এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যু: তদন্তের নতুন তথ্য

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যু: তদন্তের নতুন তথ্য

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যু। তদন্তে জানা গেছে যে দুর্ঘটনার সময় দুটি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটিরও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা: এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। এই দুঃখজনক ঘটনায় ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এত দিন পর্যন্ত দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা যায়নি, কিন্তু সম্প্রতি হওয়া তদন্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পাওয়া গেছে।

দুর্ঘটনার কারণ কী: ইঞ্জিন বিকল নাকি সিস্টেমের ত্রুটি?

তদন্তকারীরা এই সম্ভাবনা প্রকাশ করেছেন যে দুর্ঘটনার সময় বিমানের দুটি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই বিষয়টি নিশ্চিত হয় কারণ বিমানের জরুরি পাওয়ার সিস্টেম, যাকে র‍্যাপিড অ্যাক্সেস টারবাইন (RAT) বলা হয়, সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে গিয়েছিল। এই সিস্টেম তখনই চালু হয় যখন দুটি ইঞ্জিন কাজ করা বন্ধ করে দেয় এবং প্রধান বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে দুর্ঘটনার সময় বিমানের বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

সিমুলেটরে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি

তদন্তকারী দল এবং এয়ার ইন্ডিয়ার অভিজ্ঞ পাইলটরা সেই দুর্ঘটনাটি সিমুলেটরে পুনরায় তৈরি করেন। তাঁরা একই পরিস্থিতিতে বিমানের ওড়ার পরীক্ষা করেন, যে পরিস্থিতিতে আসল বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। এই সময় পরীক্ষা করে দেখা হয় যে ল্যান্ডিং গিয়ার খোলা থাকলে এবং উইং ফ্ল্যাপস বন্ধ থাকলে বিমানটি নিচে পড়তে পারে কিনা। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, শুধুমাত্র এই দুটি কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হতে পারে না। এর থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা গেছে যে ইঞ্জিন অথবা বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ধরনের প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল।

ভিডিও ফুটেজ থেকে পাওয়া ইঙ্গিত

দুর্ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যা থেকে জানা গেছে যে টেক অফের (উড্ডয়ন) পরেই বিমানটি বেশি উচ্চতা অর্জন করতে পারেনি এবং মাটিতে আঘাত হানে। বিশ্লেষণ থেকে আরও জানা গেছে যে ল্যান্ডিং গিয়ার অর্ধেক মুড়ে ছিল, কিন্তু তার দরজা খোলেনি। এটি ইঙ্গিত দেয় যে হাইড্রোলিক সিস্টেম বা বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা ছিল।

ফ্ল্যাপস এবং গিয়ারে প্রযুক্তিগত ত্রুটির আশঙ্কা

সাধারণত, ওড়ার সময় বিমানের উইং ফ্ল্যাপস এবং ল্যান্ডিং গিয়ার সঠিকভাবে কাজ করা খুব জরুরি। যদি এগুলিতে কোনো ত্রুটি দেখা যায়, বিশেষ করে টেক অফের সময়, তবে বিমানের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এই ক্ষেত্রে এই দুটি সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করছিল না, যা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেয়।

ব্ল্যাক বক্সের তদন্ত থেকে আরও সূত্র পাওয়ার সম্ভাবনা

বর্তমানে, দুর্ঘটনার ব্ল্যাক বক্স অর্থাৎ ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারের তদন্ত চলছে। এর থেকেই পরিষ্কার হবে যে দুর্ঘটনার সময় বিমানের প্রযুক্তিগত অবস্থা কেমন ছিল এবং পাইলট কোন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ব্ল্যাক বক্সে ককপিটের কথোপকথন, ইঞ্জিনের কার্যকারিতা, উচ্চতা এবং গতি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে।

এখনও পর্যন্ত এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB) এবং এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, তদন্তের সঙ্গে যুক্ত সূত্রগুলির মতে, প্রযুক্তিগত ত্রুটি এখন প্রধান কারণ হিসাবে উঠে আসছে।

Leave a comment