ট্রাম্পের হুমকি: নিউ ইয়র্কের মেয়র প্রার্থী মমদানী'র দৃঢ় অবস্থান

ট্রাম্পের হুমকি: নিউ ইয়র্কের মেয়র প্রার্থী মমদানী'র দৃঢ় অবস্থান

ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের প্রার্থী জোহরান মমদানী পিছু হটেননি। তিনি বলেছেন, ICE-কে শহরে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে দেবেন না।

Trump vs Mamdani: নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী জোহরান মমদানী প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে আওয়াজ তুলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে মমদানী জানিয়েছেন, ট্রাম্প তাঁকে গ্রেফতার, নাগরিকত্ব বাতিল এবং দেশ থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দিচ্ছেন, কিন্তু তিনি পিছিয়ে আসতে রাজি নন।

'আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে কারণ আমি আইনের পথে চলেছি'

জোহরান মমদানী লিখেছেন, "যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আমাকে গ্রেফতার, আমার নাগরিকত্ব বাতিল, ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী করা এবং দেশ থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দিয়েছেন। এটা এজন্য নয় যে আমি কোনো আইন ভেঙেছি, বরং আমি ICE (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট)-কে আমাদের শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দেব না।"

ট্রাম্পের হুমকির পেছনে বিতর্কের কারণ

আসলে, মমদানী নিউ ইয়র্ক সিটিতে ICE-এর কার্যকলাপের দীর্ঘদিনের সমালোচক। তিনি মনে করেন, এই সংস্থাটি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অন্যায় আচরণ করে এবং ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে। মমদানী এই নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন এবং চান নিউ ইয়র্ক শহর একটি নিরাপদ স্থান হোক, বিশেষ করে যারা শরণার্থী অথবা কাগজপত্র ছাড়া আমেরিকায় বাস করছেন তাদের জন্য।

'ট্রাম্পের হুমকি গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত'

মমদানী তাঁর বিবৃতিতে ট্রাম্পের মন্তব্যকে গণতন্ত্রের উপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, "এটা কেবল আমার বিরুদ্ধে হুমকি নয়, বরং এটা প্রত্যেক নিউ ইয়র্কবাসীর কাছে একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা, যারা লুকিয়ে থাকতে অস্বীকার করে। ট্রাম্প চান, যদি তোমরা কথা বলো, তাহলে তারা তোমাদের পিছনে লাগবে। আমরা এই ভয় দেখানোর রাজনীতিকে মেনে নেব না।"

তিনি তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট করে বলেন, "আমরা ভয় পাব না। আমরা পিছিয়ে আসব না। আমরা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক বা তাদের নিশানা করা যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করব।"

কে এই জোহরান মমদানী

জোহরান মমদানী উগান্ডায় জন্মগ্রহণ করেছেন এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ারের ছেলে। তিনি একজন প্রগতিশীল নেতা যিনি আমেরিকার অভিবাসন নীতি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ফিলিস্তিনের সমর্থনে তাঁর বক্তব্যের জন্য পরিচিত। তিনি আমেরিকায় মুসলিম, অভিবাসী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থের পক্ষে স্পষ্টভাবে সমর্থন করেছেন।

ফিলিস্তিনের সমর্থনে দেশজুড়ে পরিচিতি

মমদানী ফিলিস্তিনের সমর্থনে তাঁর তীব্র এবং সুস্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে দেশজুড়ে পরিচিতি তৈরি করেছেন। তিনি গাজা উপত্যকায় চলমান হামলার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করেছেন, যা ইসরায়েলের পক্ষে বলে মনে করা হয়। তাঁর এই বক্তব্যগুলি তাঁকে একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে প্রাক্তন গভর্নরকে হারানো

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নির্বাচনে মমদানী প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে পরাজিত করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোট গণনায় তাঁর জয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে এবং এখন তিনি নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র পদের জন্য সাধারণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত জয়কে আমেরিকায় প্রগতিশীল রাজনীতির জয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছিলেন

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প মমদানীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, "যদি তিনি ICE-কে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করতে বাধা দেন, তাহলে আমাদের তাকে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা দেশে কমিউনিস্ট চাই না, কিন্তু যদি কেউ থাকে তবে আমি তার উপর দেশের পক্ষ থেকে কঠোর নজর রাখব।"

Leave a comment