জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফার পর কংগ্রেস তাঁর জন্য সম্মানজনক বিদায় অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে। সরকারের নীরবতা এবং প্রতিক্রিয়া না আসায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়ছে।
Dhankhar: উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের আকস্মিক ইস্তফার পর কংগ্রেস তাঁর সম্মানে একটি "বিদায় অনুষ্ঠান"-এর আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে। এই দাবি এমন সময় উঠেছে যখন সারা দেশে ধনখড়ের ইস্তফা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। বিরোধী পক্ষ এটিকে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যজনিত কারণে দেখছে না, বরং এর পিছনে রাজনৈতিক চাপ থাকার আশঙ্কাও প্রকাশ করা হচ্ছে।
বিএসি বৈঠকে উঠল দাবি, সরকার রইল নীরব
বুধবার সন্ধ্যায় কার্য মন্ত্রণা সমিতির (বিএসি - Business Advisory Committee) বৈঠকে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এই প্রস্তাব রাখেন যে ধনখড়কে তাঁর অবদানের জন্য সম্মানজনক বিদায় দেওয়া উচিত। বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা এবং কিরণ রিজিজু এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। সরকারের নীরবতাকে বিরোধী পক্ষ একটি অস্বাভাবিক আচরণ বলে মনে করছে। সূত্র অনুযায়ী, অন্য কোনো বিরোধী নেতা রমেশের এই দাবির খোলাখুলি সমর্থন করেননি, ফলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
কংগ্রেসের যুক্তি
কংগ্রেসের বিশ্বাস জগদীপ ধনখড় প্রায় তিন বছর ধরে উপরাষ্ট্রপতি পদে থেকে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এই কারণে তাঁকে একটি আনুষ্ঠানিক ও সম্মানজনক বিদায় দেওয়া উচিত। পার্টি নেতাদের বক্তব্য এই প্রকার বিদায় গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের অংশ হওয়া উচিত, বিশেষ করে যখন ধনখড় স্বেচ্ছায় পদ ছেড়েছেন।
ধনখড়ের ইস্তফা ও রাজনৈতিক জল্পনা
ধনখড় সোমবার হঠাৎ করে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি তাঁর ইস্তফার পিছনে স্বাস্থ্যজনিত কারণের কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তাঁর তরফ থেকে বিস্তারিত বিবৃতির অভাবে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর কার্যকালের মেয়াদ ছিল অগাস্ট ২০২৭ সাল পর্যন্ত। কংগ্রেস সহ অনেক বিরোধী দল এই ইস্তফাকে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের ভিতরের চাপের সঙ্গে যোগ করছে।
বিরোধীদের অভিযোগ: বিচারবিভাগীয় বিবাদই কি কারণ?
কংগ্রেস আরও একটি গুরুতর অভিযোগ করেছে যে ধনখড়কে সেই সময় ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে যখন তিনি বিরোধী সাংসদদের দ্বারা দায়ের করা একটি নোটিস গ্রহণ করেছিলেন। এই নোটিস বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে করা হয়েছিল। এই মামলায় ভার্মার আবাসন থেকে নোটের পোড়া বান্ডিল উদ্ধার হওয়ার তথ্য সামনে এসেছিল, যার ফলে এই বিবাদ আরও বেড়ে যায়। কংগ্রেসের বক্তব্য এই সিদ্ধান্ত সরকারের অপছন্দ হয়েছিল এবং ধনখড়ের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল।
রাজ্যসভায় চলছে বিদায়
এই পুরো ঘটনার মাঝে বৃহস্পতিবার রাজ্যসভা তাদের ছয় সদস্য - অম্বুমণি রামদাস, ভাইকো, পি উইলসন, এম ষণমুগম, এম মহম্মদ আব্দুল্লাহ এবং এন চন্দ্রশেখরনকে বিদায় জানাতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের এই প্রশ্ন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে যখন রাজ্যসভার সদস্যদের জন্য সম্মানজনক বিদায় হতে পারে, তখন উপরাষ্ট্রপতির মতো উচ্চ সাংবিধানিক পদে থাকা একজন ব্যক্তি কেন এই সম্মান পাবেন না?