বিলিতি মদের দাম কমবে কি বিশেষজ্ঞদের হিসেব বলছে হতাশই হবেন সুরাপ্রেমীরা!

বিলিতি মদের দাম কমবে কি বিশেষজ্ঞদের হিসেব বলছে হতাশই হবেন সুরাপ্রেমীরা!

‘দাম কমবে’ আশার বুদবুদ ফেটে গেল! বাস্তবে শুল্ক কমলেও দাম নামবে সামান্যই

ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণায় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন—এতদিনে বোধহয় ‘শিভাস রিগ্যাল’ বা ‘দ্য গ্লেনলিভেট’-এর মতো বিলিতি স্কচ ও জিনের বোতল হাতে পাওয়ার স্বপ্ন অনেকটাই বাস্তবের কাছাকাছি আসবে। কারণ ঘোষণা হয়েছিল, ১৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক একধাক্কায় নামিয়ে আনা হবে ৭৫ শতাংশে, যা আগামী ১০ বছরে আরও কমে ৪০ শতাংশে এসে ঠেকবে।চুক্তির কাগজে যা লেখা থাকে, বাজারে তার প্রতিফলন সব সময় ততটা সরল হয় না। শুল্ক কমলেও দাম যে হাতের নাগালে আসবে, সে স্বপ্ন সত্যি হওয়া কঠিন—এমনই মত বিশেষজ্ঞদের।

শুল্ক কমলেও দাম কেন নামছে না? বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে হতাশার ছায়া

বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, বিলিতি মদের বাজারদর—অর্থাৎ শেলফ প্রাইস-এর মধ্যে আমদানি শুল্কের ভূমিকা খুবই সীমিত। তারা বলছেন, মদের চূড়ান্ত দাম নির্ধারিত হয় রাজ্যভিত্তিক একাধিক কর, উৎপাদন খরচ, ডিস্ট্রিবিউশন ও মার্কেটিং ব্যয়ের উপর। আর তাই শুধু আমদানি শুল্কে হ্রাস এলেও সেটা চূড়ান্ত দামে বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারবে না। অনুমান করা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে বোতল প্রতি মাত্র ১০০-৩০০ টাকা কমতে পারে দাম।রাজনৈতিক বা আন্তর্জাতিক চুক্তির সুফল বোতলের গায়ে লেখা ট্যাগে কবে আসবে? বাস্তব বলছে, এখনই নয়। কারণ দামের অনেকটা অংশ রাজ্যেই নির্ধারিত হয়।

রাজস্বের বড় অংশ রাজ্যের ঘরে, শুল্ক ছাঁটার সম্ভাবনা ক্ষীণ

বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের আয়ের একটা বড় অংশ আসে মদের উপর থেকে আদায় করা রাজস্ব থেকে। ফলে কেন্দ্রীয় স্তরে শুল্ক কমালেও, রাজ্য স্তরে শুল্ক ছাঁটার সম্ভাবনা কার্যত নেই বললেই চলে। আর এখানেই আটকে আছে সুরাপ্রেমীদের আশা। যদিও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিতে বড় ভূমিকা নেবে—এমনটাই মনে করছেন শিল্পমহলের একাংশ।রাজস্বের সমীকরণে বিলিতি মদের দাম কমানো যেন রাজ্যগুলির কাছে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আর তাই আশানুরূপ দামের পতন ঘটবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

বাজার প্রসারে আশাবাদী সংস্থা, দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গিতে সুযোগ দেখছে প্রস্তুতকারকরা

তবে এই সীমিত সুবিধার মধ্যেও আশাবাদী ব্র্যান্ডগুলি। ‘শিভাস রিগ্যাল’ প্রস্তুতকারী সংস্থার চেয়ারম্যান জাঁ এঁতিয়ে গর্জিউস জানাচ্ছেন, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুইস্কি বাজারগুলির একটি। এই চুক্তি দীর্ঘমেয়াদে ব্র্যান্ডের ভারতীয় বাজার প্রসারে সাহায্য করবে। অর্থাৎ এখনই দাম না কমলেও ভবিষ্যতে ভারতে আরও বেশি ব্র্যান্ড আসার সম্ভাবনা থাকছে।আজকের ছোট পরিবর্তন হয়তো আগামী দিনের বড় সুযোগের দিশা দেখায়। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে নিজেদের আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Leave a comment