পাটনায় শিল্পপতি হত্যা: রাহুল গান্ধীর বিজেপি-নীতীশের বিরুদ্ধে তোপ, বিহারকে ‘ক্রাইম ক্যাপিটাল’ বললেন

পাটনায় শিল্পপতি হত্যা: রাহুল গান্ধীর বিজেপি-নীতীশের বিরুদ্ধে তোপ, বিহারকে ‘ক্রাইম ক্যাপিটাল’ বললেন

পাটনায় শিল্পপতি গোপাল খেমকার হত্যা নিয়ে রাহুল গান্ধীর বিজেপি-নীতীশের বিরুদ্ধে আক্রমণ। তিনি বিহারকে ভারতের ক্রাইম ক্যাপিটাল বলে অভিহিত করেছেন এবং সরকারকে ব্যর্থ বলেছেন।

গোপাল খেমকা হত্যা: পাটনায় শিল্পপতি গোপাল খেমকাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার পর বিহারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্র হয়েছে। ঘটনার পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বিহারকে "ভারতের ক্রাইম ক্যাপিটাল" (অপরাধের রাজধানী) হিসেবে উল্লেখ করে বর্তমান সরকারকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলেছেন।

রাহুল গান্ধীর বক্তব্য

রাহুল গান্ধী সামাজিক মাধ্যম এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, "পাটনায় ব্যবসায়ী গোপাল খেমকাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করার ঘটনা আবারও প্রমাণ করেছে - বিজেপি এবং নীতিশ কুমার মিলে বিহারকে ভারতের ক্রাইম ক্যাপিটালে পরিণত করেছে।"

তিনি আরও বলেন, "আজ বিহার লুট, গুলি এবং হত্যার ছায়ায় বসবাস করছে। অপরাধ এখানে 'নতুন স্বাভাবিকতা' হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।"

রাহুল গান্ধী জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, "বিহারের ভাই ও বোনেরা, এই অবিচার আর সহ্য করা যায় না। যে সরকার আপনাদের সন্তানদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, তারা আপনাদের ভবিষ্যতের দায়িত্বও নিতে পারে না। প্রতিটি হত্যা, প্রতিটি লুট, প্রতিটি গুলি - পরিবর্তনের জন্য একটি আর্তনাদ। এখন সময় এসেছে নতুন বিহারের - যেখানে ভয় নেই, উন্নতি হবে। এবার ভোট শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়, বিহারকে বাঁচানোর জন্য।"

হত্যা তদন্তের জন্য এসআইটি গঠন

গোপাল খেমকা হত্যার পর বিহার পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করেছে। পাটনা পুলিশের পাশাপাশি বিহার এসটিএফ এবং প্রযুক্তিগত দলও তদন্তে নেমেছে। ঘটনার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মামলার তদারকি করা হচ্ছে।

পুলিশের মতে, এই মামলার কোনো দিকই উপেক্ষা করা হচ্ছে না। সকল সন্দেহভাজনের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। পুলিশের আশা, শীঘ্রই এই মামলার কিনারা করা হবে।

ঘটনা স্থলে পৌঁছতে পুলিশের দেরি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন

হত্যার পর একটি প্রশ্ন উঠেছে যে, ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পুলিশের দেরি কেন হলো। এ বিষয়ে ডিজিপি (DGP) সাফাই দিয়ে বলেন, কোনো দেরি হয়নি। তিনি জানান, শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলি চলে এবং আহত খেমকাকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কঙ্করবাগের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান, যেখানে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট সময় লেগে যায়। পুলিশের কাছে খবর একটু দেরিতে পৌঁছায়, তবে দল দ্রুত রওনা হয়েছিল।

বাড়তে থাকা অপরাধ নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ

এই ঘটনার পর বিহারে বাড়তে থাকা অপরাধ নিয়ে বিরোধীরা ক্রমাগত আক্রমণাত্মক। শুধু রাহুল গান্ধীই নন, আরজেডি এবং অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারাও বিহার সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, রাজ্যে অপরাধীদের মনোবল বেড়েছে এবং সরকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

ক্ষমতাসীন দলের প্রতিক্রিয়া

ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সরাসরি বিবৃতি আসেনি। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, হত্যাকারীদের শীঘ্রই ধরা হবে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কর্মকর্তাদের দাবি, পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং প্রতিটি দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই হত্যাকাণ্ড সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ বিহারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা প্রশ্ন তুলছেন। টুইটার ও ফেসবুকে গোপাল খেমকার জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে অনেক হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করছে।

Leave a comment