রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবতের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নতুন মোড় এসেছে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে নেতাদের ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পরে অবসর নেওয়া উচিত।
নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবতের 'নেতাদের ৭৫ বছর বয়সের পর অবসর নেওয়া উচিত' - এই মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই মন্তব্যের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন ৭৫তম জন্মদিন (সেপ্টেম্বর ২০২৫)-এর যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে শিবসেনা (ইউবিটি)-র রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী তীব্র মন্তব্য করে বিজেপি এবং আরএসএস-এর অভ্যন্তরীণ সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
মোহন ভাগবতের মন্তব্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সম্প্রতি আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত একটি জনসভায় বলেছেন: ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পরে কোনও নেতার সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া উচিত। এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন স্বয়ং ভাগবত এই বছর ৭৫ বছর বয়সে পা দিচ্ছেন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ এই বয়সে পৌঁছবেন। এর আগে ২০১৪ সালে যখন বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তখন ৭৫ বছর বয়সসীমাকে একটি অনানুষ্ঠানিক অবসর নীতি হিসাবে প্রচার করা হয়েছিল।
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর খোঁচা: 'পুরো বিশ্ব জানে...'
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেন: গোটা দেশ জানে যে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ কার ৭৫ বছর বয়স হতে চলেছে। শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্ব জানে, কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদী পাঁচটি দেশ সফর করে ফিরেছেন। তিনি আরও বলেন যে মোহন ভাগবতের এই মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে আরএসএস বিজেপিকে তাদের পুরনো প্রতিশ্রুতি মনে করিয়ে দিচ্ছে।
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ২০১৪ সালে বিজেপির চালু করা ৭৫ বছর বয়সসীমার কথা স্মরণ করে বলেন: ২০১৪ সালে বিজেপি এই নিয়ম তৈরি করেছিল যে ৭৫ বছরের বেশি বয়সী নেতাদের 'মার্গদর্শন মন্ডল'-এ পাঠানো হবে। সেই সময়ে দলের অনেক প্রবীণ নেতাকে এই ভিত্তিতে একপ্রকার কোণঠাসা করা হয়েছিল। এখন যখন এই নিয়ম প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে চলেছে, তখন সবাই তা ভুলে গেছে।
বিজেপি-আরএসএস-এর মধ্যে উত্তেজনা?
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী আরও বলেন যে আরএসএস এবং বিজেপির মধ্যে যা চলছে, তা ভাগবতের বক্তব্যে স্পষ্ট। এটি দুটি পরিবারের অভ্যন্তরীণ লড়াই, আমরা এতে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তারা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিক এবং তারপর জনগণকে আপডেট করুক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য ভবিষ্যতের ক্ষমতাসীন রাজনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে।
এটি প্রথমবার নয় যখন বিজেপির ৭৫ বছর অবসর নীতি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ২০১৪ সালে এই নীতির অধীনে লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী এবং শান্তা কুমারের মতো दिग्गजों-কে একপাশে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই নিয়মে অনেক ব্যতিক্রমও দেখা গেছে।