অগ্রিম জামিন: দায়রা আদালত নাকি সরাসরি উচ্চ আদালত – ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে সিদ্ধান্ত

অগ্রিম জামিন: দায়রা আদালত নাকি সরাসরি উচ্চ আদালত – ১৪ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টে সিদ্ধান্ত
সর্বশেষ আপডেট: 10 ঘণ্টা আগে

সার্বোচ্চ আদালত ১৪ অক্টোবর বিবেচনা করবে যে অগ্রিম জামিনের জন্য প্রথমে দায়রা আদালত (Sessions Court) যাওয়া বাধ্যতামূলক কিনা, অথবা সরাসরি উচ্চ আদালতে (High Court) আবেদন করা যেতে পারে। কেরালার উচ্চ আদালতের কার্যপ্রণালী এবং সঠিক তথ্যভিত্তিক রেকর্ডের উপর আলোচনা করা হবে।

নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট এখন এই বিষয়টি বিবেচনা করবে যে, অগ্রিম জামিনের জন্য প্রথমে দায়রা আদালত যাওয়া বাধ্যতামূলক, নাকি আবেদনকারী সরাসরি উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারেন। এই বিষয়টি বর্তমানে কেরালার উচ্চ আদালতে বিচারাধীন একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উত্থাপিত হয়েছে, যেখানে আবেদনকারীরা সরাসরি উচ্চ আদালতে অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেন।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ मेहता-এর একটি বেঞ্চ এই কার্যপ্রণালীর সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে, দায়রা আদালতের সাথে যোগাযোগ না করে অগ্রিম জামিনের আবেদন করলে সঠিক তথ্যভিত্তিক রেকর্ড তৈরি হয় না। আদালত স্পষ্ট করেছে যে এই বিষয়টি শুধুমাত্র কেরালার উচ্চ আদালতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সারা দেশের বিচারিক নিয়মের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

কেরালার উচ্চ আদালতের কার্যপ্রণালী এবং সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ

সম্প্রতি কেরালার উচ্চ আদালতে একটি প্রথা দেখা দিয়েছে, যেখানে আবেদনকারীরা অগ্রিম জামিনের আবেদনের উপর বিবেচনা করার জন্য সরাসরি উচ্চ আদালতে যোগাযোগ করেন। এটি দেখে, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে এই প্রক্রিয়ায় সাংবিধানিক পদ্ধতির সম্পূর্ণ অনুসরণ হচ্ছে না।

বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ मेहता বলেছেন যে, পুরানো ফৌজদারি কার্যবিধি এবং নতুন নিয়মে স্পষ্ট প্রক্রিয়া দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী, প্রথমে দায়রা আদালত নিজে অনুসন্ধান করবে, তারপর উচ্চ আদালত মামলায় বিবেচনা করতে পারে।

সুপ্রিম কোর্ট মনে করেছে যে সরাসরি উচ্চ আদালতে যোগাযোগ করলে তথ্যভিত্তিক রেকর্ডের অভাব থাকে এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব পড়ে। ফলস্বরূপ, আবেদনকারী এবং প্রতিপক্ষ উভয়ের অধিকার সঠিকভাবে সুরক্ষিত হয় না।

আবেদন এবং ঘটনার প্রেক্ষাপট

এই মামলাটি দুজন ব্যক্তির কেরালার উচ্চ আদালতের একটি আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা আবেদনের সাথে সম্পর্কিত। এই আবেদনকারীরা দায়রা আদালতে না গিয়ে সরাসরি উচ্চ আদালতে অগ্রিম জামিনের জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। কেরালার উচ্চ আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্ট এখন সিদ্ধান্ত নেবে যে এই বিকল্পটি আবেদনকারীর নিজস্ব বিবেচনার উপর নির্ভর করে, নাকি অভিযুক্তের জন্য প্রথমে দায়রা আদালতে আবেদন করা বাধ্যতামূলক। বিচারকদের বেঞ্চ বলেছে যে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব অন্যান্য রাজ্যেও পড়বে।

সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম

সুপ্রিম কোর্ট তার রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে কেরালার উচ্চ আদালতকে নোটিশ পাঠিয়েছে। এছাড়াও, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় সহায়তা করার জন্য সিনিয়র আইনজীবী সিদ্ধান্ত লুথরা-কে 'অ্যামিকাস কিউরি' (amicus curiae) হিসাবে নিযুক্ত করেছে।

এই মামলার শুনানি ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়, আদালত পরীক্ষা করবে যে উচ্চ আদালত থেকে সরাসরি অগ্রিম জামিন পাওয়ার প্রথা আইনগতভাবে বৈধ কিনা, নাকি দায়রা আদালতের প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক।

অগ্রিম জামিন

অগ্রিম জামিন একটি এমন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার আগেই আদালতের কাছ থেকে সুরক্ষা পায়। এর উদ্দেশ্য হলো কোনো সঠিক তদন্ত ছাড়াই নির্দোষ ব্যক্তিকে জেলে যাওয়া থেকে বিরত রাখা। সাধারণত, অভিযুক্ত প্রথমে দায়রা আদালতে বা সমতুল্য এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে আবেদন করে। তারপর আদালত জামিন মঞ্জুর করার আগে অভিযুক্তের উপর অভিযোগ বৈধ কিনা তা পরীক্ষা করবে।

Leave a comment