নয়াদিল্লি ও রাঁচিতে ৩ সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর গ্রেফতার, রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা ফাঁস

নয়াদিল্লি ও রাঁচিতে ৩ সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর গ্রেফতার, রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা ফাঁস

নয়াদিল্লি ও রাঁচিতে স্পেশাল সেল তিন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, তারা ধর্মীয় স্থানে হামলার পরিকল্পনা করছিল।

নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লি এবং ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। স্পেশাল সেল বুধবার তিন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে দুজন সন্দেহভাজন দিল্লি থেকে এবং একজন রাঁচি থেকে ধরা পড়েছে। গ্রেফতার হওয়া সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে রাসায়নিক ও ডিজিটাল সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে, যা থেকে তাদের বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার বিষয়টি জানা গেছে।

দিল্লি-রাঁচিতে সন্ত্রাসী গ্রেফতার

স্পেশাল সেল এবং ঝাড়খণ্ড এটিএস যৌথভাবে বুধবার সকালে ৫টায় রাঁচির তাবারক লজে কথিত আইএসআইএস-এর সাথে জড়িত সন্ত্রাসী দানিশকে গ্রেফতার করেছে। একই সঙ্গে দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকা থেকে আফতাব ও তার সহযোগীকে ধরা হয়েছে। ধৃত সন্ত্রাসীদের পরিচয় তদন্তের সময় জানা গেছে এবং তাদের সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত অতীত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, এই অভিযানটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চালানো হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলির উদ্দেশ্য ছিল যে কোনও সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা সময়মতো প্রতিহত করা। রাঁচি ও দিল্লিতে এই অভিযান সারা দিন ধরে চলে এবং স্পেশাল সেল সারা দিনে ১২টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়।

সন্ত্রাসীদের কাছে পাওয়া গেছে বিপজ্জনক সরঞ্জাম

ধৃত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বেশ কিছু বিপজ্জনক জিনিস উদ্ধার হয়েছে। এদের মধ্যে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, সালফার পাউডার, পিএইচ ভ্যালু চেকার এবং বল বিয়ারিং রয়েছে। এছাড়াও ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ওয়েট মেশিন, বিকার সেট, সেফটি গ্লাভস এবং রেসপিরেটরি মাস্কও পাওয়া গেছে।

এই সরঞ্জামগুলি থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে এই সন্ত্রাসীরা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে বিশেষজ্ঞ ছিল। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি অনুসারে, এরা আসন্ন উৎসব মরসুমে দিল্লি-এনসিআর এবং ধর্মীয় স্থানগুলিতে হামলার পরিকল্পনা করছিল। উদ্ধার হওয়া সরঞ্জাম ও রাসায়নিক তাদের অসৎ উদ্দেশ্য নিশ্চিত করছে।

স্পেশাল সেলের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত 

স্পেশাল সেলের দল এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দানিশ এবং আফতাবের কাছ থেকে তাদের আইএসআইএস-এর সাথে সম্পর্ক এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও সারা দিনের তল্লাশিতে আরও আটজন সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সূত্র অনুসারে, এরা সকলে স্লিপার মডিউল সেলের সাথে যুক্ত এবং বাইরের শক্তির ইঙ্গিতে কাজ করছিল। হেফাজতে নেওয়া বাকি সন্দেহভাজনদের ভূমিকা তদন্তাধীন। সংস্থাগুলির লক্ষ্য হল যে কোনও সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করা।

গ্রেফতারের ফলে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক বড় ধাক্কা খেয়েছে

স্পেশাল সেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে এই অভিযানের ফলে সন্ত্রাসীদের নেটওয়ার্ক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ধৃত সন্ত্রাসী এবং উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর ভিত্তিতে আরও অনেক সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করতে সাহায্য পাওয়া যাবে।

নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সাধারণ নাগরিকদেরও সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছে এবং বলেছে যে যে কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপের খবর অবিলম্বে পুলিশ বা স্পেশাল সেলকে জানানো হোক। কর্মকর্তারা বলছেন, এই সময়ে জনগণের সতর্কতা এবং সহযোগিতা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় শক্তি।

Leave a comment