জম্মু ও কাশ্মীরে বৈষ্ণো দেবী যাত্রাপথে ভূমিধসে ৩০ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু। সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, উদ্ধারকার্য দ্রুত। যাত্রীদের যাত্রা স্থগিত রাখার এবং আবহাওয়া উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Vaishno Devi Landslide: জম্মু ও কাশ্মীরে শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী যাত্রাপথে ভূমিধসের কারণে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে গেছে। কাটরা থেকে মন্দিরের দিকে যাওয়ার পথে ভারী বৃষ্টির পরে পাহাড় থেকে পাথর ও মাটি ধসে পড়ায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। হাজার হাজার যাত্রী রাস্তায় আটকে পড়েছেন এবং উদ্ধার কাজ একটানা চলছে।
খারাপ আবহাওয়া বড় বিপদ
রিয়াসি জেলার অর্ধকুমারী অঞ্চলে এই ভূমিধসটি ঘটেছে যখন হাজার হাজার ভক্ত যাত্রা করছিলেন। প্রশাসন জানিয়েছে যে একটানা বৃষ্টির কারণে পার্বত্য অঞ্চলে মাটি ধসা এবং পাথর ভেঙে পড়ার ঘটনা বেড়ে গেছে।
শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী শ্রাইন বোর্ড যাত্রীদের কাছে আবেদন করেছে যে তারা যেন আপাতত তাদের যাত্রা স্থগিত রাখেন এবং আবহাওয়া উন্নতি হওয়ার পরেই পরিকল্পনা করেন। বোর্ড আরও জানিয়েছে যে উদ্ধার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে এবং আটকে পড়া যাত্রীদের নিরাপদে বের করার জন্য সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।
জম্মুতে বন্যা পরিস্থিতি
ভারী বৃষ্টির কারণে জম্মুর পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপরে চলে গেছে। তাউই, চেনাব ও উজ্ঝ নদীর জল বেড়ে গেছে। অনেক জায়গায় জল রাস্তা ও সেতুর উপরে উঠে গেছে।
জম্মু-পাঠানকোট হাইওয়ের অনেক সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিজয়পুরে এইমসের কাছে দেবিকা সেতু ভেঙে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ভগবতী নগর সেতুর একটি লেন ধসে গেছে এবং নিরাপত্তার কারণে অন্যান্য সেতুতেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রেল ও সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন
ভূমিধস এবং সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে জম্মুর সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কাটরা ও জম্মুর মধ্যে ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়েছে। বাস এবং ব্যক্তিগত গাড়ির চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন মঙ্গলবার রাতে ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের আশঙ্কায় রাত ৯টার পর থেকে বাড়ির বাইরে বেরোনোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তীর্থযাত্রী ও স্থানীয় মানুষজন আটকে
কাটরায় ভূমিধস ও বন্যার কারণে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী রাস্তায় আটকে পড়েছেন। অনেক জায়গায় মানুষ তাদের পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। উদ্ধারকারী দল একটানা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে লেগে রয়েছে।
জম্মুর চেনানি নালায় একটি গাড়ি পড়ে যাওয়ায় তিনজন তীর্থযাত্রী ভেসে গেছেন। এদের মধ্যে দু'জন রাজস্থানের ধौलপুর এবং একজন আগ্রার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। সেনা সাম্বা জেলায় নদীর প্রবল স্রোতে আটকে পড়া যাযাবর গুজ্জর সম্প্রদায়ের সাতজনকে নিরাপদে উদ্ধার করেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা
প্রশাসন জম্মু বিভাগের সমস্ত স্কুল ও কলেজে ২৭শে আগস্ট ছুটি ঘোষণা করেছে। আবহাওয়া দফতর আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। এর মানে হল বৃষ্টি ও ভূমিধসের বিপদ এখনও কাটেনি। লোকজনকে বাড়িতে নিরাপদে থাকার এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের বলা হয়েছে তারা যেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন এবং তারপরই ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন।