ইপিএফও (EPFO) মাসিক বেতন সীমা বর্তমান ₹15,000 থেকে বাড়িয়ে ₹25,000 করার কথা বিবেচনা করছে। এই পরিবর্তনের ফলে এক কোটিরও বেশি কর্মচারী বাধ্যতামূলকভাবে ইপিএফ এবং ইএসপি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এই প্রস্তাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য বোর্ড সভায় নেওয়া হতে পারে।
পিএফ ডিডাকশন: কর্মচারী ভবিষ্য निधि সংগঠন (ইপিএফও) শীঘ্রই তাদের নিয়মে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। সূত্র অনুযায়ী, সংগঠনটি ইপিএফ এবং ইএসপি-তে বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণের জন্য মাসিক বেতন সীমা ₹15,000 থেকে বাড়িয়ে ₹25,000 করার কথা বিবেচনা করছে। শ্রম মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের ফলে এক কোটিরও বেশি কর্মচারী সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা পাবেন। ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে ইপিএফ তহবিলের বৃদ্ধি হবে এবং কর্মচারীদের অবসরকালীন নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।
নিয়ম কী পরিবর্তন হতে পারে
বর্তমানে ইপিএফও-এর নিয়ম অনুযায়ী, যে সকল কর্মচারীর মূল বেতন মাসিক ১৫,০০০ টাকা বা তার কম, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে পিএফ এবং পেনশন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যদিকে, যাদের বেতন এর চেয়ে বেশি, তারা এই প্রকল্পগুলি থেকে বাইরে থাকার ছাড় পান। এখন সরকার এই সীমা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে যাতে আরও বেশি কর্মচারীকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা যায়।
সূত্র অনুযায়ী, এই প্রস্তাব ডিসেম্বর ২০২৫ বা জানুয়ারি ২০২৬-এ অনুষ্ঠিতব্য ইপিএফও-এর কেন্দ্রীয় ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় পেশ করা হবে। এই সভাতেই এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। অনুমোদন পেলে, লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর বেতন থেকে পিএফ কাটা শুরু হবে।
এক কোটিরও বেশি কর্মচারী সুবিধা পাবেন
শ্রম মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন অনুযায়ী, বেতন সীমা ১৫,০০০ থেকে বাড়িয়ে ২৫,০০০ টাকা করার ফলে এক কোটিরও বেশি কর্মচারী বাধ্যতামূলকভাবে ইপিএফও প্রকল্পের আওতায় চলে আসবেন। বর্তমানে দেশের অনেক শহরে নিম্ন ও মধ্যম দক্ষতাসম্পন্ন কর্মচারীরাও ১৫,০০০ টাকার বেশি বেতন পাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা এতদিন পিএফ এবং পেনশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন।
শ্রমিক সংগঠনগুলিরও দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যে বর্তমান বেতন সীমা বাড়ানো হোক যাতে আরও বেশি কর্মচারী সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা পান। এখন সরকারের এই পদক্ষেপ এই দিকে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
বর্তমান ব্যবস্থা কী

বর্তমানে কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়কেই কর্মচারীর বেতনের ১২-১২ শতাংশ অবদান রাখতে হয়। কর্মচারীর পুরো ১২ শতাংশ তার ইপিএফ অ্যাকাউন্টে যায়, যখন নিয়োগকর্তার ১২ শতাংশ দুটি ভাগে বিভক্ত হয় – ৮.৩৩ শতাংশ ইএসপি অর্থাৎ পেনশন ফান্ডে এবং ৩.৬৭ শতাংশ ইপিএফ-এ।
ইপিএফও-এর মোট তহবিল বর্তমানে প্রায় ২৬ লক্ষ কোটি টাকা এবং এর প্রায় ৭.৬ কোটি সক্রিয় সদস্য রয়েছে। যদি নতুন সীমা কার্যকর হয় তবে এই তহবিলে দ্রুত বৃদ্ধি হতে পারে। এর ফলে কর্মচারীরা অবসরের সময় আরও বেশি পেনশন এবং সুদের সুবিধা পাবেন।
এর প্রভাব কী হবে
যদি প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়, তাহলে নিয়োগকর্তাদেরও নতুন কর্মচারীদের জন্য পিএফ অবদান রাখতে হবে। অর্থাৎ, যে সকল কর্মচারীর মাসিক বেতন ২৫,০০০ টাকা বা তার কম, তাদের জন্য পিএফ কাটা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। এর ফলে একদিকে যেমন কর্মচারীরা অবসরের সময় আরও বেশি অর্থ পাবেন, তেমনি নিয়োগকর্তাদের বেতন খরচ কিছুটা বাড়বে।
সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে ইপিএফও-এর পরিধিও বাড়বে। বর্তমানে ইপিএফও-এর অধীনে কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৭.৬ কোটি, কিন্তু নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর এই সংখ্যা এক কোটিরও বেশি বাড়তে পারে।
অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়বে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই পদক্ষেপের ফলে সামাজিক সুরক্ষা তহবিলে বড় পরিমাণে পুঁজি আসবে। এর ফলে ইপিএফও-এর কাছে বিনিয়োগের জন্য আরও বেশি সংস্থান থাকবে। পেনশন তহবিল এবং সুদের হার বৃদ্ধির ফলে কর্মচারীদের পাশাপাশি অর্থনীতিও লাভবান হবে।
আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ দেশে আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান এবং স্বচ্ছ বেতন ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করবে। এর ফলে বেসরকারি কোম্পানিগুলিও তাদের কর্মচারীদের জন্য আরও স্বচ্ছ সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়নে উৎসাহিত হবে।













