চিতাওয়াতে সঙ্গীত খুনের তদন্তে নতুন মোড়: স্বামী সহ শ্বশুরও গ্রেপ্তার, ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ জারি

চিতাওয়াতে সঙ্গীত খুনের তদন্তে নতুন মোড়: স্বামী সহ শ্বশুরও গ্রেপ্তার, ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ জারি

চিতাওয়াতে সঙ্গীত খুনের ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ল স্বামী সুভাশের পর শ্বশুর গোপালরাম। পণ মৃত্যু সংক্রান্ত মামলাটি এখনও তদন্তাধীন এবং থানার বাইরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ তৃতীয় দিনেও জারি রয়েছে।

চিতাওয়া: রাজস্থানের লালাস গ্রামের সঙ্গীত খুনের ঘটনায় চিতাওয়া পুলিশ এক নতুন মোড় নিয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত এবং মৃতার স্বামী সুভাশ গ্রেপ্তার হওয়ার পর এবার পুলিশ শ্বশুর গোপালরামকেও হেফাজতে নিয়েছে। অন্যদিকে, এই মামলায় পণ মৃত্যুর প্রতিবাদে থানায় বাইরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ তৃতীয় দিনেও জারি রয়েছে। পরিবার ও গ্রামবাসীরা ন্যায়বিচারের দাবিতে পুলিশ প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন।

বিবাহের পর শুরু হয় পণ নির্যাতন

সঙ্গীতের বিয়ে হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সুভাশ পুত্র গোপালরামের সঙ্গে। বিয়ের পরপরই শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে পণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা এবং একটি চার চাকার গাড়ির দাবি শুরু হয়। পরিবার সূত্রে অভিযোগ, স্বামী সুভাশ, শাশুড়ি সন্তোষ দেবী এবং ননদ সরিতা ক্রমাগত সঙ্গীতকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন।

বিয়ের পর থেকেই সঙ্গীতের উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, পণ-এর দাবি পূরণ না করলে সুভাশ মারধর করত, গালিগালাজ করত এবং প্রাণনাশের হুমকি দিত। কখনও কখনও তাকে অন্য বিয়ে করারও হুমকি দেওয়া হত। এই নির্যাতনই সঙ্গীতের জীবনকে কঠিন এবং অসহনীয় করে তুলছিল।

খুনিদের গ্রেপ্তার

২০ আগস্ট রাতে পরিবার খবর পায় যে সঙ্গীতের মৃত্যু হয়েছে। তারা শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছলে, দেখতে পায় সঙ্গীতের মৃতদেহ বাজরা ক্ষেতে পড়ে রয়েছে। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এটিকে আত্মহত্যা প্রমাণ করার জন্য ফাঁসি দেওয়ার নাটক করেছিল। ঘটনার রিপোর্ট পেয়ে পুলিশ ৩০৪ বি (পণ মৃত্যু) ধারায় মামলা দায়ের করে এবং তদন্ত শুরু করে।

এই মামলায় ইতিমধ্যেই স্বামী সুভাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার পুলিশ শ্বশুর গোপালরামকেও হেফাজতে নিয়েছে। পুলিশ তদন্ত দ্রুত করছে এবং খুনের ঘটনায় আর কে জড়িত ছিল তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ন্যায়ের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ

এই মামলায় ন্যায়বিচারের দাবিতে চিতাওয়া থানার বাইরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ তৃতীয় দিনেও জারি রয়েছে। বিপুল সংখ্যক গ্রামবাসী, পরিবার এবং যুব নেতারা বিক্ষোভ স্থলে উপস্থিত রয়েছেন। সোমবার প্রাক্তন বিধায়ক মহেন্দ্র চৌধুরী এবং মঙ্গলবার যুব নেতা রামনিবাস পোশক বিক্ষোভ স্থলে পৌঁছে জনগণকে সম্বোধন করেন।

বিক্ষোভ স্থলে সাংসদ হনুমান বেনিওয়ালও প্রবেশ করেন। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং একটি নতুন সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। জনগণ এবং পরিবার তাঁর নেতৃত্বে ন্যায়বিচারের দাবি আরও শক্তিশালী করতে जुटेছে।

পরিবার এবং গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদ জারি

চিতাওয়া পুলিশ জানিয়েছে যে প্রধান অভিযুক্ত স্বামী এবং এখন শ্বশুর গ্রেপ্তার হওয়ার পর তদন্ত আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন পুরো মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সক্রিয় রয়েছে। তদন্ত চলাকালীন মৃতার পরিবার এবং গ্রামবাসীদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ স্থানীয় জনগণকে অনুরোধ করেছে যে কোনো গুজবে কান না দিয়ে মামলায় সহযোগিতা করুন। প্রশাসন আরও জানিয়েছে যে গ্রেপ্তার এবং তদন্ত সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া মেনে করা হচ্ছে, যাতে দোষীদের শাস্তি দেওয়া যায়।

Leave a comment