এফবিআই (FBI) প্রাক্তন এনএসএ (NSA) জন বোল্টনের কার্যালয় থেকে বেশ কয়েকটি ক্লাসিফায়েড নথি বাজেয়াপ্ত করেছে। নথিগুলির মধ্যে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জাতিসংঘ মিশনের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রয়েছে।
আলাবামা। আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) জন বোল্টনের কার্যালয় থেকে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) বেশ কয়েকটি ক্লাসিফায়েড নথি বাজেয়াপ্ত করেছে। এই নথিগুলিতে 'ক্লাসিফায়েড', 'কনফিডেনশিয়াল' এবং 'সিক্রেট' এর সিলমোহর লাগানো ছিল। প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি বোল্টন অপব্যবহার করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্তের অধীনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে জন বোল্টন আমেরিকার এনএসএ ছিলেন। এই সময় তিনি জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে কাজ করেছেন।
এফবিআই-এর পদক্ষেপ
আদালতের নথি অনুযায়ী, আগস্টের শেষে এফবিআই বোল্টনের কার্যালয় থেকে নথিগুলির পাশাপাশি তাঁর ফোন এবং কম্পিউটার সরঞ্জামও বাজেয়াপ্ত করেছে। বাজেয়াপ্ত করা নথিগুলির মধ্যে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র, জাতীয় 'কৌশলগত যোগাযোগ' এবং জাতিসংঘে আমেরিকান মিশনের সাথে সম্পর্কিত কাগজপত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক পৃষ্ঠা সম্পূর্ণরূপে বা আংশিকভাবে সেন্সর করা হয়েছে।
বোল্টনের আইনজীবীর বিবৃতি
বোল্টনের আইনজীবী অ্যাবে লোয়েল বলেছেন যে নথিগুলি কোনো ভুল কাজ প্রমাণ করে না। তিনি জানান যে, অনেক নথি কয়েক দশক পুরনো এবং এগুলি স্টেট ডিপার্টমেন্টে, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে এবং জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসাবে বোল্টনের দীর্ঘ কর্মজীবনের সাথে সম্পর্কিত।
লোয়েল বলেছেন, "একটি সুষ্ঠু ও সম্পূর্ণ তদন্তে স্পষ্ট হবে যে বোল্টন কোনো ভুল নথি রাখেননি এবং সেগুলির অপব্যবহারও করেননি।"
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বিতর্ক
জন বোল্টন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ১৭ মাস জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। এই সময় ইরান, আফগানিস্তান এবং উত্তর কোরিয়ার মতো ইস্যুতে তাঁর এবং ট্রাম্পের মতামতের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়, যার ফলস্বরূপ ২০১৯ সালে তাঁকে অপসারণ করা হয়। এরপর বোল্টন ২০২০ সালে তাঁর বই 'দ্য রুম হোয়্যার ইট হ্যাপেন্ড'-এ ট্রাম্পের বিদেশ নীতি এবং প্রশাসনিক পদ্ধতির সমালোচনা করেন।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা বোল্টনের বইয়ের খসড়াটি দেখেছেন এবং জানিয়েছেন যে এতে 'প্রচুর পরিমাণে' গোপনীয় তথ্য ছিল, যার মধ্যে কিছু শীর্ষ-গোপন স্তরের ছিল। বোল্টনের আইনজীবীর দাবি, আগস্টে বাজেয়াপ্ত করা নথিগুলি তাঁর বইয়ের প্রকাশের পূর্ববর্তী পর্যালোচনার অনুমোদনের অধীনে ছিল।
এই পদক্ষেপটি ট্রাম্পের বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক বিরোধীর বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস, ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর অ্যাডাম শিফ এবং প্রাক্তন এফবিআই পরিচালক জেমস বি. কোমির বিরুদ্ধেও ফৌজদারি তদন্ত চলছে।
বাজেয়াপ্ত করা নথিগুলির প্রকৃতি
বাজেয়াপ্ত করা নথিগুলির মধ্যে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র, জাতীয় নিরাপত্তা, কৌশলগত যোগাযোগ এবং জাতিসংঘে মার্কিন মিশনের সাথে সম্পর্কিত নথি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আদালতের নথিগুলিতে অনেক পৃষ্ঠা সম্পূর্ণরূপে বা আংশিকভাবে সেন্সর করা হয়েছে। বোল্টনের আইনজীবীর বক্তব্য, এই নথিগুলির মধ্যে কোনো ভুল নথি নেই এবং তাঁর মক্কেল সম্পূর্ণ তদন্তে সহযোগিতা করবেন।