গভীর প্রযুক্তি স্টার্টআপকে শক্তিশালী করতে সরকারের নতুন পদক্ষেপ

গভীর প্রযুক্তি স্টার্টআপকে শক্তিশালী করতে সরকারের নতুন পদক্ষেপ

সরকার গভীর প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলিকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ঘোষণা করেছেন যে সরকার "ফান্ড অফ ফান্ডস" স্কিমের অধীনে অতিরিক্ত ১০,০০০ কোটি টাকা সরবরাহ করবে।

কেন্দ্র সরকার দেশে গভীর প্রযুক্তি (deep technology) নির্ভর স্টার্টআপগুলিকে শক্তিশালী করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন যে, সরকার ফান্ড অফ ফান্ডস স্কিমের অধীনে অতিরিক্ত ১০,০০০ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে। এই অর্থের ব্যবহার বিশেষভাবে গভীর প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে (deep tech sector) উৎসাহিত করতে করা হবে। এর আগে ২০২৩-২৪ বাজেটেও সরকার ১০,০০০ কোটি টাকার প্রথম কিস্তি দিয়েছিল, যা ইতিমধ্যে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়েছে।

বেঙ্গালুরুতে ঘোষণা, আইআইটি মাদ্রাজ-এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার কথা বেঙ্গালুরুতে জানানো হয়, যেখানে আইআইটি মাদ্রাজ এবং তার প্রাক্তন ছাত্র সংগঠন একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এই অনুষ্ঠানে পীযূষ গোয়েল বলেন যে, সরকার গভীর প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্রুত কাজ করছে এবং এই নতুন তহবিল ভারতকে প্রযুক্তিগতভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

নতুন প্রযুক্তিগুলিকে সমর্থন

এই তহবিল নতুন এবং উদ্ভূত প্রযুক্তিগুলির বিকাশে সহায়তা করবে। এর অধীনে সেমিকন্ডাক্টর, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, গ্রিন এনার্জি, ড্রোন প্রযুক্তি, রোবোটিক্স, বায়োটেকনোলজি, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির উপর জোর দেওয়া হবে। সরকার এই ক্ষেত্রগুলিতে উদ্ভাবন এবং গবেষণা (innovation and research) বাড়ানোর জন্য নীতি-ভিত্তিক সহায়তা প্রদান করবে।

নির্দেশিকাগুলির উপর কাজ চলছে, শীঘ্রই শুরু হবে

পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন যে, এই তহবিলের জন্য নির্দেশিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং শীঘ্রই এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হবে। এই প্রকল্পের অধীনে, স্টার্টআপগুলিকে গবেষণা, উদ্ভাবন এবং প্রোটোটাইপ ডেভেলপমেন্টের জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। বিশেষ বিষয় হল, এইবার তহবিলের একটি বড় অংশ বিশেষভাবে গভীর প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলির জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে।

বেসরকারি খাতের অংশগ্রহন নিয়ে প্রশ্ন

তবে, এই পুরো প্রচেষ্টার মধ্যে, বেসরকারি সংস্থাগুলির গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D)-এ কম অংশগ্রহন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। সরকার স্পষ্ট করেছে যে, তারা গভীর প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি খাতকেও এই প্রকল্পে যুক্ত করার চেষ্টা করছে।

#100DesiDeepTechs: একটি নতুন উদ্যোগের সূচনা

তহবিলের ঘোষণার পাশাপাশি, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ শুরু করা হয়েছে, যার নাম #100DesiDeepTechs। এটি একটি বহু-অংশীদারিত্বপূর্ণ (multi-stakeholder) প্রোগ্রাম, যা স্টার্টআপ ইন্ডিয়া, মেটি স্টার্টআপ হাব এবং আইআইটি মাদ্রাজ-এর সহযোগিতায় শুরু হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল দেশের ১০০টি শীর্ষস্থানীয় গভীর প্রযুক্তি স্টার্টআপকে চিহ্নিত করা এবং তাদের কৌশলগত সহায়তা প্রদান করা।

স্টার্টআপগুলি থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছে

এই উদ্যোগের অধীনে, সারা দেশের গভীর প্রযুক্তি স্টার্টআপগুলি থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। নির্বাচিত স্টার্টআপগুলি শিল্প বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে নীতি আলোচনায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। এই আলোচনার ভিত্তিতে একটি শ্বেতপত্র (white paper) তৈরি করা হবে, যেখানে প্রয়োজনীয় নিয়ম ও পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

'গভীর প্রযুক্তি বৈঠক'-এ শ্বেতপত্রের প্রকাশ

শীঘ্রই 'গভীর প্রযুক্তি বৈঠক' নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে, যেখানে এই পুরো উদ্যোগের শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। এই অনুষ্ঠানে স্টার্টআপ পলিসি ফোরামের গভীর প্রযুক্তি নীতি গবেষণা কেন্দ্রও চালু করা হবে, যা এই ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ কৌশলগুলির উপর কাজ করবে।

গভীর প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ছে, রিপোর্ট থেকে উঠে এল তথ্য

সম্প্রতি ন্যাসকম এবং জেনোভ-এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে গভীর প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। এই সংখ্যাটি এখন ১.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সরকারের সহায়ক নীতি, জেনারেটিভ এআই-এর মতো প্রযুক্তিগুলির দ্রুত অগ্রগতি এবং স্টার্টআপগুলির উদ্ভাবন এই বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

ভারত প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে

অনুষ্ঠানে পীযূষ গোয়েল আরও বলেন যে, ভারত প্রযুক্তিগতভাবে খুব দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বিশ্বের বড় দেশগুলি যখন মন্দা ও বাণিজ্যের শ্লথতা নিয়ে লড়ছে, তখন ভারত নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করে উন্নয়নের পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলেছে।

Leave a comment