প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একটি নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যা আগামী ১৫ বছরে প্রতিরক্ষা খাতের উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই পরিকল্পনায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, স্টেলথ বোমারু ড্রোন, এআই চালিত অস্ত্র, হাই-পাওয়ার লেজার এবং পারমাণবিক শক্তি চালিত যুদ্ধজাহাজ সহ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নয়াদিল্লি: ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আগামী ১৫ বছরে দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা জারি করেছে। এই পরিকল্পনায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, স্টেলথ বোমারু ড্রোন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চালিত অস্ত্র, হাই-পাওয়ার লেজার এবং পারমাণবিক শক্তি চালিত যুদ্ধজাহাজ সহ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর লক্ষ্য হল ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ভবিষ্যতের হুমকির জন্য প্রস্তুত করা এবং দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলা।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য প্রধান অস্ত্র ও প্রযুক্তি
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ১৪ লক্ষের বেশি সৈন্য রয়েছে। তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য এই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এতে সেনাবাহিনীকে প্রায় ১৫০টি স্টেলথ মানববিহীন যুদ্ধবিমান এবং ৫০০টিরও বেশি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত দ্রুত গতিতে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে, যা আমাদের নিরাপত্তা সক্ষমতাকে উন্নত করবে।
মন্ত্রক জানিয়েছে যে এই পরিকল্পনা বেসরকারি শিল্পের জন্য গবেষণা ও উন্নয়নের সুযোগও প্রদান করবে। শিল্পগুলি উৎপাদন লাইন এবং অ্যাসেম্বলি স্থাপন করতে পারবে, যার ফলে অস্ত্র ও প্রযুক্তির সরবরাহ সময়মতো নিশ্চিত হবে। এই পরিকল্পনায় ২০০টিরও বেশি অস্ত্র ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নৌবাহিনীর আধুনিক চাহিদা
ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তত ১০টি পারমাণবিক শক্তি চালিত যুদ্ধজাহাজ প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি বিমানবাহী রণতরীও অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও, নৌবাহিনীর ২০টি উচ্চ-সহনশীলতা সম্পন্ন স্বায়ত্তশাসিত ডুবোযান (AUV) প্রয়োজন, যা সাবমেরিন সনাক্ত করতে এবং ধ্বংস করতে সক্ষম হবে। এই পদক্ষেপটি সমুদ্র সুরক্ষা এবং ভারতীয় জলসীমার প্রতিরক্ষা জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় স্থলবাহিনীর জন্য ১,৭০০-১,৮০০ পরবর্তী প্রজন্মের প্রধান যুদ্ধট্যাঙ্ক এবং পাহাড়ি যুদ্ধের জন্য ৪০০টি হালকা ট্যাঙ্ক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই পরিকল্পনা স্থলবাহিনীর গতি, শক্তি এবং কৌশলগত ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। অন্যদিকে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য ২০টি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক এয়ারশিপ (বেলুনের মতো বিমান) প্রয়োজন। এগুলি নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা হবে। এই পদক্ষেপে বিমান প্রতিরক্ষা এবং তথ্য সংগ্রহে ব্যাপক উন্নতি হবে।
নতুন পরিকল্পনায় এই বিষয়টির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে যে প্রতিরক্ষা উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি। অস্ত্র ও প্রযুক্তির নকশা, উন্নয়ন এবং নির্মাণ প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে আত্মনির্ভরশীলতা নিশ্চিত করা হবে। এর ফলে দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের সরবরাহের ক্ষেত্রে নির্ভরতা কমবে।