রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি-র প্রবীণ নেত্রী বসুন্ধরা রাজের রাজনৈতিক সক্রিয়তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। বুধবার যোধপুরে রাজের সঙ্গে আরএসএস প্রধান ডঃ মোহন ভাগবতের সাক্ষাৎ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
জয়পুর: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান ডঃ মোহন ভাগবত বর্তমানে যোধপুরে অবস্থান করছেন, যেখানে তিনি নয় দিন থাকবেন। এই সময়ে তিনি আরএসএস-এর সর্বভারতীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠকে অংশ নেবেন। যোধপুরে থাকাকালীন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সংঘ প্রধানের সাথে সাক্ষাৎ করেন, যেখানে প্রায় ২০ মিনিট ধরে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়।
গত দেড় বছর ধরে বসুন্ধরা রাজে রাজনৈতিকভাবে কিছুটা কোণঠাসা ছিলেন, কিন্তু সংঘ প্রধানের সঙ্গে তাঁর এই সাক্ষাৎ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। বসুন্ধরা রাজের আরএসএস-এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং সংঘের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা বিবেচনা করে, এই সাক্ষাতের অনেক রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী দিনে রাজেকে দলীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
বসুন্ধরা রাজে ও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সাক্ষাৎ
ডঃ মোহন ভাগবত বর্তমানে যোধপুরে অবস্থান করছেন এবং এখানে ৯ দিন থেকে সংঘের সর্বভারতীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠকে অংশ নেবেন। এই সময়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সংঘ প্রধানের সঙ্গে প্রায় ২০ মিনিট কথা বলেন। বসুন্ধরা রাজে গত দেড় বছর ধরে রাজনৈতিকভাবে অপেক্ষাকৃতভাবে কোণঠাসা ছিলেন। এই সাক্ষাৎ তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এবং আসন্ন দায়িত্ব নিয়ে জল্পনা বাড়িয়েছে।
বসুন্ধরা রাজের সংঘের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে এবং সংঘের অনেক শীর্ষ নেতার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সাক্ষাতের পর রাজেকে দলীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ভূমিকা দেওয়া সম্ভাবনা বেড়েছে।
রাজনৈতিক জল্পনার বাজার
রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বিজেপি-র সিনিয়র নেতারা এই সাক্ষাৎকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। মূলত তিনটি প্রধান রাজনৈতিক জল্পনা আলোচনায় রয়েছে:
১. বিজেপি-তে জাতীয় সভাপতির পদ
বিজেপি-র একটি অংশের ধারণা, বসুন্ধরা রাজেকে জাতীয় সভাপতির মতো একটি বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তাঁর শক্তিশালী জনসমর্থন রয়েছে এবং দলীয় নেতা ও কর্মীদের মধ্যে তাঁর প্রভাবও বেশ শক্তিশালী বলে মনে করা হয়। বিজেপি-তে শীঘ্রই নতুন জাতীয় সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। যেহেতু দলীয় জাতীয় সভাপতি সাধারণত সংঘের সঙ্গে যুক্ত প্রবীণ নেতাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন, তাই রাজেকে এই দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংঘ প্রধানের সঙ্গে রাজের সাক্ষাতের উদ্দেশ্য তাঁর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা এবং মতামত আদানপ্রদান করাও হতে পারে।
২. রাজের পছন্দের নেতা পেতে পারেন সুযোগ
যদি বসুন্ধরা রাজেকে জাতীয় সভাপতির পদ না দেওয়া হয়, তবে তাঁর পছন্দের কোনো নেতা এই দায়িত্ব পেতে পারেন। গত কয়েক মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে রাজের সাক্ষাৎ এই ইঙ্গিত দেয় যে দলীয় নেতৃত্ব তাঁর মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজের প্রভাব এবং তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের দলীয় নতুন কৌশল এবং নেতৃত্ব পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৩. দলীয়ভাবে পুনরায় সক্রিয় ভূমিকা
রাজ গত ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন দলীয়ভাবে অপেক্ষাকৃতভাবে কম সক্রিয় ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে তিনি সীমিত সংখ্যক জনসভায় অংশ নিয়েছিলেন এবং লোকসভা নির্বাচনেও তিনি কেবল ঝালাওয়াড় লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই সক্রিয় ছিলেন, যেখানে তাঁর পুত্র দুষ্যন্ত সিং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনী সময়ে তাঁকে বেশি দায়িত্ব না দেওয়ার কারণে রাজে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং অমিত শাহের উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। এখন মোহন ভাগবতের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাঁর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় দৃঢ় হওয়ার আলোচনা শুরু হয়েছে।