আলিগড়ে সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে তীব্র হামলা, SDM-এর গাড়িতে পাথর বৃষ্টি

আলিগড়ে সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে তীব্র হামলা, SDM-এর গাড়িতে পাথর বৃষ্টি

আলিগড়ের কায়মপুর এলাকায় সরকারি জমি থেকে বেআইনি দখল সরাতে যাওয়া নগর নিগম দলের ওপর গ্রামবাসীরা পাথর ছুঁড়েছে। এই সময় এসডিএম-এর গাড়িতেও হামলা হয়, যেখানে তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান। পুলিশ অনেককে হেফাজতে নিয়েছে।

আলিগড়: বুধবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলার কায়মপুর এলাকায় যখন নগর নিগমের দল সরকারি জমি থেকে অবৈধ দখল সরাতে পৌঁছায়, তখন সেখানে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। অভিযানের বিরোধিতা করে গ্রামবাসীরা দলের ওপর পাথর ছুঁড়েছিল, যার ফলে ঘটনাস্থলে হট্টগোল শুরু হয়। এই সময় এসডিএম সুমিত কুমারের গাড়িও উন্মত্ত জনতার লক্ষ্যবস্তু হয়। কাঁচ ভেঙে যায় এবং দলকে কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে হয়। পুলিশ অনেককে হেফাজতে নিয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অভিযানে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা

ঘটনাটি মহুয়াখেড়া থানা এলাকার কায়মপুর গ্রামের, যেখানে সন্ধ্যা প্রায় ৬টায় নগর নিগমের দল সরকারি জমির পরিমাপ ও অবৈধ দখল সরাতে পৌঁছেছিল। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দলটি কোনো পূর্ব ঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই একতরফা অভিযান শুরু করে। স্থানীয়রা খবর পাওয়া মাত্রই কয়েক ডজন গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতিবাদ শুরু করে।

মুহূর্তের মধ্যে ভিড় হিংস্র হয়ে ওঠে এবং নগর নিগমের কর্মীদের ঘিরে ফেলে। অল্প সময়ের মধ্যেই লোকজন স্লোগান দিতে দিতে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে, যার ফলে দলের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি হঠাৎ খারাপ হয়ে যাওয়ায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এসডিএম-এর গাড়িতে পাথর বৃষ্টি

এই সময় অপ্রত্যাশিতভাবে এসডিএম সুমিত কুমার সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। ভিড় তার গাড়িকে নগর নিগমের দল ভেবে হামলা চালায়। পাথর নিক্ষেপ এতটাই তীব্র ছিল যে এসডিএম-এর গাড়ির সমস্ত কাঁচ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায় এবং গাড়ির পেছনের অংশ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সূত্র অনুযায়ী, এসডিএম এবং তার দল কোনোমতে দৌড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে এবং নিকটবর্তী স্থানে আশ্রয় নেয়। হামলায় নগর নিগমের দুজন কর্মী সামান্য আহত হন, অন্যদিকে এসডিএম অল্পের জন্য রক্ষা পান। ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

পাঁচ থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়

খবর পাওয়া মাত্রই মহুয়াখেড়া থানা সহ আশেপাশে আরও চারটি থানার পুলিশ দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। সিও কমলেশ কুমার নেতৃত্ব দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি জানান যে, “আমাদের দল ঘটনার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।”

পুলিশ অনেক উপদ্রবীকে হেফাজতে নিয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে অন্যদের শনাক্ত করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, “সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং কর্মকর্তাদের ওপর হামলাকারীদের কোনো মূল্যে ছাড় দেওয়া হবে না।”

প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে

আলিগড় প্রশাসন এই ঘটনাকে আইন-শৃঙ্খলার জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন যে, সরকারি জমি দখলমুক্ত করা প্রশাসনের অগ্রাধিকার এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের নিরাপত্তা ছাড়া কোনো অভিযান চালানো হবে না।

এসডিএম সুমিত কুমার বলেছেন যে, “আমরা জনগণের মধ্যে সংলাপ স্থাপন করে অভিযান এগিয়ে নিয়ে যাব, তবে যারা আইনের বিরুদ্ধে যাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনার পরিবেশ রয়েছে, যদিও পুলিশের কঠোর পাহারার পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে জানানো হচ্ছে।

Leave a comment