ডিআরডিও (DRDO) অগ্নি-প্রাইম মিসাইলের প্রথম রেল-ভিত্তিক পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই মিসাইলটির ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লা রয়েছে এবং এটি ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও কৌশলগত নমনীয়তা বৃদ্ধি করে।
নয়াদিল্লি। ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) অগ্নি-প্রাইম মিসাইলের সফল পরীক্ষা করেছে। এই পরীক্ষার বিশেষত্ব হল যে মিসাইলটিকে রেল-ভিত্তিক মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তার অফিসিয়াল X হ্যান্ডেল থেকে এই পরীক্ষার তথ্য জানিয়েছেন এবং এর ভিডিওটিও শেয়ার করেছেন।
রেল লঞ্চার থেকে করা প্রথম উৎক্ষেপণ
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন যে অগ্নি-প্রাইম মিসাইলের এই প্রথম উৎক্ষেপণ বিশেষভাবে ডিজাইন করা রেল-ভিত্তিক মোবাইল লঞ্চার থেকে করা হয়েছে। এই লঞ্চারটি কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই রেল নেটওয়ার্কে চলতে পারে। এর বৈশিষ্ট্য হল যে এর মাধ্যমে দেশজুড়ে গতিশীলতা পাওয়া যায় এবং কম দৃশ্যমানতায় কম প্রতিক্রিয়া সময়ের সাথে মিসাইল উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে।
রেল-ভিত্তিক লঞ্চার ব্যবহারের মাধ্যমে সেনারা কৌশলগত দিক থেকে আরও বেশি নমনীয়তা অর্জন করতে পারে। এই ব্যবস্থাটি সারা দেশে রেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে দ্রুত এবং নিরাপদ মিসাইল উৎক্ষেপণের সুবিধা প্রদান করে।
পরীক্ষার সাফল্য এবং এর গুরুত্ব
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডিআরডিও, স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কমান্ড (SFC) এবং সশস্ত্র বাহিনীকে মাঝারি পাল্লার অগ্নি-প্রাইম মিসাইলের সফল পরীক্ষার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে এই পরীক্ষা ভারতকে সেই নির্বাচিত দেশগুলির গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে যাদের রেল নেটওয়ার্ক থেকে ক্যানিস্টরাইজড লঞ্চ সিস্টেম তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে।
অগ্নি-প্রাইম মিসাইলের বৈশিষ্ট্য
অগ্নি-প্রাইম মিসাইল উন্নত প্রজন্মের ব্যালিস্টিক মিসাইল। এটিকে ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন যে মিসাইলটি অনেক আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং এটিকে পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম করা হয়েছে।
অগ্নি-প্রাইম উচ্চ স্তরের নির্ভুলতার সাথে মিশনের সমস্ত উদ্দেশ্য পূরণ করে। এর নির্মাণ প্রক্রিয়া ডিআরডিও দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ভারতে করা হয়েছে। এই মিসাইল দেশের কৌশলগত শক্তিকে আরও শক্তিশালী করে।
ভারতের অন্যান্য অগ্নি মিসাইল
ভারতের কাছে ইতিমধ্যেই অগ্নি সিরিজের মিসাইল রয়েছে। এর মধ্যে অগ্নি-১ থেকে অগ্নি-৫ পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত। অগ্নি-১ থেকে অগ্নি-৪ এর পাল্লা ৭০০ কিলোমিটার থেকে ৩,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। অগ্নি-৫ এর পাল্লা ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
এই মিসাইলগুলির পাল্লা চীনের সুদূর উত্তরাঞ্চল এবং ইউরোপের কিছু অংশ সহ এশীয় অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছায়। অগ্নি-প্রাইম মিসাইল এই সিরিজে নতুন প্রযুক্তি এবং আরও বেশি নমনীয়তা নিয়ে এসেছে।
ডিআরডিও এবং সশস্ত্র বাহিনীর অবদান
এই পরীক্ষায় ডিআরডিও, সশস্ত্র বাহিনী এবং স্ট্র্যাটেজিক ফোর্স কমান্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সমস্ত দল একত্রিত হয়ে মিসাইলের পুরো ব্যবস্থার নিরাপত্তা এবং সাফল্য নিশ্চিত করেছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন।
রেল-ভিত্তিক উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা থেকে মিসাইলগুলিকে যে কোনো স্থানে এবং যে কোনো সময়ে মোতায়েন করা যেতে পারে। এই প্রযুক্তি ভারতের কৌশলগত প্রস্তুতিকে এবং পাল্টা আক্রমণ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।