উজ্জয়িনীতে ভূত-প্রেতের নামে ২২ বছর বয়সী এক মহিলাকে লোহার শিকল, জ্বলন্ত সলতে এবং গরম মুদ্রা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। পুলিশ ৮ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং নির্যাতিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে।
উজ্জয়িনী: মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী জেলায় ভূত-প্রেতের নামে ২২ বছর বয়সী বিবাহিত মহিলা উর্মিলা চৌধুরীর উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। মহিলাকে লোহার শিকল দিয়ে পেটানো হয়েছে, হাতের তালুতে জ্বলন্ত সলতে রাখা হয়েছে এবং কপালে গরম মুদ্রা সাঁটানো হয়েছে। প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে চলা এই নির্যাতনের পর মহিলা যখন অজ্ঞান হয়ে পড়েন, তখনই তাকে ছাড়া হয়। ঘটনাটি উজ্জয়িনী থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে খাচরোড তহসিলের শ্রীভাচ গ্রামে ঘটেছে। পুলিশ মামলা দায়ের করে ৮ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে।
উর্মিলার উপর ঝাড়ফুঁকের সময় হিংসাত্মক হামলা
নির্যাতিতা উর্মিলা জানিয়েছেন যে তার আত্মীয়রা তাকে ডেকেছিল যাতে তার শরীর থেকে ভূত-প্রেতের ছায়া দূর করা যায়। উর্মিলা তার মায়ের সাথে ২৯ সেপ্টেম্বর নবরাত্রির সপ্তমীর দিন গ্রামে পৌঁছান।
মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, ঘরে সুগা বাই নামের এক মহিলা তলোয়ার ও খাপ্পর নিয়ে আসে। সে বলেছিল যে উর্মিলার উপর ডাইনীর ছায়া আছে। মহিলা বহুবার প্রতিবাদ করেছিলেন, কিন্তু তার কথা শোনা হয়নি। এরপর ওই মহিলা এবং অন্যান্য পুরুষেরা মিলে উর্মিলাকে শিকল, জ্বলন্ত সলতে এবং গরম মুদ্রা দিয়ে আঘাত করে।
বেদনাদায়ক নির্যাতন ও হাসপাতালে ভর্তি
নির্যাতন রাত ৯:৩০টা থেকে রাত ১২:০০টা পর্যন্ত চলে। মহিলা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর গ্রামের উপ-সরপঞ্চের সাহায্যে তাকে উজ্জয়িনী শহরে আনা হয়। তার গুরুতর আঘাত এবং পোড়ার চিহ্নের কারণে পুলিশ মহিলাকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে।
মহিলার বিয়ে ৬ বছর আগে হয়েছিল এবং তার একটি ২ বছর বয়সী মেয়ে আছে। স্বামী মহিলাকে শুধুমাত্র এই কারণে ছেড়ে দিয়েছিল যে একটি মেয়ে জন্মেছিল, যখন সে একটি ছেলে চেয়েছিল। এখন উর্মিলা তার মায়ের সাথে উজ্জয়িনীতে বসবাস করছেন।
মহিলার মামলায় তিন অভিযুক্তের গ্রেপ্তার
এসপি প্রদীপ শর্মার নির্দেশে মহিলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোট আটজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিএসএস-এর ধারা ১১৫(২), ১১৮(১) এবং ৩(৫) অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ এখনও পর্যন্ত তিন জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্তদের মধ্যে সন্তোষ চৌধুরী, কানহা চৌধুরী এবং রাজু চৌধুরী রয়েছেন। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে।