বনদফতরে চাকরি! পেছনে কোটি টাকার জালিয়াতি? ধৃত সুকুমার মণ্ডল

বনদফতরে চাকরি! পেছনে কোটি টাকার জালিয়াতি? ধৃত সুকুমার মণ্ডল
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

রাজ্যে ফের সরকারি চাকরির নামে প্রতারণার অভিযোগে চাঞ্চল্য। এইবার লক্ষ্য করা হয়েছে বনদফতরের গ্রুপ ডি পদ। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, এই চাকরির পিছনে কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ। রাজ্যজুড়ে আতঙ্ক, তবে অভিযুক্ত সুকুমার মণ্ডল ধরা পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।

একটা ভুয়ো জয়েনিং লেটারেই ফাঁস গোটা চক্র! অভিযোগ দায়ের রাজ্য বনদফতরের

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য বন দফতরের কাছে এক ব্যক্তি চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য হাজির হয়েছিলেন একটি জয়েনিং লেটার হাতে নিয়ে। চিঠির প্রামাণ্যতা যাচাই করতেই সন্দেহ দানা বাঁধে। তদন্তে উঠে আসে—চিঠিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। এরপরই বিধাননগর উত্তর থানায় দায়ের করা হয় অফিসিয়াল অভিযোগ।

মালদার যুবক সুকুমার মণ্ডল ধৃত, অভিযোগের কেন্দ্রে তিনিই!

অভিযোগের পর তদন্তে নামে পুলিশ। একাধিক সূত্র ধরেই অভিযান শুরু করে বিধাননগর উত্তর থানার তদন্তকারী দল। উঠে আসে, মালদার বাসিন্দা সুকুমার মণ্ডল বিগত দুই বছর ধরে একাধিক ব্যক্তিকে সরকারি চাকরির নাম করে প্রতারিত করে আসছিলেন। কোটি টাকার প্রতারণার নেপথ্যে যে তিনি একজন মূলচক্রী, তা প্রায় স্পষ্ট।

চাকরিপ্রার্থীদের স্বপ্নকে ব্যবহার করে লক্ষাধিক টাকার আদানপ্রদান!

প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সুকুমার একাধিক চাকরিপ্রার্থীকে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের লোভ দেখিয়ে ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। ভুয়ো সাক্ষাৎকার, নকল অফার লেটার, এমনকি নথিপত্র সহ সমস্ত কিছু এতটাই নিখুঁতভাবে সাজানো ছিল যে, সাধারণ মানুষ সহজেই প্রতারণার জালে আটকে পড়েছেন।

দফায় দফায় জেরা, চক্রে আর কারা জড়িত, জানার চেষ্টা তদন্তকারীদের

সুকুমার মণ্ডল ধৃত হলেও এখানেই থামছে না পুলিশ। তাঁকে জেরা করে জানা যাচ্ছে, গোটা ঘটনায় একাধিক দালাল, ক্লার্ক ও তথ্য পাচারকারী জড়িত থাকতে পারে। জালিয়াত চক্রের আর কে বা কারা যুক্ত—তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই মালদা, উত্তর ২৪ পরগনা, ও নদিয়ার কিছু এলাকায় নজরদারি শুরু হয়েছে।

নতুন করে প্রশাসনিক সতর্কতা, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বার্তা

বনদফতরের মত একটি সরকারি দফতরে এভাবে জয়েনিং লেটার নিয়ে লোক হাজির হওয়া রীতিমতো অ্যালার্মিং। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নিয়োগ শুধুমাত্র সরকারি বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষার মাধ্যমে হয়। কোনও ব্যক্তি বা দালালের মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার প্রতিশ্রুতি আইনত অপরাধ।

শেষ কথা:

সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখানো কোটি টাকার ফাঁদে পা দিয়ে বহু তরুণ-তরুণী হারাচ্ছেন টাকা ও বিশ্বাস। প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখুন, সন্দেহজনক যোগাযোগ বা অফার এলে নিকটবর্তী থানায় জানান। মনে রাখবেন, চাকরি কখনও টাকার বিনিময়ে হয় না, হয় যোগ্যতার মাধ্যমে।

Leave a comment