ওয়াশিংটনের চাপ ও ট্রাম্পের ‘হাই ট্যারিফ’ কৌশলের মধ্যেই ভারতের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সম্পর্ক এগোচ্ছে নতুন মোড়ে। নয়াদিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইইউ-এর প্রতিনিধিদল এই সপ্তাহেই ভারতে আসছে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) নিয়ে আলোচনা করতে। বাজার অ্যাক্সেস থেকে কৃষিজাত পণ্যের শুল্ক হ্রাস—সবই আলোচনার টেবিলে থাকছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠিন অবস্থানের জেরে ভারতের কাছে এই পদক্ষেপ এখন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
আমেরিকার চাপ ও ভারতের সমস্যা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার জন্য শাস্তিমূলক শুল্ক বসিয়েছেন। আগে থেকেই ২৫ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে নতুন করে আরও ২৫ শতাংশ যোগ হওয়ায় ভারতের রপ্তানিকারকরা কার্যত ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝায় জর্জরিত। ফলে মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতা দুর্বল হয়ে পড়েছে, আর ভিয়েতনাম–বাংলাদেশ–পাকিস্তানের মতো দেশ সুবিধা পাচ্ছে।
ভারত–ইইউ চুক্তি কোন পথে
দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পথে এগোচ্ছে। এই মাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সময়সূচি ঠিক করা হয়েছে। বিশেষত ওয়াইন, দুগ্ধজাত পণ্য, কৃষিজাত দ্রব্য ও শিল্পপণ্যের শুল্ক হ্রাস নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় বসবেন দুই পক্ষ।
কেন ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ
ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির ফলে নয়াদিল্লি এখন বিকল্প বাজার খুঁজছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার—২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে দুই পক্ষের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাই ইইউর সঙ্গে চুক্তি হলে ভারতের রপ্তানি নতুন দিশা পাবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
কাদের আসা হচ্ছে দিল্লিতে
ইউরোপীয় কমিশনের কৃষি কমিশনার ক্রিস্টোফ হ্যানসেন ও বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকোভিচ এই সপ্তাহেই দিল্লি সফরে আসছেন। তাঁদের ভারতীয় মন্ত্রক ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হওয়ার কথা। লক্ষ্য একটাই—এই বছরের শেষ নাগাদ ভারত–ইইউ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) স্বাক্ষর করা।ট্রাম্পের চাপ অব্যাহত থাকলেও, ভারত এখন নতুন বাজারে ভরসা খুঁজছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি হলে শুধু রপ্তানি নয়, ভারতের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। রাজনৈতিক মহলের মতে, দিল্লি–ব্রাসেলস চুক্তি এশিয়া–ইউরোপ বাণিজ্যের নতুন অধ্যায় রচনা করবে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকে কেন্দ্র করে শুল্ক চাপালেও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শিগগিরই নয়াদিল্লির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ইইউ প্রতিনিধিদল দিল্লি সফরে আসছে, যেখানে কৃষি পণ্য, বাজার অ্যাক্সেস এবং শুল্ক হ্রাস নিয়ে আলোচনা হবে।