দিল্লিতে প্রাইভেট স্কুলগুলির ক্রমবর্ধমান এবং অনিয়ন্ত্রিত ফি নিয়ন্ত্রণে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ৪ আগস্ট থেকে বিধানসভার বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে, যেখানে এই বিষয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। জানা গেছে যে বিজেপি বিধায়ক রেখা গুপ্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করবেন, যার উদ্দেশ্য বেসরকারি স্কুলগুলির ইচ্ছামতো ফি আদায় নিয়ন্ত্রণ করা। এই প্রস্তাবিত আইনে এমন স্কুলগুলির উপর ভারী জরিমানা এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
দিল্লি বিধানসভার এই অধিবেশনটি সম্পূর্ণভাবে কাগজবিহীন হবে। এতে ন্যাশনাল ই-বিধান অ্যাপ্লিকেশন (NeVA) ব্যবহার করা হবে, যার মাধ্যমে কাজকর্ম এবং নথিগুলি ডিজিটালভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এই পদক্ষেপটি বিধানসভার কার্যপ্রণালীকে প্রযুক্তিগতভাবে আরও শক্তিশালী এবং স্বচ্ছ করার দিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা
সরকার এইবারের বাদল অধিবেশনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল এবং নীতি পেশ করতে পারে। সূত্র মারফত জানা গেছে, স্কুল ফি নির্ধারণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিলটি এই অধিবেশনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। ২৯ এপ্রিল দিল্লি মন্ত্রিসভা কর্তৃক অনুমোদিত অধ্যাদেশের ভিত্তিতে তৈরি করা এই বিলে বেসরকারি স্কুলের ফির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে কঠোর বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, এই বিলটি ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং বিরোধী আম আদমি পার্টির মধ্যে তীব্র বিতর্কের কারণ হতে পারে। যদিও সরকারের দাবি, এর উদ্দেশ্য শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
এইগুলি হবে প্রধান বিধান
সরকারের প্রস্তাবিত বিলে নিম্নলিখিত কঠোর বিধানগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
• প্রথমবার নিয়ম লঙ্ঘন করলে স্কুলগুলির উপর ₹১ লক্ষ থেকে ₹৫ লক্ষ পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।
• বারবার লঙ্ঘনকারীদের ক্ষেত্রে এই জরিমানা ₹২ লক্ষ থেকে ₹১০ লক্ষ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
• যদি স্কুল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত নেওয়া ফি ফেরত না দেয়, তবে ২০ দিন দেরি হলে জরিমানা দ্বিগুণ, ৪০ দিন দেরি হলে তিনগুণ এবং এর পরে প্রতি ২০ দিন দেরির জন্য জরিমানা বাড়তে থাকবে।
• নিয়মের ক্রমাগত লঙ্ঘনকারী পরিচালন আধিকারিকদের তাদের পদ থেকে সরানো হতে পারে এবং ভবিষ্যতে তাদের ফি সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়ার অধিকার থাকবে না।
দিল্লি সরকারের এই পদক্ষেপ শিক্ষা ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনার ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই বিলটি বিধানসভায় কীভাবে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে এবং কতটা রাজনৈতিক সমর্থন পায়।