ওয়াইসির সীমাঞ্চল সফর: মহাজোটের মুসলিম ভোটব্যাংকে ফাটল ধরাতে তৎপর?

ওয়াইসির সীমাঞ্চল সফর: মহাজোটের মুসলিম ভোটব্যাংকে ফাটল ধরাতে তৎপর?

এআইএমআইএম সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সীমাঞ্চলে চার দিনের সফরে। কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া এবং পূর্ণিয়ায় জনসভা, রোড শো। আরজেডি এবং মহাজোটের প্রতি কটাক্ষ, মুসলিম ভোটব্যাংককে সক্রিয় করার চেষ্টা।

New Delhi: এআইএমআইএম-এর জাতীয় সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সীমাঞ্চলে চার দিনের সফরে পৌঁছেছেন। তাঁর এই সফর রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছে। ওয়াইসি মহাজোট এবং বিজেপি উভয়কেই নিশানা করছেন। তাঁর প্রধান লক্ষ্য আরজেডি, যাদের বিরুদ্ধে তিনি জোট না করার অভিযোগ তুলছেন।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় জনসভা এবং রোড শো

ওয়াইসি তাঁর সফরে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় জনসভা এবং রোড শো করছেন। কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া এবং পূর্ণিয়া জেলার চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর দলের আলোচনা তুঙ্গে। সব জায়গায় বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হচ্ছেন। অনেকেই টিকিট পাওয়ার আশায় ওয়াইসির কাছে নিজেদের উপস্থাপন করছেন।

আরজেডি-র প্রতি কটাক্ষ এবং মহাজোটকে বার্তা

ওয়াইসি ক্রমাগত আরজেডি এবং মহাজোটকে নিশানা করছেন। ২০২০ সালে পাঁচজন বিধায়কের মধ্যে চারজন আরজেডিতে যোগ দিয়েছিলেন, এ নিয়ে তিনি কটাক্ষ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, জোটের প্রস্তাব তাঁর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি এও কটাক্ষ করেছেন যে হরিয়ানা থেকে বিহারে এনে রাজ্যসভার সদস্য বানানো হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন করে না।

সব জাতির নেতা হতে পারে, মুসলমান কেন নয়

ওয়াইসি তাঁর জনসভায় এও বলেছেন যে, যদি প্রতিটি জাতির নেতা হতে পারে, তাহলে মুসলমান কেন নয়। তাঁর এই বার্তা মুসলিম ভোটব্যাংককে সক্রিয় করার উদ্দেশ্যে। ওয়াইসি সীমাঞ্চলের দুরবস্থা, সমাজের অগ্রগতি এবং দুর্নীতি নিয়েও আলোচনা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, মুসলিম সমাজের কণ্ঠকে রাজনৈতিক মঞ্চে শক্তিশালী করা হবে।

মহাজোটের জন্য চ্যালেঞ্জ

ওয়াইসির সফর মহাজোটের জন্য উদ্বেগ বাড়াতে পারে। কিষাণগঞ্জ, আরারিয়া এবং পূর্ণিয়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় তাঁর দাবি মহাজোটের ভোটব্যাংককে প্রভাবিত করতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে মুসলিম ভোটের বিভাজন মহাজোটের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

২০২০ সালের নির্বাচনে এআইএমআইএম-এর অবস্থান

২০২০ সালে সীমাঞ্চলের ১৪টি আসনে এআইএমআইএম প্রার্থী দিয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচটি আসনে জয়লাভ হয়েছিল। আমৌর, বাহাদুরগঞ্জ, জোকিহাট, বাইসি এবং কোচাথামন আসনগুলি দল জিতেছিল। কিষাণগঞ্জ জেলায় যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা ৬৮ শতাংশ, সেখানে দল দুটি আসনে জয়ী হয়েছিল। আরারিয়া জেলায় মুসলিম জনসংখ্যা ৪৩ শতাংশ, এবং এখানে ছয়টির মধ্যে একটি আসনে এআইএমআইএম জয় পেয়েছিল।

উপনির্বাচনে ভোটের বিভাজন

একটি উপনির্বাচনে রানীগঞ্জ আসনে এআইএমআইএম প্রার্থীর কারণে মহাজোটকে হারের মুখে পড়তে হয়েছিল। গোপালগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে ওয়াইসির প্রার্থী ১২ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন, যার ফলে আরজেডি প্রায় দুই হাজার ভোটে হেরে যায়।

Leave a comment