ছত্তিশগড়ের বিজাপুরে নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদীদের ১৫ ফুট উঁচু একটি স্মারক ধ্বংস করে এক বড়সড় অভিযান চালিয়েছে। সিআরপিএফ-এর যৌথ দল জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে নকশাল প্রচারস্থলটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
বিজাপুর: ছত্তিশগড়ের নকশাল-প্রভাবিত বিজাপুর জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদীদের বিরুদ্ধে আরও একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মাওবাদীদের প্রচারস্থল এবং ভয়ের প্রতীক হয়ে ওঠা ১৫ ফুট উঁচু একটি স্মারক নিরাপত্তা বাহিনী গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এই স্মারকটি মাওবাদীরা গ্রামবাসীদের মধ্যে ভয় ছড়াতে এবং তাদের সংগঠনের আদর্শ প্রচার করতে তৈরি করেছিল।
বিজাপুরের জঙ্গলে নকশাল স্মারকের খোঁজ
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সিআরপিএফের ১৫৩তম এবং ১৬৮তম ব্যাটালিয়নের যৌথ দল বিজাপুরের গোটুমপল্লি গ্রাম এলাকায় এলাকা আধিপত্যের অভিযান চালাচ্ছিল। এই সময় নিরাপত্তা বাহিনী ঘন জঙ্গলে একটি বিশাল পাথরের মতো স্মারক দেখতে পায়, যার উপর নকশাল নেতাদের নাম খোদাই করা ছিল।
নিরাপত্তা বাহিনী অবিলম্বে এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং তদন্তে জানতে পারে যে এই স্মারকটি মাওবাদীদের হাতে নিহত সদস্যদের স্মরণে তৈরি করা হয়েছিল। এটি স্থানীয় গ্রামবাসীদের দিয়ে জোরপূর্বক শ্রম করিয়ে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে নকশালরা তাদের উপস্থিতির প্রভাব বজায় রাখতে পারে।
নিরাপত্তা বাহিনী ১৫ ফুট উঁচু কাঠামোটি উড়িয়ে দিল

নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্দেশে দলটি ঘটনাস্থলেই অভিযান শুরু করে। সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে স্মারকটিকে প্রথমে বিস্ফোরকের সাহায্যে দুর্বল করা হয় এবং তারপর বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সেই ১৫ ফুট উঁচু পাথরের কাঠামোটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। অভিযান চলাকালীন এলাকায় নকশালদের যেকোনো সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ সতর্ক অবস্থায় ছিল।
অপারেশনের পর নকশালদের মধ্যে চাঞ্চল্য
নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে এই স্মারকটি কেবল মাওবাদী শহীদদের স্মৃতিচিহ্নই ছিল না, বরং গ্রামবাসীদের জন্য ভয়ের প্রতীক ছিল। তারা এই স্মারকগুলির মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের মধ্যে তাদের সংগঠনের শক্তি এবং প্রভাবের বার্তা দিত।
এই অভিযানের পর নকশালদের মনোবল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তাদের মতে, এই অভিযান এই ইঙ্গিত দেয় যে এখন মাওবাদীদের নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে।
ঘন জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর সফল অভিযান
এই অভিযান ডিআরজি, তারেম থানা, সিআরপিএফ-১৫৩ এবং সিআরপিএফ-১৬৮-এর যৌথ দল দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। বিজাপুরের দুর্গম পাহাড়ি এবং ঘন জঙ্গলের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সাথে এই অপারেশনটি সম্পন্ন করেছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে এই অভিযানের ফলে কেবল নকশালদের কাছেই কঠোর বার্তা যায়নি, বরং গ্রামবাসীদের মধ্যেও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আস্থা বেড়েছে। প্রশাসন স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে আগামীতেও এ ধরনের সার্জিক্যাল অভিযান অব্যাহত থাকবে, যাতে বিজাপুর এবং এর আশপাশের এলাকাগুলিকে নকশাল প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা যায়।












