উত্তরপ্রদেশ সরকার রাজ্যের প্রধান ইকো-পর্যটন কেন্দ্রগুলির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর জন্য ইকো-পর্যটন উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তাব আহ্বান করেছে।
লখনউ: রাজ্যের প্রধান ইকো-পর্যটন কেন্দ্রগুলির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এখন বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর জন্য ইকো-পর্যটন উন্নয়ন বোর্ড বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করেছে। এই সংস্থাগুলিকে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে নির্মিত গেস্ট হাউস, পর্যটক সুবিধা কেন্দ্র, হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য সুবিধার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে, যা থেকে সরকারেরও আর্থিক লাভ হবে। বোর্ড প্রথম ধাপে রাজ্যের ১১টি পর্যটন কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে।
গত মাসে অনুষ্ঠিত একটি পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্দেশ দিয়েছিলেন যে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সুবিধাগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কিছু সময়ের মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। তাই এমন ব্যবস্থা করা উচিত যাতে পর্যটকরা আরও ভালো সুবিধা পান এবং ভবনগুলি সুরক্ষিত থাকে।
প্রথম ধাপে ১১টি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র
ইকো-পর্যটন বোর্ড প্রথম ধাপে রাজ্যের ১১টি প্রধান কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে। এই কেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে অযোধ্যা, চিত্রকূট, বালিয়া, বারাবাঁকি, ললিতপুর, বান্দা, জালৌন, কুশীনগর, সীতাপুর, মহারাজগঞ্জ এবং মিল্কিপুর (অযোধ্যা)। এই পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে নিম্নলিখিত দায়িত্বগুলি দেওয়া হবে:
- গেস্ট হাউস এবং পর্যটক সুবিধা কেন্দ্রের পরিচালনা
- হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য পরিষেবার ব্যবস্থাপনা
- পর্যটন কেন্দ্রের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং রক্ষণাবেক্ষণ
- পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এবং নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা
এই উদ্যোগ থেকে সরকারেরও আর্থিক লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং কেন্দ্রগুলিতে পর্যটন অভিজ্ঞতা উন্নত হবে।
মুখ্যমন্ত্রী যোগীর নির্দেশ
ইকো-পর্যটন বোর্ডের গত পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্দেশ দিয়েছিলেন যে রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে গেস্ট হাউস, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য সুবিধা উপলব্ধ থাকলেও, সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সময়ের সাথে সাথে সেগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “পর্যটকদের সুবিধা এবং ভবনগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। এটি পর্যটনের উন্নয়নেও সাহায্য করবে এবং রাজ্যের সম্মান বৃদ্ধি করবে।” এর প্রতিক্রিয়ায়, ইকো-পর্যটন বোর্ড ১১টি কেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রধান ইকো-পর্যটন কেন্দ্র এবং আকর্ষণ
- অযোধ্যা: ফ্লোটিং রেস্তোরাঁ এবং উধেলা হ্রদ পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
- চিত্রকূট: রামনগর হ্রদ এবং মড়ফা দুর্গ প্রধান আকর্ষণ।
- বালিয়া: সুরহা তাল বার্ড সেঞ্চুরিতে সাইবেরিয়ান পাখিরা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
- বারাবাঁকি: বাগহর হ্রদে বোটিং এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য।
- সীতাপুর: আজ্জেপুর হ্রদে জলক্রীড়া এবং প্রকৃতির আনন্দ।
- কুশীনগর: সোহরৌনা তালে শান্ত পরিবেশ এবং পাখির চমৎকার দৃশ্য।
- জালৌন: পাচনদা-য় পাঁচটি নদীর সঙ্গম এবং এখানকার ডলফিনের উপস্থিতি।
- ললিতপুর: কাকরাওয়াল জলপ্রপাত এবং আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য।
- বান্দা: পর্যটক সুবিধা কেন্দ্র এবং কালিঞ্জর দুর্গ।
- মহারাজগঞ্জ: দেবদহ ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র।
- মিল্কিপুর (অযোধ্যা): প্রাকৃতিক কেন্দ্র এবং গেস্ট হাউস সুবিধা।
এই কেন্দ্রগুলিতে বোটিং, পাখি পর্যবেক্ষণ, ডলফিন দেখা সহ বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি, গাইডেড ট্যুর এবং আরামদায়ক আবাসনের সুবিধাও উপলব্ধ থাকবে। বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়ার পর, তারা এই কেন্দ্রগুলির পুনর্গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে।