২০২৫ সালের দীপাবলি, হিন্দু ধর্মের প্রধান উৎসব, ২০ অক্টোবর, সোমবার পালিত হবে। এটি অন্ধকারের উপর আলোর এবং অশুভের উপর শুভের বিজয়ের প্রতীক। এই দিনে মা লক্ষ্মী ও ভগবান গণেশের পূজা, প্রদীপ জ্বালানো, ঘর পরিষ্কার ও সাজানোর ঐতিহ্য রয়েছে। বিশেষ প্রতিকার এবং শুভ মুহূর্তের মাধ্যমে ঘরে সুখ, সমৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধি আসে।
দীপাবলি ২০২৫: দীপাবলি ২০ অক্টোবর, সোমবার পালিত হবে: ভারতে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ উৎসব দীপাবলি, ২০২৫ সালে ২০ অক্টোবর পালিত হবে। এই দিনে সারা দেশে ঘর পরিষ্কার করা হয়, রঙোলি তৈরি করা হয় এবং প্রদীপ সাজানো হয়। মা লক্ষ্মী ও ভগবান গণেশের পূজার পাশাপাশি নতুন খাতা-পত্র এবং ধন-সম্পদেরও পূজা করা হয়। এই উৎসব অন্ধকারের উপর আলোর এবং অশুভের উপর শুভের বিজয়ের প্রতীক এবং পরিবারে সুখ, সমৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি আনার জন্য এটি পালন করা হয়।
দীপাবলি ২০২৫-এর তিথি ও সময়
দৃক পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, কার্তিক অমাবস্যা ২০২৫ সালের ২০ অক্টোবর সকাল ৩টা ৪৪ মিনিটে শুরু হবে এবং ২১ অক্টোবর ২০২৫ সকাল ৫টা ৫৪ মিনিটে শেষ হবে। অতএব, ২০২৫ সালের দীপাবলির মূল উৎসব ২০ অক্টোবর, সোমবার পালিত হবে।
এই দিনে মা লক্ষ্মী ও ভগবান গণেশের পূজার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। লোকেরা ঘর পরিষ্কার ও সাজানোর পাশাপাশি রঙোলি তৈরি করে এবং প্রবেশদ্বারে প্রদীপ জ্বালায়। দীপাবলির রাতে ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে অন্ধকার এবং নেতিবাচক শক্তি দূর করার ঐতিহ্যও রয়েছে।
দীপাবলিতে লক্ষ্মী-গণেশ পূজার সঠিক পদ্ধতি
দীপাবলির দিন পূজা করার আগে পুরো বাড়ি পরিষ্কার করুন এবং মূল প্রবেশদ্বারে রঙোলি তৈরি করুন। পূজা স্থলে একটি চৌকির উপর লাল কাপড় বিছিয়ে দেবী লক্ষ্মী, ভগবান গণেশ এবং কুবের জীর প্রতিমা স্থাপন করুন।
প্রথমে গণেশ জীর পূজা করুন। তাঁকে স্নান করিয়ে বস্ত্র, চন্দন, ফুল এবং দূর্বা অর্পণ করুন। এরপর মা লক্ষ্মীর পূজা করুন। তাঁকে পদ্ম ফুল, সিঁদুর, অক্ষত (চাল), রোলি, আতর, মিষ্টি এবং ফল অর্পণ করুন।
দীপাবলির দিনে নতুন খাতা-পত্র, সিন্দুক এবং ধন-সম্পদেরও পূজা করা হয়। পূজার সময় ১১, ২১ বা ৫১টি প্রদীপ জ্বালানোর ঐতিহ্য রয়েছে। পূজা শেষ হওয়ার পর পুরো পরিবারের সাথে লক্ষ্মী-গণেশের আরতি করুন এবং প্রসাদ বিতরণ করুন।
দীপাবলিতে বিশেষ প্রতিকার
দীপাবলির সন্ধ্যায় তুলসী গাছের কাছে নয়টি ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানো শুভ বলে মনে করা হয়। এতে ঘরে নেতিবাচক শক্তি দূর হয় এবং মা লক্ষ্মী প্রসন্ন হন।
দীপাবলির রাতে একটি অশ্বত্থ গাছের নিচে তেলের প্রদীপ জ্বালান এবং পেছনে না তাকিয়ে বাড়ি ফিরে আসুন। বিশ্বাস করা হয় যে এতে আর্থিক সংকট দূর হয়।
পূজার সময় সাদা বা হলুদ রঙের কাপড় পরা শুভ বলে মনে করা হয়। যদি বাড়িতে কোনো ঋণ থাকে, তবে দীপাবলির দিনে নতুন আর্থিক পরিকল্পনা করা উপকারী বলে মনে করা হয়।
দীপাবলির গুরুত্ব
দীপাবলি অন্ধকারের উপর আলোর এবং অশুভের উপর শুভের বিজয়ের প্রতীক। এটি ধন-দেবী মা লক্ষ্মী এবং বুদ্ধির দেবতা ভগবান গণেশের পূজার জন্য পালিত হয়।
এই দিনে ঘরে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রদীপ অন্ধকার এবং নেতিবাচক শক্তি দূর করে। দীপাবলির উৎসব শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রাখে না, বরং এটি সম্পর্ককে মজবুত করার এবং পরিবারে আনন্দ বজায় রাখার একটি সুযোগও বটে।
দীপাবলির প্রস্তুতি ও সাজসজ্জা
দীপাবলির আগে ঘর পরিষ্কার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পর রঙোলি এবং প্রদীপ দিয়ে ঘর সাজানো শুভ বলে মনে করা হয়। বাজারে বিশেষ দীপাবলির সাজসজ্জা এবং প্রদীপের প্রস্তুতি দেখা যায়।
লোকেরা বাড়িতে মিষ্টি, বাজি এবং পূজার সামগ্রী কেনে। উৎসবের কেনাকাটায় প্রায়শই পুরো পরিবারের অংশগ্রহণ থাকে। এতে শুধু উৎসবের প্রস্তুতিই সম্পূর্ণ হয় না, বরং পরিবারে সহযোগিতা ও উৎসাহও বাড়ে।
দীপাবলিতে সুরক্ষা এবং সতর্কতা
দীপাবলিতে বাজি ব্যবহার করার সময় নিরাপত্তার দিকে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাচ্চাদের হাতে বাজি দেবেন না এবং বাড়ির ভিতরে বাজি জ্বালাবেন না। বাড়ি এবং আশেপাশের এলাকায় আগুন লাগা এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
এছাড়াও, দীপাবলিতে বিদ্যুতের ব্যবহারে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। দীর্ঘক্ষণ আলো জ্বালিয়ে রাখলে বিদ্যুতের বিল বাড়তে পারে, তাই শক্তি সঞ্চয়ের দিকে মনোযোগ দিন।