মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
বন্ধুদের সাথে ভ্রমণে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়ায় সৃষ্ট চাপ
ঘটনাস্থলে পৌঁছানো পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছাত্রের মা তাকে পুরী যাওয়ার অনুমতি দেননি। এই বিষয়টি ছাত্রের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ সে এই ভ্রমণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে উৎসাহিত ছিল। অনুমতি না পাওয়ায় সে মানসিকভাবে চাপে পড়ে যায় এবং এই দুঃখজনক সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৈশোরে মানসিক সংবেদনশীলতা অনেক বেশি থাকে। ছোট ছোট চাপ এবং মতবিরোধও তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের উচিত শিশুদের অনুভূতি বোঝা এবং তাদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখা।
পুলিশের তদন্ত ও পদক্ষেপ
বালাসোর পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রকে দ্রুত বাস্তা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা মানস দেব জানান, ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে, তবে পুরো তদন্ত চলছে। পুলিশ আশেপাশের লোকজন ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলছে যাতে ঘটনার সব দিক বোঝা যায়।
পুলিশ আরও সতর্ক করেছে যে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাবা-মা ও শিক্ষকেরা শিশুদের অনুভূতি বুঝুন এবং তাদের নিরাপদ পরিবেশ দিন যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়।
পরিবারে গভীর শোক
ছাত্রের বাবা-মা এই ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। তারা জানান, তাদের ছেলে স্বাভাবিক ও হাসিখুশি ছিল। কিন্তু ভ্রমণে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়ায় সে মানসিকভাবে परेशान ছিল। পরিবার ও প্রতিবেশীরা এখন এই ঘটনার কারণ বোঝার চেষ্টা করছেন এবং ছাত্রের বাবা-মাকে মানসিক सहारा দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ছাত্রের প্রতিবেশীরা বলেন, কিশোরদের তাদের চিন্তা ও অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ পাওয়া উচিত। বাবা-মা ও শিক্ষকেরা শিশুদের চাপ ও অসুবিধাগুলো বুঝুন, যাতে তারা সুরক্ষিত ও সুস্থ মানসিক অবস্থায় থাকতে পারে।