টাটা ক্যাপিটাল ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের আগে তাদের বহু প্রতীক্ষিত আইপিও (IPO) আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রাথমিক ইঙ্গিত বলছে, এর প্রাইস ব্যান্ড বর্তমান আনলিস্টেড প্রাইস ₹৭৭৫ থেকে বেশ কম হতে পারে। কোম্পানি ১৭,০০০ কোটি টাকার বেশি সংগ্রহ করবে, যার মধ্যে নতুন শেয়ার এবং ওএফএস (OFS) উভয়ই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আরবিআই-এর (RBI) আপার লেয়ার এনবিএফসি (NBFC) নিয়ম পূরণের জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
Tata Capital IPO: টাটা গ্রুপের এনবিএফসি কোম্পানি টাটা ক্যাপিটাল লিমিটেড ২০২৫ সালের ৪ আগস্ট সেবির (SEBI) কাছে তাদের আপডেটেড ডিআরএইচপি (DRHP) দাখিল করেছে এবং সেপ্টেম্বরের আগে আইপিও আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোম্পানির অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট (AUM) ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা এবং এটি লিস্টিং টিয়ার-১ ক্যাপিটাল শক্তিশালী করতে এবং আরবিআই-এর বাধ্যতামূলক লিস্টিং শর্ত পূরণের জন্য করা হচ্ছে। আইপিওতে প্রায় ২১ কোটি নতুন শেয়ার এবং ২৬.৫৮ কোটি ওএফএস শেয়ার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, প্রাইস ব্যান্ড বর্তমান আনলিস্টেড ভ্যালুয়েশন থেকে বেশ কম নির্ধারিত হতে পারে, যা ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় সুযোগ হতে পারে।
Tata Capital শেয়ারের দাম নিয়ে আলোচনা
বর্তমানে টাটা ক্যাপিটালের আনলিস্টেড শেয়ার প্রায় ৭৭৫ টাকায় ট্রেড করছে। কিন্তু প্রাথমিক অনুমান বলছে যে কোম্পানির আসল আইপিও প্রাইস এর থেকে বেশ কম হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বর্তমান প্রাইস ব্যান্ড নির্ধারণ করার সময় বাজারের পরিস্থিতি এবং কোম্পানির সাম্প্রতিক ডিলগুলি বিবেচনা করা হবে।
এই পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্ন করছে কারণ টাটা ক্যাপিটালের শেষ রাইটস ইস্যু শুধুমাত্র ৩৪৩ টাকা প্রতি শেয়ারে হয়েছিল। এই মূল্য আনলিস্টেড ভ্যালুয়েশন থেকে অর্ধেকেরও কম। এই রাইটস ইস্যু ২০২৫ সালের ১৮ জুলাই এসেছিল এবং একই সময়ে কোম্পানি তাদের আপডেটেড ড্রাফট রেড হেরিং প্রসপেক্টাস (DRHP) দাখিল করেছিল।
HDB ফিনান্সিয়াল এবং NSDL-এর উদাহরণ
টাটা ক্যাপিটালের ঘটনাটি ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি অন্যান্য বড় আইপিওতেও একই প্যাটার্ন দেখা গেছে। উদাহরণস্বরূপ, HDB ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের আনলিস্টেড প্রাইস ১,৫৫০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। কিন্তু যখন এর আইপিও আসে, তখন প্রাইস ব্যান্ড শুধুমাত্র ৭০০ থেকে ৭৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
একইভাবে, ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি লিমিটেড (NSDL)-এর গ্রে মার্কেট প্রাইস ছিল ১,২৭৫ টাকা। কিন্তু যখন লিস্টিংয়ের পালা আসে, তখন আইপিও ব্যান্ড শুধুমাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা রাখা হয়েছিল। এই উদাহরণগুলি থেকে স্পষ্ট যে টাটা ক্যাপিটালের প্রাইস ব্যান্ডও বর্তমান আনলিস্টেড ভ্যালুয়েশনের তুলনায় বেশ কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আইপিও-র আকার
টাটা ক্যাপিটাল ৪ আগস্ট সেবির কাছে আপডেটেড ডিআরএইচপি ফাইল করেছে। অনুমান করা হচ্ছে যে কোম্পানির আইপিও ১৭,০০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
কোম্পানি এই ইস্যুতে প্রায় ২১ কোটি নতুন শেয়ার ইস্যু করবে। এছাড়াও ২৬.৫৮ কোটি শেয়ার অফার ফর সেল অর্থাৎ ওএফএস-এর মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় টাটা সন্স প্রায় ২৩ কোটি শেয়ার এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স কর্পোরেশন (IFC) ৩.৫৮ কোটি শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা করছে।
সেপ্টেম্বরের আগে আসতে পারে আইপিও
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সেপ্টেম্বর ২০২২-এ টাটা ক্যাপিটালকে আপার লেয়ার এনবিএফসি-র মর্যাদা দিয়েছিল। এই শ্রেণীর সমস্ত কোম্পানিকে তিন বছরের মধ্যে বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক। এই হিসাবে টাটা ক্যাপিটালকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের আগে তাদের আইপিও আনতে হবে।
এই কারণে বাজারে আলোচনা চলছে যে কোম্পানির বহু প্রতীক্ষিত আইপিও এই আর্থিক বছরেই অর্থাৎ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের আগে আসবে।
ব্রোকারেজ হাউসের মতামত
ব্রোকারেজ হাউস ম্যাকুয়ারি-র (Macquarie) সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে টাটা ক্যাপিটালের আইপিও বর্তমান আনলিস্টেড প্রাইস থেকে ৬০ শতাংশ ডিসকাউন্টে লিস্ট হলেও, এটি তার অনেক এনবিএফসি সঙ্গীর তুলনায় বেশি ভ্যালুয়েশনে ট্রেড করবে।
কোম্পানির অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট (AUM) বর্তমানে ২.৩ লক্ষ কোটি টাকার স্তরে রয়েছে। এই হিসাবে এটি ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম এনবিএফসি হয়ে উঠেছে। যদিও সম্প্রতি টাটা ক্যাপিটালের টাটা মোটরস ফিনান্স লিমিটেডের সাথে মার্জার হয়েছে। এই ডিলের কারণে কোম্পানির রিটার্ন রেশিও-র উপর চাপ দেখা যেতে পারে।