সারভাইক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধ: ক্যানসারের মারণ থাবা থেকে রেহাই পেতে নারীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসক ড: তরঙ্গ কৃষ্ণ জানিয়েছেন, পিরিয়ডস শেষে একটি সহজ টেস্ট— পেপ স্মিয়ার টেস্ট— করালে প্রাথমিক পর্যায়েই সারভাইক্যাল ক্যানসারের ঝুঁকি শনাক্ত করা যায়। তাঁর মতে, নিয়মিত এই টেস্ট করালে মহিলাদের মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সারভাইক্যাল ক্যানসার মহিলাদের মধ্যে চতুর্থ সর্বাধিক প্রাণঘাতী ক্যানসার।

সারভাইক্যাল ক্যানসারে বাড়ছে উদ্বেগ
দেশে ও বিদেশে দ্রুত বেড়ে চলেছে সারভাইক্যাল ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতি বছর হাজার হাজার মহিলার মৃত্যু ঘটছে এই মারণ রোগে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে মোট ক্যানসারে মৃত্যুর ৬–২৯ শতাংশই সারভাইক্যাল ক্যানসারের কারণে। চিকিৎসকদের মতে, প্রাথমিক স্তরে শনাক্তকরণই এই রোগ প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।
পিরিয়ডস শেষে করান পেপ স্মিয়ার টেস্ট
চিকিৎসক ড: তরঙ্গ কৃষ্ণর মতে, পিরিয়ডস বা ঋতুচক্রের শেষের পর পেপ স্মিয়ার টেস্ট করানো সবচেয়ে কার্যকর। এই সময় জরায়ুর গ্রীবা পরিষ্কার থাকে, ফলে কোষ পরীক্ষা আরও নির্ভুলভাবে করা যায়। তাঁর মতে, সঠিক সময়ে এই টেস্ট করালে প্রতি বছর হাজার হাজার মহিলার প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।

কীভাবে করা হয় এই টেস্ট?
পেপ স্মিয়ার টেস্ট-এ জরায়ুর গ্রীবা থেকে সামান্য কোষ সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে তার পরিবর্তন পরীক্ষা করা হয়। প্রক্রিয়াটি কিছুটা অস্বস্তিকর হলেও ব্যথাহীন এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ১০ মিনিটেরও কম সময়ে সম্পন্ন হয় এবং এতে দীর্ঘমেয়াদি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না।

কত বার করানো উচিত পেপ টেস্ট?
আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির নির্দেশ অনুসারে, ২৫ বছর বয়সের পর থেকে প্রত্যেক মহিলার প্রতি ৫ বছরে একবার পেপ স্মিয়ার টেস্ট করানো উচিত। বিশেষ করে যৌন সক্রিয় মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি একটি বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য রুটিন হওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত এই পরীক্ষা করালে ক্যানসার কোষের উপস্থিতি আগেভাগেই ধরা পড়ে এবং চিকিৎসা শুরু করা যায়।
নিয়মিত পরীক্ষায় কমবে মৃত্যুহার
ড: তরঙ্গ কৃষ্ণর মতে, যদি মহিলারা এই টেস্টকে রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ করেন, তবে সারভাইক্যাল ক্যানসারের প্রভাব ৫০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পাবে। এতে শুধু মৃত্যুহারই নয়, চিকিৎসা খরচও অনেকটা কমবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সচেতনতা এবং নিয়মিত চেকআপই এই মারণ রোগ নির্মূলের একমাত্র উপায়।

সারভাইক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে ‘পেপ স্মিয়ার টেস্ট’। চিকিৎসক তরঙ্গ কৃষ্ণ জানিয়েছেন, মাসিক শেষে এই টেস্ট করালে রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্তকরণ সম্ভব। প্রতি ৫ বছরে একবার এই টেস্ট করালে মারণ ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমে যায়।
 
                                                                        
                                                                             
                                                












