পতাকা পোড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: ট্রাম্পের নতুন নির্দেশ

পতাকা পোড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: ট্রাম্পের নতুন নির্দেশ

আমেরিকার পতাকা পোড়ানো হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। বিচার বিভাগ তদন্ত করবে। বিদেশি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হবে। এই নির্দেশের উদ্দেশ্য হল জাতীয় প্রতীকের সুরক্ষা এবং হিংসা প্রতিরোধ করা।

America: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি আমেরিকার পতাকা পোড়ানোর ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে একটি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে (Executive Order) স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে বিচার বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা আমেরিকার পতাকা পোড়ানো ব্যক্তিদের তদন্ত করুক এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করুক। আদালত পাঁচজনের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় রায় দিয়েছিল যে সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুসারে আমেরিকার পতাকা পোড়ানো ব্যক্তিদের রাজনৈতিক অভিব্যক্তি সুরক্ষিত।

ট্রাম্প তাঁর আদেশে বলেছেন যে আমেরিকান পতাকার অবমাননা কেবল ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি নয়, এটি জাতির প্রতীকের অপমান। তাঁর বক্তব্য হল, এই ধরনের কাজ হিংসা ও দাঙ্গা সৃষ্টি করতে পারে এবং আমেরিকার মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। ট্রাম্প এটিকে ‘অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ও উত্তেজক’ পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন যে এটিকে উপেক্ষা করা যায় না।

ওভাল অফিসে নির্দেশে স্বাক্ষর

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওভাল অফিসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে টেক্সাসের একটি মামলার উল্লেখ করেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট পতাকা পোড়ানোকে রাজনৈতিক অভিব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করে সুরক্ষা প্রদান করেছিল। যদিও ট্রাম্প এ-ও স্পষ্ট করেছেন যে আদালতের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও এই ধরনের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ সবসময় থাকা উচিত।

ট্রাম্প বলেছেন যে আমেরিকান পতাকার অবমাননা কেবল একটি প্রতীকী কাজ নয়, এর থেকে জন-অশান্তি, হিংসা ও দাঙ্গা ছড়াতে পারে। তাঁর আরও বক্তব্য, পতাকা পোড়ানো আমেরিকার নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে এবং এই ধরনের কাজ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ।

বিদেশি নাগরিকদের উপর কঠোর বিধি

নির্বাহী আদেশে বিদেশিদের জন্যও স্পষ্ট বিধি তৈরি করা হয়েছে। যদি কোনও বিদেশি নাগরিক আমেরিকার পতাকা পোড়ায়, তাহলে তার ভিসা, রেসিডেন্স পারমিট, নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য অভিবাসন সুবিধা বাতিল করা হতে পারে। ট্রাম্প বলেছেন যে এই ধরনের ব্যক্তিকে অবিলম্বে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। এছাড়া আদেশে বলা হয়েছে যে অভিযুক্তের এক বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে এবং দ্রুত মুক্তির কোনও বিকল্প দেওয়া হবে না।

এই পদক্ষেপকে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে আমেরিকাতে জাতীয়তাবাদ এবং জাতীয় প্রতীকগুলির সুরক্ষা জোরদার করার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদেশে এ-ও বলা হয়েছে যে অ্যাটর্নি জেনারেলকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে পতাকা পোড়ানোর ক্ষেত্রে অপরাধমূলক এবং নাগরিক আইনগুলি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়

যদিও আমেরিকান সুপ্রিম কোর্ট পতাকা পোড়ানোকে সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত রাজনৈতিক অভিব্যক্তি হিসাবে মনে করে, ট্রাম্পের বক্তব্য হল আদালতের এই রায় হিংসা ও দাঙ্গা প্রতিরোধের দৃষ্টিকোণ থেকে যথেষ্ট নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে পতাকা পোড়ানোর মতো কাজ আমেরিকার ঐক্য ও নাগরিক সুরক্ষার জন্য বিপজ্জনক।

সুপ্রিম কোর্ট পূর্বে বলেছিল যে আমেরিকার নাগরিকদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করার অধিকার আছে এবং এর মধ্যে পতাকা পোড়ানোর মতো অভিব্যক্তিও অন্তর্ভুক্ত। আদালত চার বনাম পাঁচ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় এই রায় দিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের বক্তব্য, এখন সময় এসেছে এই ধরনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার, যাতে জাতি এবং তার প্রতীকগুলির সম্মান নিশ্চিত করা যায়।

Leave a comment