মহারাষ্ট্রে ৩৩৬৭টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার অপসারণ: জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

মহারাষ্ট্রে ৩৩৬৭টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার অপসারণ: জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

মহারাষ্ট্র সরকার ৩৩৬৭টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার সরিয়ে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীস বলেছেন, আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। নিয়ম ভাঙলে পুলিশ দায়ী থাকবে।

মহারাষ্ট্র: মহারাষ্ট্রে ধর্মীয় স্থানগুলোতে লাউডস্পিকার ব্যবহারের বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস বিধানসভায় জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকার এখন পর্যন্ত ৩৩৬৭টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার সরিয়ে দিয়েছে। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য হল, সরকার সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।

বিধানসভায় লাউডস্পিকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন

বিজেপি বিধায়ক সুধীর মুঙ্গান্টিওয়ার মহারাষ্ট্র বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে ধর্মীয় স্থানগুলোতে লাউডস্পিকারের কারণে সৃষ্ট শব্দদূষণের বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, এর কারণে নাগরিকদের প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হয় এবং সরকারের এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপ

মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীস এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, রাজ্য সরকার এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৩৩৬৭টি ধর্মীয় স্থান থেকে লাউডস্পিকার সরানো হয়েছে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, মুম্বাই শহরে এখন আর কোনো ধর্মীয় স্থানে অবৈধ লাউডস্পিকার বাজছে না। মুম্বাইয়ে ১৬০০-এর বেশি স্থান থেকে ভোঁপু সরানো হয়েছে।

ভবিষ্যতে পুনরায় লাউডস্পিকার বসালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে

মুখ্যমন্ত্রী আরও স্পষ্ট করেছেন যে ভবিষ্যতে যদি কোনো ধর্মীয় স্থানে আবার লাউডস্পিকার লাগানো হয়, তাহলে সেই এলাকার থানার সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে দায়ী করা হবে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে রাজ্য সরকার একটি সুস্পষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করেছে।

রাত ১০টার পর লাউডস্পিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ

ফড়নবীস বিধানসভাকে জানান যে রাত ১০টার পর লাউডস্পিকার ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে ইলেকট্রনিক লাউডস্পিকার বা ভোঁপু বাজানো নিষেধ। কিছু বিশেষ অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় উৎসবে সরকার অস্থায়ীভাবে রাত ১২টা পর্যন্ত ছাড় দিয়েছিল, তবে এটি স্থায়ী ব্যবস্থা নয়।

আইন ও ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে ভারসাম্য প্রয়োজন

মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীস আরও বলেন যে সরকারের চেষ্টা হল সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, তবে একই সঙ্গে নাগরিকদের শব্দদূষণ থেকে মুক্তি দেওয়াও নিশ্চিত করা। তিনি পুনরাবৃত্তি করে বলেন যে মহারাষ্ট্র সরকার কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়, তবে যখন জনশৃঙ্খলা এবং আইনের শাসনের কথা আসে, তখন সবার জন্য নিয়ম একই রকম হওয়া উচিত।

এসওপির অধীনে কঠোরভাবে নিয়ম কার্যকর করা হবে

সরকার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত এসওপির অধীনে পুলিশ ও প্রশাসনকে সময়সীমা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে লাউডস্পিকার ব্যবহারের জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং শব্দসীমা মেনে চলতে হবে।

Leave a comment