বিহারের কিশানগঞ্জ জেলার অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (AIMIM)-এর প্রাক্তন জেলা সভাপতি রহিমুদ্দিন ওরফে হৈবর আবারও শিরোনামে এসেছেন। হৈবরের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ২০১৪ সালে ঠাকুরগঞ্জ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ১৮৮/১৪ নম্বর মামলায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগ, তিনি তাঁর পদের অপব্যবহার করে শুধু সরকারি তহবিল আত্মসাৎ করেননি, অবৈধভাবে সম্পত্তিও অর্জন করেছেন।
বিষয়টি গুরুতর হওয়ার কারণে এবং ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে AIMIM সাংগঠনিক কড়া পদক্ষেপ নিয়ে রহিমুদ্দিনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। দলের রাজ্য সভাপতি আখতারুল ইমান তাঁকে এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগের জবাব দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে তিনি জবাব না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আরও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবৈধ সম্পত্তি তদন্তে গতি
এই পুরো ঘটনায় পুলিশও এখন সক্রিয় হয়েছে। কিশানগঞ্জ জেলায় অবৈধভাবে সম্পত্তি অর্জনকারী পাঁচজনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে রহিমুদ্দিনের নাম বিশেষভাবে রয়েছে। এই তালিকা পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে এবং জেলা প্রশাসন এখন এই বিষয়ে পরবর্তী বড় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রশাসন অপরাধ থেকে অর্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আদালতে প্রস্তাব দাখিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। রহিমুদ্দিনের পাশাপাশি অন্য চার অভিযুক্তের মধ্যে মাদক পাচার, দেহ ব্যবসা এবং অন্যান্য সরকারি কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, এই পদক্ষেপ রাজ্যে দুর্নীতি ও অবৈধ কর্মকাণ্ড দমনে একটি বড় ও কঠোর পদক্ষেপ হবে।
দলের ভাবমূর্তি বাঁচানোর চেষ্টা
AIMIM-এর শীর্ষ নেতৃত্ব সময় মতো ব্যবস্থা নিয়ে রহিমুদ্দিনকে বহিষ্কার করেছে। দলের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং জনগণের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে এই সিদ্ধান্তকে দেখা হচ্ছে। রহিমুদ্দিন এর আগে রাষ্ট্রীয় জনতা দলে (RJD) ছিলেন, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দল ছেড়ে AIMIM-এ যোগ দেন। পরে তাঁকে কিশানগঞ্জের জেলা সভাপতিও করা হয়েছিল।
রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কঠোর রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান হিসেবে দেখা হচ্ছে। একদিকে পুলিশ ও প্রশাসন যেমন আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে, তেমনই দলও সংগঠনের ভেতরে কোনো ধরনের গাফিলতি বরদাস্ত করবে না, সেই বার্তাও দিচ্ছে।