বিহার সরকার ৭০,০০০ কোটি টাকা খরচ করেছে কিন্তু ইউটিলিটি সার্টিফিকেট দেয়নি। CAG রিপোর্টে আর্থিক কেলেঙ্কারি প্রকাশ। সরকারের জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
Bihar CAG Report: বিহার সরকারের বাজেট পরিচালনা নিয়ে কন্ট্রোলার এবং অডিটর জেনারেল (CAG)-এর রিপোর্ট বেশ কিছু গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ৭০,৮৭৭.৬১ কোটি টাকার ইউটিলিটি সার্টিফিকেট (Utilization Certificates) দিতে পারেনি। এর অর্থ হল, এত বিপুল পরিমাণ অর্থ কোন পরিকল্পনা বা উদ্দেশ্যে খরচ করা হয়েছে, তার কোনও স্পষ্ট প্রমাণ সরকারের কাছে নেই। এই পরিসংখ্যান ৩১ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত স্থিতির নিরিখে দেওয়া হয়েছে।
উন্নয়ন হার ভালো কিন্তু লক্ষ্য থেকে দূরে
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ২০২৩-২৪ সালে বিহারের উন্নয়ন হার ১৪.৪৭ শতাংশ ছিল, যা জাতীয় গড় থেকে বেশি। আগের আর্থিক বছর ২০২২-২৩ এ এই হার ছিল ১৫.৩০ শতাংশ। যদিও এই পতন সামান্য, তবে উদ্বেগের বিষয় হল রাজ্য ১৫তম অর্থ কমিশন দ্বারা নির্ধারিত আর্থিক লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
দায়বদ্ধতা ক্রমাগত বৃদ্ধি
রাজ্যের মোট দায়বদ্ধতাও দ্রুত বেড়েছে। ২০২৩-২৪ সালে বিহারের মোট দায়বদ্ধতা ৩,৯৮,৫৬০.৯৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১২.৩৪ শতাংশ বেশি। যদিও এই বৃদ্ধি নির্ধারিত সীমার মধ্যেই রয়েছে, তবে এটিকে রাজ্যের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বিপদ সংকেত হিসাবেও মনে করা যেতে পারে।
তৃতীয় ক্ষেত্রের বড় ভূমিকা
রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে (GSDP) তৃতীয় ক্ষেত্রের অবদান সবচেয়ে বেশি, ৫৭.০৬ শতাংশ। এই ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাঙ্কিং, পরিবহন এবং প্রশাসনিক পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত। এর পরে প্রাথমিক ক্ষেত্রের অবদান ২৪.২৩ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রের অবদান ১৮.১৬ শতাংশ। প্রাথমিক ক্ষেত্রে কৃষি, পশুপালন, বনবিদ্যা, মৎস্য এবং খনির মতো কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত।
রাজস্বে উন্নতি তবে ব্যয়ে ঢিলেঢালা ভাব
রাজ্য সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তি ২০২৩-২৪ সালে ১১.৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট রাজস্বে ২০,৬৫৯ কোটি টাকা বৃদ্ধি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে প্রাপ্ত ট্যাক্স শেয়ার ছাড়াও রাজ্যের নিজস্ব ট্যাক্স রাজস্ব এবং নন-ট্যাক্স রাজস্বে যথাক্রমে ৯.৮৭ শতাংশ এবং ২৫.১৪ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে।
অন্যদিকে, ব্যয়ের কথা বললে, বিহার সরকার মোট বাজেট ৩,২৬,২৩০.১২ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ২,৬০,৭১৮.০৭ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে, যা মোট বাজেটের মাত্র ৭৯.৯২ শতাংশ। এর অর্থ হল প্রায় ৬৫,৫১২.০৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে, কিন্তু সরকার এর মধ্যে মাত্র ২৩,৮৭৫.৫৫ কোটি টাকা সমর্পণ করেছে। এটি মোট সাশ্রয়ের মাত্র ৩৬.৪৪ শতাংশ।