দেবশয়নী একাদশীর ব্রত ভাঙলে কী করবেন: নিয়ম ও প্রতিকার

দেবশয়নী একাদশীর ব্রত ভাঙলে কী করবেন: নিয়ম ও প্রতিকার

হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীকে দেবশয়নী একাদশী বলা হয়। এই তিথি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই দিন থেকেই ভগবান বিষ্ণু চার মাসের জন্য যোগনিদ্রায় চলে যান। এই কারণে, এই দিনের ব্রত ও পূজা অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলে মনে করা হয়।

এই বছর দেবশয়নী একাদশী ৬ জুলাই, ২০২৫ তারিখে পালিত হবে। এই দিনে ব্রত পালনকারী ভক্তগণ সারাদিন উপবাস, ভক্তি এবং বিষ্ণু নাম স্মরণ করেন। তবে অনেক সময়, অজান্তে এমন কিছু ঘটে যা ব্রতকে ভেঙে দেয়। এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন।

আসুন জেনে নেওয়া যাক, যদি দেবশয়নী একাদশীর ব্রত ভুলবশত ভেঙে যায়, তাহলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কী করা উচিত।

কখন পালিত হবে দেবশয়নী একাদশী?

পঞ্জিকা অনুসারে, আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথি ৫ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৫৮ মিনিটে শুরু হয়ে ৬ জুলাই রাত ৯টা ১৪ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। হিন্দু ধর্মে উদয়া তিথিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাই এই বছর দেবশয়নী একাদশী ৬ জুলাই পালিত হবে।

কেন দেবশয়নী একাদশী বিশেষ?

দেবশয়নী একাদশীর গুরুত্ব আরও বেশি, কারণ এই দিন থেকেই চাতুর্মাস শুরু হয়। চাতুর্মাসে ভগবান বিষ্ণু ক্ষীর সাগরে যোগনিদ্রায় যান। এই সময়ে বিবাহ, মুণ্ডন, গৃহপ্রবেশের মতো শুভ কাজগুলি বন্ধ থাকে।

ব্রত পালনকারীরা এই দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করেন, ব্রতের সংকল্প করেন এবং শ্রী হরি বিষ্ণুর পূজা করেন। সারাদিন ব্রত পালন করা হয় এবং রাতে জাগরণ ও ভজন-কীর্তন করা হয়।

যদি ভুল করে ব্রত ভেঙে যায়, তাহলে কী করবেন?

যদি ভুলবশত কিছু খেয়ে ফেলা হয়, বা অনিচ্ছাকৃতভাবে জল পান করা হয়, যার ফলে ব্রত ভেঙে যায়, তাহলে শাস্ত্র অনুসারে কিছু বিশেষ উপায় বলা হয়েছে যা পালন করে ব্রতের দোষ দূর করা যেতে পারে।

প্রথমেই স্নান করুন

যদি ব্রত ভেঙে যায়, তাহলে প্রথমে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করুন এবং পুনরায় স্নান করুন। স্নান করলে শরীর ও মনের শুদ্ধি হয় বলে মনে করা হয়।

বিষ্ণু भगवानকে পঞ্চামৃত দিয়ে অভিষেক করুন

এরপর ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি বা ছবিতে পঞ্চামৃত (দুধ, দই, ঘি, মধু এবং চিনি) দিয়ে স্নান করান। এই অভিষেক একটি শুদ্ধ ও পবিত্র পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক।

ষোড়শোপচার পূজা করুন

এরপরে ভগবান বিষ্ণুর বিধি অনুসারে পূজা করুন। ধূপ, দীপ, ফুল, চন্দন, অক্ষত, তুলসী পাতা এবং ভোগ নিবেদন করুন। পূজার সময় বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ বা বিষ্ণু চালিশা পাঠ করাও উপকারী।

ক্ষমা প্রার্থনার বিশেষ মন্ত্র

পূজার শেষে ভগবানের কাছে ক্ষমা চাওয়া খুব জরুরি। এর জন্য শাস্ত্রে একটি বিশেষ মন্ত্র দেওয়া হয়েছে, যা শ্রদ্ধার সঙ্গে জপ করলে ভুলের জন্য ক্ষমা পাওয়ার আশীর্বাদ পাওয়া যায়:

আবাহনং ন জানামি ন জানামি বিসর্জনম্।
পূজাং চৈব ন জানামি ক্ষমস্ব পরমেশ্বর॥
মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং ভক্তিহীনং জনার্দন।
যৎপূজিতং ময়া দেব! পরিপূর্ণং তদস্তু মে॥

এই মন্ত্রটি পূজা স্থানে বসে, হাত জোড় করে, শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করতে হবে।

বিষ্ণু মন্ত্র জপ করুন

যদি সম্ভব হয়, তবে তুলসীর মালা নিয়ে বিষ্ণু জীর দ্বাদশাক্ষর মন্ত্র জপ করুন। এই মন্ত্রটি হল:

ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়

কমপক্ষে এক মালা, অর্থাৎ ১০৮ বার এই মন্ত্র জপ করলে মন শান্ত হয় এবং পূ

Leave a comment