এলন মাস্কের চমকপ্রদ দাবি: ২০৩০ সালের মধ্যে রোবট নেবে মানুষের কাজের ভার, দূর হবে দারিদ্র্য!

এলন মাস্কের চমকপ্রদ দাবি: ২০৩০ সালের মধ্যে রোবট নেবে মানুষের কাজের ভার, দূর হবে দারিদ্র্য!

এলন মস্ক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি বড় বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে আগামী সময়ে মানুষের কাজ করার প্রয়োজন হবে না, কারণ রোবট সব কাজ সামলে নেবে। টেসলার অপটিমাস রোবট থেকে মস্কের আশা, এর ফলে বৈশ্বিক উৎপাদনশীলতা বাড়বে এবং দারিদ্র্য দূর করতে সাহায্য করবে। যদিও, বিশেষজ্ঞরা তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলেছেন।

Elon Musk Future Plan: টেসলা এবং স্পেসএক্সের সিইও এलन মস্ক দারিদ্র্য দূর করতে একটি হাই-টেক পরিকল্পনা পেশ করেছেন, যার অধীনে মানুষের কাজ করার প্রয়োজন পড়বে না। তাঁর বক্তব্য হলো, ভবিষ্যতে রোবট এত সক্ষম হবে যে তারা পণ্য ও পরিষেবার সমস্ত কাজ সামলে নেবে। মস্কের কোম্পানি টেসলা 2030 সালের মধ্যে 10 লক্ষ “অপটিমাস” রোবট মোতায়েন করার পরিকল্পনা করছে। তাঁর দাবি, এর ফলে উৎপাদনশীলতা 10 গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং প্রতিটি ব্যক্তি “ইউনিভার্সাল হাই ইনকাম” পাবে। যদিও, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দৃষ্টিভঙ্গিটি যতটা আকর্ষণীয়, ততটাই চ্যালেঞ্জিং।

ভবিষ্যতে মানুষের উপার্জনের প্রয়োজন থাকবে না

টেসলা এবং স্পেসএক্সের সিইও এलन মস্ক আবারও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি বড় বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য হলো, আগামী বছরগুলোতে মানুষের কাজ করার প্রয়োজন থাকবে না, কারণ রোবট সেই সব কাজ করবে যা আজ মানুষ করছে। মস্ক দারিদ্র্য দূর করতে একটি “হাই-টেক পরিকল্পনা” পেশ করেছেন, যার অধীনে মানুষ চাকরি না করেও “ইউনিভার্সাল হাই ইনকাম” (Universal High Income) পেতে পারবে। তিনি মনে করেন, যখন মেশিন এবং রোবট মানুষের শ্রমের স্থান নেবে, তখন প্রতিটি ব্যক্তি নিজের পছন্দ অনুযায়ী জীবন যাপনের স্বাধীনতা পাবে।

রোবট দ্বারা বাড়বে উৎপাদনশীলতা, কমবে দারিদ্র্য

এলন মস্কের মতে, ভবিষ্যতে বিশ্বজুড়ে রোবট পণ্য ও পরিষেবার সমস্ত কাজ সামলে নেবে। তাঁর কোম্পানি টেসলা ইতিমধ্যেই “অপটিমাস” নামক হিউম্যানয়েড রোবট নিয়ে কাজ করছে, যা মানুষের মতো চলাফেরা এবং কার্যক্ষমতা সম্পন্ন। মস্কের বক্তব্য, এই রোবট ক্লান্তিহীনভাবে এবং না থেমে কাজ করতে পারবে, যার ফলে বৈশ্বিক উৎপাদনশীলতা 10 গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পাবে।
এই বর্ধিত উৎপাদনশীলতার কারণে, মস্কের বিশ্বাস যে প্রতিটি মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলি সহজেই পূরণ করা যাবে এবং সমাজে দারিদ্র্য দূর হবে। তাঁর বক্তব্য হলো, এআই সফটওয়্যার এখন পর্যন্ত কেবল ডিজিটাল স্তরে উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে, কিন্তু যখন সেই একই এআই ভৌত জগতে শ্রমিকের কাজ করবে, তখন বিশ্বের অর্থনীতি সম্পূর্ণ বদলে যাবে।

2030 সালের মধ্যে 10 লক্ষ রোবট মোতায়েন করার পরিকল্পনা

মস্কের কোম্পানি টেসলা অপটিমাস রোবটের প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। পরিকল্পনা রয়েছে যে 2030 সালের মধ্যে প্রায় 10 লক্ষ রোবট তৈরি করে বিশ্বের বিভিন্ন সেক্টরে সেগুলিকে মোতায়েন করা হবে। এই রোবটগুলি কারখানা, ওয়ার্কশপ, ডেলিভারি পরিষেবা এবং এমনকি স্বাস্থ্যসেবা সেক্টরেও কাজ করতে পারবে।
যদিও, বর্তমানে এই প্রকল্পটি বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আপাতত অপটিমাস শুধুমাত্র কিছু মৌলিক কাজ করতে সক্ষম। এর সত্ত্বেও, মস্কের আশা যে আগামী দশকে রোবটগুলি মানুষের সাথে একসঙ্গে কাজ করবে এবং তারপরে ধীরে ধীরে তাদের সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপন করবে।

মস্কের পরিকল্পনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ও সমালোচনা

যেখানে মস্কের এই পরিকল্পনাকে কিছু লোক ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা বলছেন, সেখানে অনেক অর্থনীতিবিদ এবং প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এর সমালোচনা করছেন। তাদের বক্তব্য, মানুষকে রোবট দিয়ে প্রতিস্থাপন করা এত সহজ নয় এবং এর ফলে সামাজিক অসমতা আরও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের যুক্তি হলো, অটোমেশনের ফলে তারাই বেশি ধনী হবে যাদের কাছে মেশিন ও প্রযুক্তির প্রবেশাধিকার রয়েছে। অন্যদিকে, “ইউনিভার্সাল হাই ইনকাম” বাস্তবায়নের জন্য যে তহবিলের প্রয়োজন, তার ব্যবস্থা এবং সরকারের অনুমোদন পাওয়া নিজেই একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। অনেক দেশে এই ধরনের নীতির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিরোধিতা হতে পারে।

ভবিষ্যতের রোবট নিয়েও প্রশ্ন

টেসলার অপটিমাস রোবটকে নিয়েও অনেক প্রযুক্তিগত প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনও এটি নিশ্চিত নয় যে এই রোবটগুলি মানুষের নিরাপত্তা এবং নৈতিক মানদণ্ডে কতটা উত্তীর্ণ হবে। বর্তমানে এই রোবটের প্রোটোটাইপ খুব সীমিত কাজ করতে পারছে, যেমন জিনিস তোলা বা হাঁটা।
বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, এই ধরনের রোবট তখনই বড় আকারে কার্যকর প্রমাণিত হবে যখন তারা জটিল সিদ্ধান্ত নিতেও সক্ষম হবে। বর্তমানে প্রযুক্তি সেই স্তরে পৌঁছায়নি। তাই মস্কের এই দৃষ্টিভঙ্গি যতই আকর্ষণীয় মনে হোক না কেন, এটি বাস্তবে রূপ নিতে এখনও অনেক বছর সময় লাগতে পারে।

রোবট কি সত্যিই মানুষের জায়গা নেবে?

এলন মস্কের হাই-টেক পরিকল্পনাটি আগামীর একটি ঝলক অবশ্যই দেয়, কিন্তু এটিও সত্য যে এই ধরনের প্রযুক্তি গ্রহণ করতে অনেক সামাজিক ও নৈতিক চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে। যদি রোবট সত্যিই মানুষের জায়গা নিতে শুরু করে, তাহলে বিশ্বের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের পুরো কাঠামোই বদলে যেতে পারে।
প্রযুক্তির এই গতি বিবেচনা করে আগামী দশকে অনেক কিছুই সম্ভব, তবে তার প্রভাব কতটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

Leave a comment