উত্তরাখণ্ডে জিও-থার্মাল এনার্জি নীতি অনুমোদন: রাজ্যের শক্তি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত

উত্তরাখণ্ডে জিও-থার্মাল এনার্জি নীতি অনুমোদন: রাজ্যের শক্তি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত

উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেরাদুনে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর সভাপতিত্বে ক্যাবিনেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মোট ৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল রাজ্যের জিও থার্মাল এনার্জি নীতি (Geo-Thermal Energy Policy) নিয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত।

দেরাদুন: উত্তরাখণ্ড ক্যাবিনেট মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর নেতৃত্বে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়ে Geo-Thermal Energy Policy 2025 অনুমোদন করেছে। এই নীতি রাজ্যের ভূ-তাপীয় শক্তি (Geothermal Energy) বিকাশের লক্ষ্যে এবং শক্তি ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা বাড়ানোর দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

জিও-থার্মাল এনার্জি পলিসি ২০২৫ কী?

জিও-থার্মাল এনার্জি পলিসি ২০২৫ একটি নীতি নথি যা পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপ থেকে শক্তি (বিদ্যুৎ) উৎপাদনের জন্য উৎসাহিত করে। এই নীতির অধীনে, বেসরকারি ক্ষেত্রকে ভূগর্ভ থেকে নির্গত তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হবে। উত্তরাখণ্ড সরকার ৩০ বছরের জন্য জিও-থার্মাল প্রকল্পগুলি বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে, রাজ্যে ৪০টি সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে ভূ-তাপীয় শক্তি প্রকল্প স্থাপন করা যেতে পারে।

নীতির উদ্দেশ্য এবং এর প্রয়োজনীয়তা কেন?

উত্তরাখণ্ডের মতো পার্বত্য রাজ্যে কয়লা বা অন্যান্য প্রচলিত শক্তি উৎসের উপর নির্ভরশীলতা কেবল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং অর্থনৈতিক দিক থেকেও চ্যালেঞ্জিং। অন্যদিকে, জিও-থার্মাল এনার্জি একটি পরিচ্ছন্ন, অক্ষয় এবং নিরবচ্ছিন্ন শক্তি উৎস, যা পরিবেশবান্ধব হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যকে কার্বন নিরপেক্ষতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সরকারের উদ্দেশ্য

  • বিকল্প শক্তি উৎসকে উৎসাহিত করা
  • রাজ্যের শক্তি নিরাপত্তা শক্তিশালী করা
  • কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা
  • বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণা উৎসাহিত করা

এই নীতির সুবিধা কী হবে?

  • শক্তির স্বনির্ভরতা: জিও-থার্মাল এনার্জি পলিসি ২০২৫ রাজ্যের নিজস্ব শক্তি উৎসের উপর নির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ তৈরি করবে। এর ফলে বাইরের শক্তির উপর নির্ভরতা কমবে।
  • পরিবেশগত সুবিধা: যেহেতু এই প্রযুক্তি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে না, তাই এটি রাজ্যকে পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
  • বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান: বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ আসবে এবং স্থানীয় যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
  • বৈজ্ঞানিক গবেষণার উন্নতি: এই নীতির অধীনে বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা হবে, যার ফলে শক্তি ক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবন সম্ভব হবে।
  • স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপকার: বিদ্যুতের স্থিতিশীল সরবরাহ পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের উপকার করবে, যেখানে আজও অনেক গ্রামে বিদ্যুতের নিয়মিত সরবরাহ একটি সমস্যা।

কীভাবে এটি কার্যকর করা হবে?

নীতিটি উত্তরাখণ্ডের দুটি প্রধান সংস্থা – ইউজেভিএনএল (UJVNL) এবং ইউরেডা (UREDA)-এর মাধ্যমে কার্যকর করা হবে। এই সংস্থাগুলি কেবল বিনিয়োগকারীদের প্রযুক্তিগত দিকনির্দেশনা দেবে না, বরং স্থান নির্বাচন, পরিবেশগত অনুমোদন এবং প্রকল্প বিকাশেও সহায়তা করবে।

ক্যাবিনেটের অন্যান্য সিদ্ধান্ত

এই ক্যাবিনেট বৈঠকে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে:

  • সতর্কতা বিভাগে ২০টি নতুন পদ সৃষ্টি
  • জিএসটি বিভাগে পদের সংখ্যা বৃদ্ধি
  • উত্তরাখণ্ড খনি ট্রাস্ট গঠনের অনুমোদন
  • বৃদ্ধাবস্থা পেনশন স্কিমের সংশোধন, যার ফলে আরও বেশি বয়স্ক ব্যক্তি উপকৃত হবেন

Leave a comment