নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বিহারে এসআইআর (SIR) খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাওয়া ৬৫ লক্ষ ভোটারের তালিকা প্রকাশ করেছে। ভোটাররা ওয়েবসাইট, বিএলও (BLO) এবং জেলা কার্যালয়ে নাম নিশ্চিত করতে পারবেন।
Voter List: বিহারের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) এর অধীনে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের তালিকা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর এই তালিকাটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, যাতে ভোটাররা তাদের নাম নিশ্চিত করতে পারেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ
সুপ্রিম কোর্ট ১৪ই আগস্ট তাদের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল যে বিহারে এসআইআর খসড়া ভোটার তালিকা থেকে যে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তাদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এই নির্দেশের অধীনে নির্বাচন কমিশন এখন সেই সমস্ত ৬৫ লক্ষ নামের তালিকা প্রকাশ করেছে, যা খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
কি কারণে নাম কাটা গেছে
সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে নাম বাদ দেওয়ার কারণগুলো স্পষ্টভাবে জানানোরও নির্দেশ দিয়েছে। তালিকায় নথিভুক্ত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার প্রধান কারণগুলো হল -
- ভোটারের মৃত্যু।
- স্থায়ীভাবে অন্য স্থানে স্থানান্তর।
- একই ব্যক্তির ডবল রেজিস্ট্রেশন।
এই কারণগুলো তালিকায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে কোনো ভোটারের মধ্যে বিভ্রান্তি না থাকে।
জেলা ও বুথ স্তরে তথ্য পাওয়া যাবে
সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে আরও বলেছে যে বাদ দেওয়া ভোটারদের বুথ-ভিত্তিক তালিকা প্রতিটি জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কার্যালয়ে লাগাতে হবে। এছাড়াও জেলা নির্বাচন আধিকারিককে এই তালিকা তার অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও শেয়ার করতে হবে।
এছাড়াও কমিশন নিশ্চিত করেছে যে প্রতিটি বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) অফিস এবং পঞ্চায়েত অফিসেও এই তালিকা প্রদর্শিত হবে। এর উদ্দেশ্য হল গ্রামীণ স্তর পর্যন্ত প্রতিটি ভোটার সহজেই তথ্য পেতে পারেন।
গণমাধ্যম ও জনসংযোগের মাধ্যমে প্রচার
তথ্যকে ব্যাপক স্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সংবাদপত্র, রেডিও, টিভি এবং অন্যান্য মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে যে এই পুরো প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হল এটা নিশ্চিত করা যে কোনো ভোটার যেন তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন।
ভোটারদের জন্য নতুন সুবিধা
নির্বাচন কমিশন বিহারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি নতুন লিঙ্ক সক্রিয় করেছে, যার মাধ্যমে ভোটাররা তাদের নাম ও স্থিতি সহজেই যাচাই করতে পারবেন। এর মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হতে পারবেন যে তাদের নাম ভোটার তালিকায় আছে নাকি বাদ দেওয়া হয়েছে।
এই ডিজিটাল উদ্যোগ গ্রামীণ ও শহর উভয় স্তরের ভোটারদের সুবিধা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে। কমিশন জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছে, তারা যেন দ্রুত ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের নাম যাচাই করেন।
রাহুল গান্ধীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতিক্রিয়া
এরই মধ্যে কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী বিহারে ব্যাপক হারে নাম কাটার প্রক্রিয়াকে ‘ভোট চুরি’ আখ্যা দিয়েছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার বলেছেন যে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের নিশানা করে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের উপর অভিযোগ করতে শুরু করেছে, যা उचित নয়। কমিশন রাহুল গান্ধীকে ৭ দিনের মধ্যে প্রমাণসহ হলফনামা পেশ করতে অথবা প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে।
স্বচ্ছতার উপর নির্বাচন কমিশনের জোর
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য হল, তাদের লক্ষ্য পুরো প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ ও निष्पक्ष রাখা। তালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত সেই দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। কমিশন এটাও স্পষ্ট করেছে যে যাদের নাম ভুল করে বাদ গেছে, তাদের আপত্তি জানানোর এবং নাম পুনরায় যুক্ত করার সুযোগ থাকবে।