রক্তে ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে কিডনি রক্ষায় মানুন এই ঘরোয়া উপায়

রক্তে ক্রিয়েটিনিন বেড়েছে কিডনি রক্ষায় মানুন এই ঘরোয়া উপায়

শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কিডনির কার্যক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ সূচক। এই বর্জ্য পদার্থের মাত্রা বেশি হলে কিডনির উপর চাপ বাড়ে, যা দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সাধারণ অভ্যাস ও খাদ্য পরিবর্তনেই এই মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ক্রিয়েটিনিন—পেশির ব্যবহারে তৈরি বর্জ্য পদার্থ

পেশির শক্তি উৎপাদনের সময় স্বাভাবিকভাবেই ক্রিয়েটিনিন তৈরি হয়। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ, বিশেষত রান্না করা রেড মিট, এই বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। রক্তে এর মাত্রা বেশি হলে সতর্ক হওয়া জরুরি।

কিডনির প্রধান কাজ—দেহের ছাঁকনি

কিডনি শরীরের ছাঁকনি হিসেবে কাজ করে, বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয়। এই অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্রিয়েটিনিন জমে শরীরে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। তাই কিডনির সুস্থতা বজায় রাখা অপরিহার্য।

ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা কত

পুরুষের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ক্রিয়েটিনিন 0.74 থেকে 1.35 mg/dL, মহিলাদের ক্ষেত্রে 0.59 থেকে 1.04 mg/dL। বয়স, ওজন ও শারীরিক গঠন এই সীমায় প্রভাব ফেলে। মাত্রা বেশি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কেন বাড়ে ক্রিয়েটিনিন

কিডনির সংক্রমণ, দীর্ঘস্থায়ী রোগ, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া—সব মিলিয়ে রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ ঘনঘন খেলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।কম প্রোটিন—বিশেষত রেড মিট এড়িয়ে চলুনগবেষণা বলছে, রান্না করা রেড মিটে থাকা ক্রিয়েটিন ক্রিয়েটিনিনে পরিণত হয়। তাই খাদ্যতালিকা থেকে রেড মিট কমিয়ে দিন। পরিবর্তে শাকসবজির স্যুপ, ডালের স্ট্যু রাখুন যা হজমে সহজ এবং কিডনির জন্য ভালো।ফাইবারে ভরপুর খাবার খানবেশি ফাইবার রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই ডায়েটে ফল, সবজি ও দানাশস্যের পরিমাণ বাড়ান। এগুলি কিডনির উপর চাপ না দিয়ে শরীরের টক্সিন কমাতে সাহায্য করে।

জল—কিন্তু মেপে খান

ডিহাইড্রেশনে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যেতে পারে, কিন্তু কিডনি রোগীদের অতিরিক্ত জলও বিপজ্জনক। তাই দিনের জলপানের পরিমাণ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক করুন।

সোডিয়াম কমিয়ে দিন

অতিরিক্ত নুন রক্তচাপ বাড়ায় ও কিডনির উপর চাপ ফেলে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত স্ন্যাকস এড়িয়ে চলুন। এগুলিতে সোডিয়াম ও ফসফরাসের পরিমাণ বেশি থাকে।

ক্ষতিকর ওষুধ ও নেশা থেকে দূরে থাকুন

NSAIDs জাতীয় পেইনকিলার বেশি খেলে কিডনির ক্ষতি হয়। ধূমপান কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। মদ্যপান কম পরিমাণে কিছু ক্ষেত্রে উপকারী হলেও অতিরিক্ত পান মারাত্মক ক্ষতিকর।চূড়ান্ত পরামর্শ—ডায়েটে পরিবর্তন আনুনরেড মিট বাদ দিয়ে ফল, শাকসবজি, উচ্চ ফাইবার খাবার বাড়ান। এতে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কমবে ও কিডনির কার্যক্ষমতা সুরক্ষিত থাকবে।

Leave a comment