বিহার নির্বাচন ২০২৫: কর্মসংস্থান, শিল্প ও নারীর ক্ষমতায়নে জোর দিয়ে এনডিএ-র ইশতেহার প্রকাশ

বিহার নির্বাচন ২০২৫: কর্মসংস্থান, শিল্প ও নারীর ক্ষমতায়নে জোর দিয়ে এনডিএ-র ইশতেহার প্রকাশ
সর্বশেষ আপডেট: 6 ঘণ্টা আগে

পাটনায় এনডিএ বিহার নির্বাচন ২০২৫-এর জন্য ইশতেহার প্রকাশ করেছে। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্প বিনিয়োগ, দক্ষতা উন্নয়ন, নারীর অংশগ্রহণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। নীতীশ কুমার এবং এনডিএ নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Bihar Election 2025: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আজ জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) তাদের যৌথ নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করতে চলেছে। এই ইশতেহারটি পাটনার হোটেল মৌরিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উপস্থিতিতে প্রকাশ করা হবে। অনুষ্ঠানটি সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে। এই সময় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-র চিরাগ পাসওয়ান, হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (এইচএএম)-র প্রধান জিতন রাম মাঝি এবং রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি (আরএলএসপি)-র সভাপতি উপেন্দ্র কুশওয়াহাও উপস্থিত থাকবেন।

এনডিএ নেতাদের মতে, এবারের ইশতেহার বিহারের মানুষের জন্য “বড় ঘোষণা” নিয়ে আসবে। এতে রাজ্যের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, শিল্প বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং অবকাঠামোকে শক্তিশালী করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।

কর্মসংস্থান ও শিল্প উন্নয়নে জোর

গত কয়েক বছর ধরে বিহারে বেকারত্ব একটি বড় নির্বাচনী ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এনডিএ এই চ্যালেঞ্জকে মাথায় রেখে তাদের সংকল্প পত্রে তরুণদের জন্য বড় কর্মসংস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করতে পারে। সরকার গঠিত হলে শিল্পাঞ্চল সম্প্রসারণ, স্টার্টআপদের উৎসাহ দেওয়া এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (MSMEs) জন্য সহজ ঋণ সুবিধার মতো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতে পারে।

এর পাশাপাশি কৃষিভিত্তিক শিল্পকে উৎসাহিত করার পরিকল্পনাও ইশতেহারের অংশ হতে পারে। নীতীশ কুমারের সরকার আগেও গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কৃষি খাতে বিনিয়োগের ওপর জোর দিয়েছে। এবার এনডিএ-এর কার্যসূচিতে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট, দুগ্ধ শিল্প এবং গ্রামীণ উদ্যোগগুলির উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত নীতিগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

নারী ও তরুণদের ওপর জোর

এনডিএ-এর ইশতেহার রাজ্যের নারী ও তরুণদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হবে। নারীদের জন্য আত্মনির্ভরশীলতা প্রকল্প, সুরক্ষা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান রাখা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আগেও নারী ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত অনেক প্রকল্প যেমন সাইকেল প্রকল্প, সংরক্ষণ এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী (Self Help Groups) কে উৎসাহিত করেছেন।

এবার আশা করা হচ্ছে যে, ইশতেহারে নারীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান প্রকল্প, দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি এবং নারী উদ্যোক্তাকে (Women Entrepreneurship) উৎসাহিত করার ঘোষণা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তরুণ প্রজন্মের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন 

এনডিএ-এর পক্ষ থেকে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, এবার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং দক্ষতা উন্নয়নের (Skill Development) ওপর জোর দেওয়া হবে। ইশতেহারে আইটি, হেলথকেয়ার, কৃষি এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি (Skill Training Programs) শুরু করার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে

বিহারের অবকাঠামোকে (Infrastructure) শক্তিশালী করার জন্যও ইশতেহারে অনেক প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে রাস্তা, সেতু, বিদ্যুৎ, সেচ এবং জল সরবরাহের মতো সুবিধার সম্প্রসারণের দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে। এছাড়াও, বিদেশী বিনিয়োগ (FDI) আকর্ষণ করার জন্য শিল্প নীতিতে সংস্কারের ঘোষণাও করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত

মহামারীর পর থেকে স্বাস্থ্য ক্ষেত্র নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা বেড়েছে। ইশতেহারে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান উন্নত করা, মেডিকেল কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ এলাকায় ডাক্তারদেরL उपलब्धता নিশ্চিত করার পদক্ষেপের ঘোষণা করা হতে পারে। এর পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা (Social Security) প্রকল্প, প্রবীণ পেনশন এবং প্রতিবন্ধী কল্যাণ সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিকে আরও শক্তিশালী করার দিকেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতে পারে।

মহাজোটের ইশতেহার আগেই প্রকাশিত

বিরোধী মহাজোট (আরজেডি, কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিআই(এমএল), সিপিআই(এম), এবং ভিআইপি) তাদের ইশতেহার আগেই প্রকাশ করেছে। ‘বিহার কা তেজস্বী প্রাণ’ (বিহারের তেজস্বী প্রাণ) নামে প্রকাশিত এই ইশতেহারে মহাজোট সরকার গঠনের ২০ দিনের মধ্যে প্রতিটি পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মহাজোট কর্মসংস্থান, সামাজিক ন্যায়বিচার, নারী ক্ষমতায়ন এবং কৃষকদের কল্যাণের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, তারা বিহারে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিক্ষা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেবে।

নির্বাচনের তারিখ এবং ফলাফল ঘোষণা

বিহার বিধানসভার ২৪৩টি আসনের জন্য ভোটগ্রহণ দুটি ধাপে হবে। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ ৬ নভেম্বর হবে, যেখানে ১২১টি আসনে ভোট নেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ ১১ নভেম্বর হবে। ভোট গণনা ১৪ নভেম্বর করা হবে এবং একই দিনে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

Leave a comment