৯ই জুলাই: দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক, ২৫ কোটি শ্রমিকের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা

৯ই জুলাই: দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক, ২৫ কোটি শ্রমিকের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা

৯ই জুলাই ট্রেড ইউনিয়নগুলির ভারত বন্ধের ডাক। ২৫ কোটি কর্মচারী এই ধর্মঘটে অংশ নেবেন। ব্যাঙ্ক, বীমা, ডাক এবং পরিবহন পরিষেবা প্রভাবিত হবে। শেয়ার বাজার এবং জরুরি পরিষেবাগুলি স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে।

ভারত বন্ধ: দেশে ৯ই জুলাই, ২০২৫-এ একটি বড় ভারত বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। এই ধর্মঘটটি ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চের দ্বারা আহ্বান করা হয়েছে। ইউনিয়নগুলির দাবি, প্রায় ২৫ কোটির বেশি শ্রমিক এই দেশব্যাপী ধর্মঘটে অংশ নেবেন। এদের মধ্যে ব্যাঙ্ক, বীমা, ডাক পরিষেবা, কয়লা খনি, পরিবহন এবং আরও অনেক ক্ষেত্রের কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

সরকারের শ্রম নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

ধর্মঘটের প্রধান কারণ হল কেন্দ্র সরকারের দ্বারা চালু করা নতুন শ্রম বিধিগুলি (Labour Codes)। ট্রেড ইউনিয়নগুলির বক্তব্য, এই শ্রম বিধিগুলি শ্রমিকদের অধিকারকে দুর্বল করে। ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের মতে, এই বিধিগুলির মাধ্যমে সম্মিলিত দর কষাকষি, ধর্মঘটের অধিকার এবং ইউনিয়ন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

মাস ধরে চলছিল প্রস্তুতি

অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (AITUC)-এর মহাসচিব অমরজিৎ কৌর জানিয়েছেন যে এই ধর্মঘট দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুত করা হচ্ছিল। তিনি দাবি করেছেন, এতে ২৫ কোটির বেশি শ্রমিক অংশ নেবেন। এছাড়াও, সংযুক্ত কৃষক মোর্চা এবং কৃষি শ্রমিক সংগঠনগুলিও এই আন্দোলনের সমর্থন জানিয়েছে এবং গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনা করেছে।

কী কী বন্ধ থাকবে?

ধর্মঘটের কারণে দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের পরিষেবা ব্যাহত হবে। জেনে নিন কোন কোন পরিষেবার উপর প্রভাব পড়তে পারে:

ব্যাংকিং পরিষেবা: সরকারি এবং কিছু বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে কাজকর্ম বন্ধ থাকবে। গ্রাহকরা ব্যাঙ্ক শাখাগুলিতে লেনদেন করতে পারবেন না।

বীমা পরিষেবা: বীমা কোম্পানিগুলির অফিসগুলিতেও কাজ প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ডাক পরিষেবা: পোস্ট অফিসের অনেক কেন্দ্রে ধর্মঘটের কারণে পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে।

কয়লা খনন ও শিল্পাঞ্চল: খনি ও কারখানাগুলিতে উৎপাদন এর উপর প্রভাব পড়বে।

রাজ্য পরিবহন: অনেক রাজ্যে বাস পরিষেবা প্রভাবিত হতে পারে।

কী কী খোলা থাকবে?

শেয়ার বাজার: স্টক এক্সচেঞ্জ যেমন NSE এবং BSE স্বাভাবিকভাবে খোলা থাকবে।

গহনা বাজার: সোনা-রুপো কেনাবেচায় কোনো প্রভাব পড়বে না।

জরুরি পরিষেবা: হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা আগের মতোই চালু থাকবে।

ইউনিয়নগুলির প্রধান দাবি

ট্রেড ইউনিয়নগুলি সরকারের কাছে ১৭ দফা দাবি পেশ করেছে। এর মধ্যে প্রধান দাবিগুলি হল:

  • চারটি নতুন শ্রম বিধি প্রত্যাহার করতে হবে।
  • সরকারি এবং পাবলিক সেক্টরের সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণ বন্ধ করতে হবে।
  • ঠিকাদারি এবং আউটসোর্সিং ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে।
  • ন্যূনতম বেতন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্ব নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
  • শ্রমিকদের নিয়মিত এবং স্থায়ী কর্মসংস্থান দিতে হবে।

Leave a comment