আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব নির্বাচন কমিশনের উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলে সরকারের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) পাটনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন যে, সরকার আজকেও ১০ লাখ মহিলার অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করছে।
পাটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর মাঝে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। এইবার নির্বাচনী বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে একটি বড় অভিযোগ — সরকার কর্তৃক নির্বাচনের মধ্যে ভোটারদের অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরের। আরজেডি (RJD) নেতা এবং প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) পাটনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)-এর উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন।
তেজস্বী বলেন যে, সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সময় মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ১০-১০ হাজার টাকা জমা দিচ্ছে, যা গণতন্ত্র এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিপন্থী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশনের নৈতিকতা কোথায় গেল? এমন কী জরুরি অবস্থা তৈরি হলো যে কাজ গত ২০ বছরে করা হয়নি, তা এখন নির্বাচনের মধ্যেই করা হচ্ছে?
সরকার প্রকাশ্যে ঘুষ দিচ্ছে — তেজস্বী যাদব
তেজস্বী যাদব অভিযোগ করেন যে, রাজ্য সরকার জনসাধারণকে প্রকাশ্যে ঘুষ দিচ্ছে। তিনি বলেন যে, ২৪ অক্টোবরও লক্ষ লক্ষ মহিলার অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করা হয়েছিল এবং ৩০ অক্টোবর আবার তা করা হয়েছে। তেজস্বী বলেন, এটি একটি ঋণ, যা সরকার পরে সুদসহ আদায় করবে। নির্বাচন কমিশন চুপ করে আছে, অথচ এটি স্পষ্টতই আচরণবিধির লঙ্ঘন।
তিনি আরও যোগ করেন যে, এই ধরনের কার্যকলাপ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার উপর প্রশ্ন তোলে। তাঁর বক্তব্য ছিল যে, যখন ভোটারদের নির্বাচনের মাঝে এইভাবে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়, তখন এটি ভোটকে প্রভাবিত করার একটি চেষ্টা।
বিহারকে বিহারের সন্তানই চালাবে

কথাবার্তা চলাকালীন তেজস্বী যাদব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও পাল্টা জবাব দেন। অমিত শাহ বলেছিলেন যে, বিহারে শিল্প ও কারখানা স্থাপনে জমির অভাব একটি বড় সমস্যা। তেজস্বী এর উপর কটাক্ষ করে বলেন,
'এই লোকদের কেবল গুজরাটে কারখানা স্থাপন করতে হবে এবং বিহার থেকে শুধু ভোট নিতে হবে। বিহারের জনগণ এখন জেগে উঠেছে এবং তাদের উচিত শিক্ষা দেবে। বিহারকে কোনো বহিরাগত নয়, বিহারের সন্তানই চালাবে।'
তিনি অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রের শাসন বিহারকে কেবল রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চায়, অথচ উন্নয়নের নামে কোনো সুনির্দিষ্ট কাজ করা হচ্ছে না।
ওবৈসির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া
সাংবাদিকদের দ্বারা ওবৈসির সেই মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে "মুসলমানদের কোনো দলকে ভোট দেওয়া উচিত নয়," তেজস্বী যাদব বলেন, আমরা কোনো ধর্ম বা শ্রেণীর বিরুদ্ধে নই। আমরা কেবল বিহারের উন্নয়নের কথা বলি। আমাদের লক্ষ্য হল বিহারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এটি বিহারকে নতুন দিকনির্দেশনা দেওয়ার সুযোগ। যদি এনডিএ আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে বিহার আরও পিছিয়ে যাবে।
বিহারের ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবার কয়েকটি কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব তরুণ, বেকারত্ব, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যকে মূল ইস্যু করে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছেন। অন্যদিকে, এনডিএ সরকার তাদের উন্নয়নমূলক কাজ এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পগুলি তুলে ধরছে।
 
                                                                        
                                                                             
                                                












