বারওয়ানির সেন্ধওয়ায় কথিত ধর্মান্তর নিয়ে বিতর্ক ও মারামারি হয়েছে। হিন্দু সংগঠনগুলির হস্তক্ষেপে তিনজন আহত হয়েছেন। পুলিশ অজ্ঞাত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
বারওয়ানি: মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানি জেলার সেন্ধওয়ায় কথিত ধর্মান্তর নিয়ে বিতর্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অভিনব কলোনির একটি বাড়িতে প্রার্থনা করা লোকজনের ওপর হামলার ঘটনার পর পুলিশ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এই ঘটনা শহরে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়িয়েছে এবং স্থানীয় নেতারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন।
অভিনব কলোনিতে ধর্মান্তর নিয়ে মারামারি
তথ্য অনুযায়ী, অভিনব কলোনির একটি বাড়িতে সাতজন পুরুষ ও দুজন মহিলা প্রার্থনা করছিলেন। হিন্দু সংগঠনগুলি ওই বাড়িতে ধর্মান্তরের অভিযোগ করেছিল। যখন সংগঠনের লোকজন সেখানে পৌঁছান, তখন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রার্থনা করা লোকজনের ওপর হামলা চালায়।
মারামারিতে সামান্য আঘাত লেগেছে এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে ভয় ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে সকল ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত প্রক্রিয়া
সেন্ধওয়া শহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিএস বিসেন জানিয়েছেন যে বিজয় ডাবর, গন্দাস এবং এমপি অনলাইন অপারেটরের অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, তদন্তে জানা গেছে যে প্রার্থনা করা ব্যক্তিরা তাদের স্বাধীন ইচ্ছায় ধর্মীয় প্রার্থনা করছিলেন, কোনো প্রকার চাপ বা জোর ছিল না।
এর পাশাপাশি, পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য পক্ষ এবং স্থানীয় নেতাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। এই বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে যে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং যেকোনো ধরনের চাপ বা রাজনীতি থেকে মুক্ত হয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা হবে।
ঘটনার ওপর নেতা ও নাগরিকদের অসন্তোষ প্রকাশ
ঘটনার পর কংগ্রেস ও জয়সের স্থানীয় নেতারা পুলিশ থানায় পৌঁছেছেন এবং মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন যে কোনো ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন বরদাস্ত করা হবে না। একই সঙ্গে, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, যেখানে একজন মহিলার সাথে অশ্লীল ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় নাগরিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে ধর্মীয় কার্যকলাপের সময় এই ধরনের সহিংস আচরণ সমাজে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। তাঁরা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন।
বিধায়ক থানায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন
ঘটনার পর সেন্ধওয়ার বিধায়ক মন্টু সোলঙ্কিও শহর থানায় পৌঁছে বিজেপি এবং হিন্দু সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে পুলিশ এই বিষয়ে পক্ষপাতিত্ব করছে। এটি তাঁর তৃতীয় প্রকাশ্য বিক্ষোভ, যেখানে তিনি সম্প্রতি একটি বেসরকারি হাসপাতালে একজন আদিবাসী প্রবীণ ব্যক্তির ভুল চিকিৎসার ঘটনাতেও প্রতিবাদ করেছিলেন।
এই ধরনের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্ব হলো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা এবং আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।