২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে মহাজোট তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী এবং মুকেশ সাহানিকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। জোট রাজনৈতিক ঐক্য এবং উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ওপর জোর দেওয়ার বার্তা দিয়েছে।
পাটনা: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে মহাজোট রাজনৈতিক শক্তি ও ঐক্যের সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। দীর্ঘ বৈঠকের পর এবং আসন বণ্টন নিয়ে মতপার্থক্য মেটানোর পর জোট মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর নেতা তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী এবং বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-এর সভাপতি মুকেশ সাহানিকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
জোটের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তেজস্বী যাদবের তরুণ নেতৃত্ব ক্ষমতা এবং মুকেশ সাহানির সামাজিক ভারসাম্য বিহারে জোটের শক্তি বাড়াতে পারে। এই পদক্ষেপ মহাজোটের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা তুলে ধরে যে, তাদের লক্ষ্য কেবল ক্ষমতা দখল নয়, বরং বিহারে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক ন্যায়বিচার বাস্তবায়ন করা।
প্রেস কনফারেন্সে সকল দলের উপস্থিতি
পাটনায় আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে আরজেডি, কংগ্রেস, ভিআইপি, মালে, সিপিআই এবং সিপিএম-এর প্রবীণ নেতারা এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সকল নেতা জনতাকে এই বার্তা দিয়েছেন যে, জোট এখন বিহারে পরিবর্তনের রাজনীতির জন্য প্রস্তুত।
কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অশোক গেহলট বলেছেন যে, জোটের লড়াই কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং দুর্নীতিগ্রস্ত এবং পিছিয়ে পড়া ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যা বিহারকে পিছিয়ে রেখেছে। তিনি আরও স্পষ্ট করেছেন যে, কংগ্রেস সব পরিস্থিতিতে জোটের পাশে থাকবে।
মালের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেছেন যে, মহাজোট দরিদ্র, কৃষক, যুবক এবং শ্রমিকদের কণ্ঠস্বর। তিনি বলেন যে, এনডিএ কেবল কর্পোরেট এবং ঠিকাদারদের রাজনীতি করে।
তেজস্বী যাদবের নির্বাচনী বার্তা
মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষিত হওয়ার পর তেজস্বী যাদব বলেছেন যে, তার মূল উদ্দেশ্য বিহারকে বেকারত্ব, পলায়ন এবং দুর্নীতিমুক্ত করা। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, যুবকরা সুযোগ পাবে, কৃষকরা সম্মান পাবে এবং দরিদ্ররা তাদের অধিকার পাবে।
তেজস্বী বলেছেন যে, মহাজোট কেবল একটি রাজনৈতিক জোট নয়, বরং বিহারের ভবিষ্যতের একটি সম্মিলিত রূপকল্প। যদি জোট সরকার গঠিত হয়, তাহলে প্রতিটি জেলায় শিল্প, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি ২০ বছর ধরে চলে আসা ডাবল ইঞ্জিন সরকারের নীতির উপর প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন যে, এনডিএ বিহারে উন্নয়নের পরিবর্তে কেবল ঘোষণা ও স্লোগানের উপর মনোযোগ দিয়েছে।
মুকেশ সাহানির উপমুখ্যমন্ত্রী পদ
ভিআইপি সভাপতি মুকেশ সাহানিকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করা সামাজিক ও আঞ্চলিক ভারসাম্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সাহানি বলেছেন যে, রাজ্যে এখন কোনো সম্প্রদায় অবহেলিত বোধ করবে না।
তিনি আরও বলেছেন যে, জোটের লক্ষ্য হল সকল শ্রেণী ও সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে বিহারকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জোটের নির্বাচনী কৌশল
মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীদের নির্বাচন মহাজোটের কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তেজস্বী যাদবের জনপ্রিয়তা এবং তরুণ নেতৃত্ব ক্ষমতা জোটের শক্তি বাড়াতে পারে। মুকেশ সাহানির আঞ্চলিক ভারসাম্য জোটের ভেতরের মতপভেদ কমাতে সহায়ক হবে।
মহাজোট স্পষ্ট করেছে যে, রাজ্যে তাদের এজেন্ডা হবে উন্নয়ন, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করা, কৃষকদের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করা এবং দরিদ্রদের অধিকার নিশ্চিত করা তাদের অগ্রাধিকার হবে।
প্রতিটি জেলায় শিল্প ও শিক্ষার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। একই সাথে, অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা শক্তিশালী করা হবে।