২০২৭ সালে ডিজিটাল জনগণনা: নয়া পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করবে ভারত সরকার

২০২৭ সালে ডিজিটাল জনগণনা: নয়া পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করবে ভারত সরকার

ভারত সরকার ২০২৭ সালে প্রথম ডিজিটাল জনগণনা শুরু করবে। নাগরিকরা ওয়েব পোর্টাল থেকে নিজেরাই তাদের তথ্য নথিভুক্ত করতে পারবে। জাতিগত গণনাও এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে।

ডিজিটাল সেন্সাস: ভারত সরকার ২০২৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য জনগণনার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এবারের জনগণনা অনেক দিক থেকে বিশেষ হবে, কারণ এটি দেশের প্রথম ডিজিটাল জনগণনা হতে চলেছে। এতে নাগরিকরা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে নিজেদের তথ্য নথিভুক্ত করতে পারবে। এছাড়াও, জাতিগত তথ্যও এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সরকারের দাবি, প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ডেটা আরও নির্ভুল, সুরক্ষিত এবং দ্রুত পাওয়া যাবে।

প্রথমবার ডিজিটাল ও স্ব-গণনার সুবিধা

ভারতের জনগণনা প্রক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো সাধারণ নাগরিকদের নিজেদের গণনা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য সরকার একটি বিশেষ ওয়েব পোর্টাল চালু করতে চলেছে, যা উভয় পর্যায়ে উপলব্ধ হবে। এই পোর্টালের মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসে তাদের পরিবারের তথ্য নথিভুক্ত করতে পারবে। এছাড়াও, একটি মোবাইল অ্যাপও উপলব্ধ করা হবে, যা অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপল উভয় প্ল্যাটফর্মে চলবে।

জনগণনা আধিকারিকরাও এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এই পরিবর্তন ঐতিহ্যবাহী পেন-পেপার পদ্ধতির তুলনায় আরও নির্ভুল এবং সময় সাশ্রয়ী হবে।

জাতিগত জনগণনাও অন্তর্ভুক্ত করা হবে

এবারের জনগণনায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যোগ করা হয়েছে, তা হল জাতিগত জনগণনা। এর আগে ১৯৩১ সালে শেষবার পূর্ণাঙ্গ জাতিগত জনগণনা হয়েছিল। ২০২৭ সালের জনগণনায় প্রতিটি ব্যক্তির জাতির তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। এর উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণির প্রকৃত অবস্থা এবং তাদের প্রয়োজনগুলি বোঝা, যাতে পরিকল্পনাগুলি বাস্তবতার ভিত্তিতে তৈরি করা যায়।

জনগণনা প্রক্রিয়ার তারিখ এবং পর্যায়

জনগণনা ২০২৭ দুটি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে:

প্রথম পর্যায় — হাউজ লিস্টিং অপারেশনস (HLO):

শুরু: ১ এপ্রিল, ২০২৬

উদ্দেশ্য: প্রতিটি বাড়ির বিবরণ, যেমন বাড়ির প্রকার, জল-বিদ্যুৎ-পরিচ্ছন্নের সুবিধা ইত্যাদি সংগ্রহ করা।

দ্বিতীয় পর্যায় — জনসংখ্যা গণনা (Population Enumeration):

শুরু: ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৭

উদ্দেশ্য: প্রতিটি ব্যক্তির নাম, বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষা, পেশা এবং জাতি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা।

রেফারেন্স ডেট: ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলের জন্য: ১ মার্চ, ২০২৭

পাহাড়ি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির (যেমন লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশ) জন্য: ১ অক্টোবর, ২০২৬

ডেটা সুরক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে

সরকার স্পষ্ট করেছে যে নাগরিকদের তথ্যের সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। এই ডিজিটাল জনগণনায় ডেটা সংগ্রহ, প্রেরণ এবং সংরক্ষণের প্রতিটি স্তরে শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সমস্ত তথ্য সার্ভারে এনক্রিপ্টেড আকারে সংরক্ষণ করা হবে, যার ফলে ডেটা ফাঁস বা অপব্যবহারের কোনও সম্ভাবনা থাকবে না।

জনগণনা কেন জরুরি

জনগণনা যে কোনও দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং জনসংখ্যা সম্পর্কিত নীতিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তি স্থাপন করে। এর মাধ্যমে সরকার জানতে পারে কোন অঞ্চলে কত জনসংখ্যা রয়েছে, কোন শ্রেণি কত সুবিধা পাচ্ছে এবং কোথায় উন্নতির প্রয়োজন। এর ভিত্তিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বাসস্থান, জল সরবরাহ এবং সামাজিক কল্যাণ-এর মতো প্রকল্পগুলির পরিকল্পনা করা হয়।

Leave a comment