হলুদে ভেজাল: মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্দীপা এলাকায় পুলিশের তল্লাশিতে ধরা পড়ল ভেজাল হলুদের চক্র। বৃহস্পতিবার রাতের দিকে আইসি সুব্রত ঘোষের নেতৃত্বে চালানো হয় এই অভিযান। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ একটি হলুদ মিলে হানা দেয় এবং বিপুল পরিমাণ ভেজাল হলুদ বাজেয়াপ্ত করে। ঘটনাস্থল থেকেই দুই কর্মীকে আটক করা হয়েছে, তবে মিলের মালিক ওসমান শেখ পলাতক বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি হচ্ছিল এই হলুদ।

ভেজাল হলুদের চক্র ফাঁস, পুলিশের সফল অভিযান
সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্দীপা এলাকার ওই মিলে কমদামে বাজারে সরবরাহের জন্য নিম্নমানের রাসায়নিক মিশিয়ে হলুদ তৈরি করা হচ্ছিল। গন্ধ ও রঙে এই হলুদ আলাদা ছিল বলেই পুলিশের সন্দেহ জাগে।অভিযানে কয়েক বস্তা হলুদ বাজেয়াপ্ত হয় এবং কারখানাটি সিল করে দেয় পুলিশ। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, এই ভেজাল হলুদ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

আটক দুই কর্মী, মালিকের খোঁজে তল্লাশি চলছে
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে আটক দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল চক্রের অন্যান্য সদস্যদের খোঁজ শুরু হয়েছে।পলাতক মালিক ওসমান শেখের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহজনক কার্যকলাপ চলছিল, কিন্তু কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।
এলাকায় চাঞ্চল্য, খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক—তারা এতদিন যে হলুদ রান্নায় ব্যবহার করছিলেন, সেটি আদৌ খাঁটি ছিল তো? স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এলাকায় অন্য কোনো কারখানায় এমন কার্যকলাপ হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

খাঁটি হলুদ চেনার ঘরোয়া উপায়
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ ঘরোয়া পরীক্ষার মাধ্যমেই বোঝা সম্ভব হলুদে ভেজাল আছে কি না।প্রথম পদ্ধতি: হাতের তালুতে সামান্য হলুদ নিয়ে আঙুল দিয়ে ২০ সেকেন্ড ঘষুন। যদি হলদে দাগ রয়ে যায়, তবে সেটি খাঁটি।দ্বিতীয় পদ্ধতি: এক গ্লাস জলে সামান্য হলুদ গুলে কিছুক্ষণ রাখুন। যদি নিচে থিতিয়ে যায় আর জল হালকা হলুদ হয়, তবে বুঝবেন খাঁটি হলুদ। বিপরীতে, জল যদি গাঢ় রঙ ধারণ করে, তবে সেটিতে ভেজাল রয়েছে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করলেন চিকিৎসকেরা
চিকিৎসকরা বলছেন, রাসায়নিক মিশ্রিত হলুদ শরীরে বিষক্রিয়া ছড়াতে পারে। এতে লিভার, কিডনি ও ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাঁদের পরামর্শ, মানুষ যেন কেবলমাত্র বিশ্বাসযোগ্য দোকান থেকে ব্র্যান্ডেড হলুদ কিনে ব্যবহার করেন। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগকেও নিয়মিত নজরদারি চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ভেজাল হলুদের কারখানায় পুলিশের অভিযান। বিপুল পরিমাণ ভেজাল হলুদ বাজেয়াপ্ত, আটক দুই কর্মী। মালিক পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, বহুদিন ধরেই রাসায়নিক মিশিয়ে এই ভেজাল হলুদ তৈরি হচ্ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের হলুদ খাঁটি কি না বুঝতে ঘরোয়া কিছু সহজ পদ্ধতি রয়েছে।













