আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় তামিলনাড়ুর মন্ত্রী পেরিয়াস্বামীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ

আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় তামিলনাড়ুর মন্ত্রী পেরিয়াস্বামীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ

সুপ্রিম কোর্ট তামিলনাড়ুর গ্রামীণ বিকাশ এবং পঞ্চায়েত মন্ত্রী আই. পেরিয়াস্বামীর বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির মামলায় বিশেষ আদালতে চলমান কার্যক্রমের উপর অস্থায়ী স্থগিতাদেশ জারি করেছে। এই স্থগিতাদেশ পেরিয়াস্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সাথে সম্পর্কিত।

নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট ২.১ কোটি টাকার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে দ্রাবিড় মুনেত্র কাজগম (ডিএমকে) নেতা এবং তামিলনাড়ুর মন্ত্রী আই. পেরিয়াস্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে চলমান কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এই মামলায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এ. জি. মাসিহ-এর বেঞ্চ ১৮ অগাস্ট ২০২৫ তারিখে নোটিশও জারি করেছে।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশ

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এ. জি. মাসিহ-এর বেঞ্চ ১৮ অগাস্ট এই মামলায় নোটিশ জারি করেছে। আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (Prevention of Corruption Act) এর অধীনে ডিন্ডিগুলের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অ্যাসোসিয়েট স্পেশাল জজের আদালতে বিচারাধীন কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

পেরিয়াস্বামীর সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে, যেখানে তিনি ২৮ এপ্রিল মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। হাইকোর্ট বিশেষ আদালতকে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল।

আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় হাইকোর্টের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত

মাদ্রাজ হাইকোর্ট সতর্কতা ও দুর্নীতি দমন অধিদপ্তরের (ডিভিএসি) দায়ের করা আবেদনের উপর আদেশ জারি করেছিল। ডিভিএসি পেরিয়াস্বামী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। যদিও, হাইকোর্ট ডিভিএসির চ্যালেঞ্জ খারিজ করে দেয় এবং বিশেষ আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিদিন মামলার শুনানি করে শেষ করার নির্দেশ দেয়।

পেরিয়াস্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নামে ২.১ কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জন করেছেন, যা তাঁর জ্ঞাত আয়ের উৎসের চেয়ে বেশি ছিল। এই সম্পত্তিতে তাঁর স্ত্রী পি. সুশীলা এবং ছেলে পি. সেন্থিলকুমার এবং পি. প্রভুর নামও রয়েছে। ডিভিএসি ২০১৮ সালে হাইকোর্টে পেরিয়াস্বামীকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল। পেরিয়াস্বামী বর্তমানে দ্রাবিড় মুনেত্র কাজগম (ডিএমকে) সরকারের গ্রামীণ বিকাশ, পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সংঘ বিভাগের মন্ত্রী হিসেবে কর্মরত আছেন।

পেরিয়াস্বামীর প্রতিক্রিয়া

এই মামলার রাজনৈতিক ও আইনি গুরুত্ব অনেক বেশি। একজন ক্ষমতাসীন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির মামলা রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ শুধুমাত্র মন্ত্রীর কার্যকালের উপর প্রভাব কমায় তাই নয়, আদালতের মাধ্যমে নির্ধারিত শুনানির প্রক্রিয়ায় ভারসাম্য বজায় রাখার বার্তাও দেয়।

বিশেষ আদালতকে ছয় মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি হয়, পাশাপাশি অভিযুক্ত পক্ষও যেন ন্যায়বিচার পেতে বিলম্বিত না হয়। এই আদেশের পর পেরিয়াস্বামী আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, এটি আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বজায় রাখার একটি পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এখন তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে এবং এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের দিকে মনোযোগ দিতে সক্ষম হবেন।

Leave a comment