Wi-Fi ইন্টারনেটকে তারবিহীন, বহনযোগ্য এবং সহজ করে তুলেছে। রেডিও তরঙ্গের সাহায্যে ডেটা স্থানান্তর করার এই প্রযুক্তি 2.4 এবং 5 গিগাহার্টজ ব্যান্ডে কাজ করে। Wi-Fi 6 এবং Wi-Fi 7-এর মতো নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলি দ্রুত, নির্ভরযোগ্য এবং স্থিতিশীল সংযোগ প্রদান করে আমাদের ডিজিটাল জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে।
Wi-Fi প্রযুক্তি: Wi-Fi প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের পদ্ধতি বদলে দিয়েছে। বাড়ি, অফিস এবং সর্বজনীন স্থানগুলিতে এই ওয়্যারলেস সিস্টেম রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে ডেটা ডিভাইসে পৌঁছে দেয়। যেখানে আগে ইন্টারনেটের জন্য তারের উপর নির্ভর করতে হত, সেখানে এখন Wi-Fi 6 এবং Wi-Fi 7-এর মতো নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলি দ্রুত গতি, স্থিতিশীল নেটওয়ার্ক এবং একই সাথে একাধিক ডিভাইস সংযুক্ত করার সুবিধা দিচ্ছে। এর ফলে মোবাইল, ল্যাপটপ এবং স্মার্ট টিভি-এর মতো ডিভাইসগুলিতে ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা আরও সহজ এবং দ্রুত হয়েছে।
রেডিও তরঙ্গের উপর চলে ওয়াই-ফাই
Wi-Fi-এর পুরো নাম Wireless Fidelity। এই প্রযুক্তি রেডিও ওয়েভস অর্থাৎ রেডিও তরঙ্গের সাহায্যে ডেটা একটি ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে পৌঁছে দেয়। যেমনভাবে রেডিও স্টেশন থেকে নির্গত তরঙ্গ আপনার রেডিওতে পৌঁছে শব্দে রূপান্তরিত হয়, তেমনই Wi-Fi রাউটার থেকে নির্গত তরঙ্গ আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে পৌঁছে ইন্টারনেটের সিগন্যালে রূপান্তরিত হয়।
প্রক্রিয়াটি যেভাবে কাজ করে
প্রথমে ইন্টারনেট আপনার বাড়ি বা অফিসের ব্রডব্যান্ড সংযোগ বা মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে রাউটারে পৌঁছায়। রাউটার সেই ইন্টারনেট সিগন্যালকে ডিজিটাল ডেটা থেকে রেডিও ওয়েভে রূপান্তরিত করে। এই তরঙ্গগুলি বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং আপনার ডিভাইসের Wi-Fi রিসিভার সেগুলি গ্রহণ করে। রিসিভার এই রেডিও ওয়েভগুলিকে আবার ডিজিটাল ডেটাতে রূপান্তরিত করে এবং আপনার ফোন বা ল্যাপটপ ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হয়ে যায়।
দুই ধরনের ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড
Wi-Fi প্রধানত দুটি ব্যান্ডে কাজ করে। প্রথমটি হল 2.4 গিগাহার্টজ, যার বৈশিষ্ট্য হল এর পরিসীমা বেশি কিন্তু গতি কিছুটা কম থাকে। দ্বিতীয়টি হল 5 গিগাহার্টজ, যা অনেক বেশি গতি প্রদান করে কিন্তু এর পরিসীমা সীমিত। এই কারণেই আপনি রাউটার থেকে দূরে চলে গেলে বা মাঝে দেয়াল থাকলে Wi-Fi সিগন্যাল দুর্বল হতে পারে।
Wi-Fi 6 এবং Wi-Fi 7-এর মতো নতুন প্রযুক্তিগুলি আরও দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য সংযোগ প্রদান করে। এগুলি কেবল ডাউনলোড এবং আপলোড স্পিডই বাড়ায় না, বরং নেটওয়ার্কে একই সাথে অনেক ডিভাইস সংযুক্ত থাকলেও স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
আমাদের জীবনকে বহনযোগ্য ও সংযুক্ত করেছে
Wi-Fi না থাকলে প্রতিটি ডিভাইসকে ইন্টারনেটের জন্য তারের মাধ্যমে সংযোগ করতে হত। এর ফলে কেবল তারের জঞ্জালই বাড়ত না, বরং মোবাইল এবং ল্যাপটপের মতো বহনযোগ্য ডিভাইসগুলির ব্যবহারও কঠিন হত। Wi-Fi ইন্টারনেটকে সত্যিকারের বহনযোগ্য এবং সহজ করে তুলেছে।
আজ আমরা যেকোনো জায়গা থেকে বসে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারি, ভিডিও কল করতে পারি, অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে পারি বা বিনোদনের আনন্দ নিতে পারি। এই প্রযুক্তি কেবল আমাদের জীবনকে আরও স্মার্টই করে তোলে না, বরং আমাদের সর্বদা সংযুক্তও রাখে।
আগামী দিনে Wi-Fi-এর আরও দ্রুত, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য সংস্করণ দেখতে পাওয়া যাবে। এটি যেভাবে ইন্টারনেটকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে, তা প্রযুক্তির জগতে এক বিশাল বিপ্লব।