বালাঘাটের ডিএফও নেহা শ্রীবাস্তব কংগ্রেস বিধায়ক অনুভা মুঞ্জারের বিরুদ্ধে ২-৩ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য বন বিভাগ দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
বালাঘাট: মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলায় বন বিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) নেহা শ্রীবাস্তব কংগ্রেস বিধায়ক অনুভা মুঞ্জারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিধায়ক তাঁকে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। ডিএফও এই বিষয়ে বন বিভাগকে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন।
এই অভিযোগ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ডিএফও-র দাবি, তিনি রাজি না হওয়ায় বিধায়ক তাঁকে হুমকি দিয়েছেন এবং জেলা থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঘুষ দাবি এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ
ডিএফও প্রিন্সিপাল চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট (পিসিসিএফ)-কে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন যে, ১৬ আগস্ট বিধায়ক তাঁকে বন विश्राम गृह-এ ডেকে ঘুষ চেয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, তাঁর আপত্তি জানানোয় বিধায়ক আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেন এবং তাঁর চাকরি ঝুঁকির মুখে ফেলার হুমকি দেন।
ডিএফও চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন যে, বিধায়ক বালাঘাটের সকল ভারতীয় বন পরিষেবা (আইএফএস) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, বিধায়ক সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছিলেন এবং কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছিলেন।
বিধায়ক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন
কংগ্রেস বিধায়ক অনুভা মুঞ্জারে ডিএফও-র অভিযোগগুলি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর মতে, এটি ডিএফও এবং তাঁর স্বামী অধর গুপ্তার "হালকা মানসিকতা" এবং আত্মরক্ষার একটি চক্রান্ত।
মুঞ্জারের দাবি, লালবরার সোনাওয়ানিতে একটি স্ত্রী বাঘের মৃত্যুর ঘটনা থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য এই বিবাদ তৈরি করা হয়েছে। তিনি সতর্ক করেছেন যে, তিনি ভিত্তিহীন অভিযোগের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন এবং প্রয়োজনে আমরণ অনশনে বসতে পারেন।
তদন্তের জন্য দুই সদস্যের কমিটি গঠন
সরকার বিষয়টি দ্রুত তদন্তের জন্য দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত প্রিন্সিপাল চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট কমালিকা মোহান্তা (১৯৯৭ ব্যাচ) এবং ফরেস্ট কনজারভেটর অঞ্জনা সুচিতা তিরকি (২০১০ ব্যাচ)।
কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে স্পষ্ট হবে ডিএফও-র অভিযোগ সঠিক নাকি বিধায়কের মানহানির বিষয়।
বন বিভাগ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে উত্তেজনা
এই বিষয়টি কেবল ঘুষের অভিযোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর পেছনে বন বিভাগ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে উত্তেজনা, বাঘের মৃত্যুর বিতর্ক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতার লড়াইও দেখা যাচ্ছে।
বালাঘাট, যা তার বন সম্পদ এবং বাঘের জন্য বিখ্যাত, এখন এই রাজনৈতিক যুদ্ধের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। কর্মকর্তা এবং বিধায়ক উভয়ের মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।