সোনা ১৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে টানা অষ্টম কোয়ার্টারে উর্ধ্বগতি বজায় রেখেছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত সোনা প্রায় ৪৫% বেড়ে ₹১.০৯ লাখ প্রতি ১০ গ্রাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ইক্যুইটি বাজারের দুর্বলতা, ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং ফেড রেট কাটের প্রত্যাশা সোনাকে শক্তিশালী সমর্থন দিয়েছে।
আজ সোনার দাম: ২০২৫ সালে সোনা বিনিয়োগকারীদের অসাধারণ রিটার্ন দিয়েছে। এই বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম ৪৫% লাফিয়ে ₹১.০৯ লাখ প্রতি ১০ গ্রাম ঐতিহাসিক স্তরে পৌঁছেছে। শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে MCX সোনা ১৪% বেড়েছে এবং টানা অষ্টম কোয়ার্টারে দ্রুত বৃদ্ধি दर्ज করেছে, যা ২০১২ সালের পর দীর্ঘতম উর্ধ্বগতি। ইক্যুইটি বাজারের দুর্বলতা, ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং ফেড রেট কাটের প্রত্যাশা সোনাকে একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসাবে শক্তিশালী করেছে। অন্যদিকে, রুপাও YTD রিটার্নে ৪৪% সহ ২০১০ সালের পর সেরা বছর রেকর্ড করার পথে এগোচ্ছে।
রেকর্ড উচ্চতায় সোনা
MCX-এ সোনা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। দাম ₹১.০৯ লাখ প্রতি ১০ গ্রাম হয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বস্তি এবং উপার্জনের সুযোগ তৈরি করেছে।
গোল্ড ইটিএফ-এ প্রচুর বিনিয়োগ
সোনার এই উর্ধ্বগতির প্রভাব গোল্ড ইটিএফ-এর উপরও পড়েছে। আগস্ট মাসে গোল্ড ইটিএফ-এ ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে। এই বছর এখন পর্যন্ত ৪৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে, যা ২০২০ সালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গোল্ড ইটিএফ-এর মোট সম্পদ ব্যবস্থাপনা ৪০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে, সোনার হোল্ডিং ৩৬৯২ টন পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা সর্বোচ্চ স্তর থেকে মাত্র ৬% নিচে।
বৈশ্বিক কারণগুলির প্রভাব
আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন ঘটনার সরাসরি প্রভাব সোনার দামে পড়েছে। আমেরিকার রাজনীতিতে অস্থিরতা এবং ফেডারেল রিজার্ভের উপর চাপ বিনিয়োগকারীদের সোনার দিকে আকৃষ্ট করেছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেড চেয়ার পাওয়েলের সমালোচনা করেছেন, যা বাজারে আরও অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আশা, ফেড শীঘ্রই সুদের হার কমাতে পারে। এই কারণেই সোনা ক্রমাগত সমর্থন পাচ্ছে।
গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের মতে, যদি বিনিয়োগকারীরা আমেরিকান ট্রেজারি বন্ড থেকে টাকা তুলে সোনার দিকে নিয়ে যায়, তবে সোনার দাম প্রতি আউন্স ৫০০০ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে। এই অনুমান বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
রুপোর চাহিদা বৃদ্ধি
সোনার উজ্জ্বলতার পাশাপাশি রুপোরও অসাধারণ বৃদ্ধি দেখা গেছে। MCX-এ সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে রুপো ১৮% বেড়েছে। এটি গত পাঁচ কোয়ার্টারের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। টানা তৃতীয় কোয়ার্টারে রুপো উর্ধ্বগতি বজায় রেখেছে। এই বছর রুপো ৪৪% বেড়েছে এবং এটি ২০১০ সালের পর সেরা বছর হতে পারে।
রুপোর দাম বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হলো শিল্প চাহিদা। সোলার প্যানেল, ইলেকট্রনিক্স, সেমিকন্ডাক্টর এবং ইলেকট্রিক ভেহিকেল সেক্টরে রুপোর ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। এই কারণেই বিনিয়োগকারীরা এটিকে একটি নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদী বৃদ্ধির সম্পদ হিসাবে দেখছেন।
উৎসবের প্রভাব
ভারতে আসন্ন উৎসবের মরসুম সোনা ও রুপোর ভৌত চাহিদা নির্ধারণ করবে। ঐতিহ্যগতভাবে দিওয়ালি এবং বিয়ের মরসুমে সোনা-রুপোর কেনাকাটা বেড়ে যায়। এবার দাম রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে, তাই বাজারের নজর থাকবে গ্রাহকদের ক্রয়ের দিকে।