ভোটার তালিকা আপডেট: পশ্চিমবঙ্গে ১ জুন থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে নতুন নাম তোলা ও ঠিকানা বদলের জন্য মোট ১০,০৪,৬৬৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২,৪৩,৬৮৭টি আবেদন বাতিল করা হয়েছে এবং প্রায় আড়াই লক্ষের বেশি এখনও যাচাই–পরীক্ষার অধীনে। উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে আবেদন সংখ্যায়। সীমান্তবর্তী জেলাগুলি থেকে অস্বাভাবিক মাত্রায় আবেদন জমা পড়ায় কমিশন ও প্রশাসনের উদ্বেগ বেড়েছে। বুধবার থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী বৈঠক, যেখানে বাংলার সিইও-র রিপোর্টও আলোচিত হবে।
সীমান্তবর্তী জেলাগুলিই শীর্ষে
সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়—১.৩৭ লক্ষেরও বেশি। এর পরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা, যেখানে প্রায় এক লক্ষের কাছাকাছি আবেদন জমা পড়েছে। এছাড়া মুর্শিদাবাদ, মালদা ও নদিয়ার মতো সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেও অস্বাভাবিক হারে আবেদন এসেছে। প্রশাসনের মতে, এই প্রবণতা একেবারেই স্বাভাবিক নয়।
অস্বাভাবিক হারে আবেদন, সন্দেহের জায়গা
কমিশন ও জেলা আধিকারিকদের বক্তব্য, সাধারণত যেখানে তিনটি আবেদন জমা পড়ে, সেখানে এবার ১০টি পর্যন্ত আবেদন জমা পড়ছে। একই ঠিকানা থেকে বহু আবেদন জমা পড়ায় ভুয়ো নাম ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে প্রতিটি আবেদনের খুঁটিনাটি যাচাই চলছে।
বাতিলের তালিকাও দীর্ঘ
মাত্র দু’মাসে ২ লক্ষ ৪৩ হাজারের বেশি আবেদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। যাচাইয়ের জন্য আরও প্রায় ২ লক্ষ ৬৮ হাজার আবেদন রাখা হয়েছে। নথিপত্রের অভাব ও ভুল তথ্য জমা দেওয়াই বাতিল হওয়ার প্রধান কারণ বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও সতর্কতা
এর আগে ময়না ও বারুইপুরে দায়িত্বে থাকা ইআরও ও এইআরও–কে যথাযথ যাচাই ছাড়া নাম তোলার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। তার পর থেকেই সব জায়গায় বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। ৭ নম্বর ফর্মে সন্দেহজনক নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে এবং ব্লক লেভেল অফিসাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঠিকানা যাচাই করছেন।
দিল্লিতে দুই দিনের বৈঠক
ভোটার লিস্টে নাম তোলার এই হিড়িকের প্রেক্ষিতে বুধবার থেকে দিল্লিতে দু’দিনব্যাপী বৈঠকে বসেছে নির্বাচন কমিশন। বাংলার সিইও মনোজ আগরওয়ালের রিপোর্টে অস্বাভাবিক হারে আবেদন বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। কমিশনের প্রধান ফোকাস এখন তালিকা স্বচ্ছ ও নির্ভুল রাখা।
পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে মাত্র দু’মাসে ভোটার তালিকায় নতুন নাম তোলা ও কেন্দ্র বদলের জন্য জমা পড়েছে ১০ লক্ষেরও বেশি আবেদন। এর মধ্যে লক্ষাধিক আবেদন ইতিমধ্যেই বাতিল হয়েছে, আরও বহু যাচাইয়ের অধীনে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলি থেকে অস্বাভাবিক হারে আবেদন আসায় চিন্তায় নির্বাচন কমিশন।