লন্ডনে অনুশীলনে কোহলি
ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর, বিরাট কোহলি আবার মাঠে ফিরছেন। যদিও দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন কোহলি, সম্প্রতি তাঁকে লন্ডনের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে অনুশীলন করতে দেখা গেছে। এই পর্যায়ে কোহলি শুধুমাত্র ওয়ানডে ফরম্যাটে সক্রিয় থাকলেও, তাঁর অনুশীলনের দৃঢ়তা দেখেই বোঝা যায়, তাঁকে আবার ভারতীয় জার্সিতে খেলতে দেখার সময় বেশি দূরে নয়।
বিদেশে ফিটনেস টেস্টের প্রথম নজির
বেঙ্গালুরুতে বিসিসিআই-এর সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে অন্যান্য ক্রিকেটাররা নিয়মিত ফিটনেস পরীক্ষা দেন। তবে কোহলির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা—তিনি ইংল্যান্ডে নিজস্ব ফিটনেস টেস্ট সম্পন্ন করেছেন। বোর্ডের অনুমোদিত এই বিদেশি টেস্টের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে হলে ফিটনেসে আপস করা যাবে না।
কী কারণে বিদেশে টেস্ট
সূত্র জানাচ্ছে, কোহলির বিদেশে টেস্ট নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিসিসিআই-এর নজরদারিতে সম্পন্ন হয়েছে। বোর্ড নিশ্চিত করেছে, কোহলির ফিটনেস পরীক্ষা যথাযথভাবে মনিটর করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ শুধু কোহলির জন্য নয়, বরং অন্য ক্রিকেটারদের জন্যও উদাহরণ তৈরি করেছে—যদি তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে যেতে চান, ফিটনেসে সর্বোচ্চ স্তর বজায় রাখতে হবে।
ফিটনেস পরীক্ষার গুরুত্ব
ফিটনেস পরীক্ষায় মূলত খেলোয়াড়দের রিকভারি, স্ট্যামিনা, শক্তি ও সহনশীলতা যাচাই করা হয়। কোহলির মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বিদেশি টেস্ট করা বোর্ডের স্বচ্ছ নীতি ও খেলোয়াড়ের স্বাস্থ্য-পরিকল্পনার দিক উভয়কেই সমান গুরুত্ব দেয়। এতে কোহলি ফের মাঠে ফিরতে শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবেন।
ফিটনেস পরীক্ষায় অন্যান্য ক্রিকেটাররা
এদিকে, রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, শ্রেয়স আইয়ার, মহম্মদ শামি, হর্ষিত রানা সহ আরও কয়েকজন ক্রিকেটার বেঙ্গালুরুতে ফিটনেস পরীক্ষা দিয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার যেমন রবীন্দ্র জাদেজা, কেএল রাহুল, ঋষভ পন্থ, আকাশদীপ এবং নীতিশ রেড্ডি পরীক্ষা দেবেন। চোটের কারণে যারা আগে অংশ নিতে পারেননি, তাঁরা এই দলে থাকবেন।
ফিটনেস পরীক্ষার লক্ষ্য
ফিটনেস পরীক্ষা শুধু খেলোয়াড়ের দৈহিক প্রস্তুতি যাচাই নয়; এটি মানসিক দৃঢ়তা ও প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতিরও পরিচায়ক। কোহলির বিদেশে পরীক্ষা নেওয়া এই বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দিয়েছে, কারণ তিনি জাতীয় দলের জন্য এক অনন্য অবদান। বোর্ডের দিক থেকে এই পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন উদাহরণ স্থাপন করা হয়েছে।
আকাঙ্ক্ষিত প্রত্যাবর্তন
কোহলির লক্ষ্য স্পষ্ট—অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন। তাঁর অনুশীলন, বিদেশি টেস্ট এবং ফিটনেসের প্রতি দৃষ্টি দেখাচ্ছে, যে কোহলি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে মাঠে ফিরবেন। ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রতীক্ষা এবার আরও উত্তেজনাপূর্ণ।
বোর্ডের বার্তা
এই উদ্যোগ বোর্ডের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—যে কেউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আশা করে, ফিটনেসে আপস করা যাবে না। কোহলির বিদেশে টেস্ট বিতর্কের প্রেক্ষিতে বোর্ডের অনুমোদনের বিষয়টি সকলের সামনে এসেছে এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।
ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা
ভারতীয় ক্রিকেটের এই অভিজ্ঞ তারকার পুনরাবির্ভাব নিয়ে উন্মাদনা বিরাজ করছে। কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী আশা করছেন, কোহলি আবার ভারতের জার্সিতে মাঠে ফিরে আসবেন। তাঁর দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং ফিটনেসের সমন্বয়ই দলের জন্য এক নতুন শক্তি যোগ করবে।
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তুতি
কোহলি যে শুধু খেলোয়াড় নয়, দলের নায়কও, তা বোঝা যায়। বিদেশে টেস্ট, অনুশীলন এবং ফিটনেস মেনটেন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম তাঁর অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই প্রস্তুতি শুধু ওয়ানডে নয়, ভবিষ্যতের সমস্ত আন্তর্জাতিক ফরম্যাটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার
লন্ডনের মাটিতে বিরাট কোহলির নতুন নজির, বিদেশে ফিটনেস টেস্ট নেওয়া, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অর্জন নয়; এটি দেশের ক্রিকেট ও বোর্ডের নীতিরও প্রতিফলন। অক্টোবরের সিরিজে ফের তাঁর খেলা নিশ্চিত হলে, এই যাত্রা হবে ক্রিকেটের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়।